অশ্বিন বিতর্ক: এমসিসি কী বলে?

মাঠেই এক পশলা ঝগড়া হয়ে গেছে বাটলার ও অশ্বিনের মাঝে। ছবি: এএফপি
মাঠেই এক পশলা ঝগড়া হয়ে গেছে বাটলার ও অশ্বিনের মাঝে। ছবি: এএফপি
>মানকড় আউটে আইপিএলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কিন্তু ক্রিকেটের আইন প্রণেতা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) এ নিয়ে যা বলেছে, তাতে পরিষ্কার কিছু বোঝা যায় না।

বিশ্বকাপের আগে এবারের আইপিএল নিয়ে একটু উন্মাদনা কম। অনেক দলই বিশ্বকাপের আগে খেলোয়াড়দের চোটমুক্ত রাখার কথা চিন্তা করছে। বড় তারকাদের অনেকেই নেই এবার। কিন্তু আইপিএল জমে উঠতে তারকার তো দরকার নেই। রবিচন্দ্রন অশ্বিনই আইপিএলকে জমিয়ে দিলেন এক ঘটনায়। জস বাটলারকে ‘মানকড়’ আউট করে টিভি পর্দা আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে আলোচনার খোরাক এনে দিয়েছেন। সে ঘটনায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও মতামত জানিয়েছে, বলেছে ওটা আউট দেওয়া উচিত হয়নি আম্পায়ারের। কিন্তু ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব কী বলে?

অশ্বিনের মানকড় আউটের পর এমসিসিকেও নড়েচড়ে বসতে হয়েছে। মানকড় আউট নিয়ে অতীতে যত আলোচনা হয়েছে তার সবই ক্রিকেটীয় চেতনা ঘিরে। আউট নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই, শুধু আলোচনা ওভাবে আউট করাটা ভদ্রলোকের খেলার সঙ্গে যায় কি না! তবে অশ্বিনের আউটের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, অশ্বিন নিজের স্বাভাবিক অ্যাকশনে বল করেননি কাল। ওই বলের সময় অশ্বিন বল ছোড়ার ভঙ্গি যখন করেছেন, তখনো ক্রিজে ব্যাট ছিল জস বাটলারের। অশ্বিন নিজের স্বাভাবিক গতি আটকে অপেক্ষা করেছেন কখন বাটলার দাগ পার হবেন এবং তারপর স্টাম্প ভেঙেছেন।

এ ব্যাপারে এমসিসি অবশ্য গৎবাঁধা নিয়মের উল্লেখই শুধু করেছে, ‘এ আইন খুব জরুরি। এ আইন ছাড়া নন-স্ট্রাইকার স্বাধীনতা পেয়ে যাবে, পিচে অনেক দূর এগিয়ে থাকবে। এমন কিছু আটকাতে অবশ্যই আইন দরকার। এখানে মূল বিষয় হলো নন-স্ট্রাইকার কখন নিশ্চিন্তে ক্রিজ ছাড়তে পারবে এবং বোলার কীভাবে বিতর্ক সৃষ্টি না করে এভাবে আউট করতে পারবে। পরিষ্কার করে বলতে গেলে, এ আইনে কখনো বলা হয়নি নন-স্ট্রাইকারকে সতর্ক করতে হবে। এবং এটাও বলা হয়নি, একজন নন-স্ট্রাইকার ক্রিজ থেকে আগে বের হয়ে সুবিধা নিতে চাইলে তাঁকে আউট করা ক্রিকেটীয় চেতনার বিরোধী।’

আইন যে দরকার সেটা বুঝতে পেরেছেন সবাই। এত দিন সবাই শুধু ক্রিকেটীয় চেতনার কথাই বলত, তবে অশ্বিনের ঘটনায় তো কিছু অস্বাভাবিকতাও আছে! অশ্বিনের অ্যাকশন ও শরীরী ভাষা দেখে অধিকাংশ ক্রিকেটারই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন ওই বল করার কোনো ইচ্ছা তাঁর মাঝে ছিল না। বল করার ভঙ্গি করে থেমে যাওয়ায় বাটলার বুঝতে পারেননি যে তিনি বল ডেলিভারির আগেই বের হয়ে যাচ্ছেন। ক্রিকেটের আইনের ৪১.১৬ ধারা বিশ্লেষণ করে এমসিসি বলছে এটা আউট কি আউট না সে সিদ্ধান্ত নিতে হতো অশ্বিনের শরীরী ভাষা দেখেই।

এমসিসির ভাষায় অশ্বিন বল করতে চাইছেন না কি চাচ্ছেন না এটার ওপর নির্ভর করেছে সিদ্ধান্ত, ‘অনেকেই মনে করছেন অশ্বিন তাঁর অ্যাকশনে দেরি করেছেন যাতে বাটলার তাঁর জায়গা থেকে বের হয়ে যায় এবং অশ্বিনের বল যখন ছাড়ার কথা ছিল তখন বাটলার ক্রিজেই ছিলেন। এটা যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে দেরি হয়, তবে এটা অবৈধ এবং ক্রিকেটীয় চেতনা বিরোধী। অশ্বিন দাবি করেছে এটা তা নয়। টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিতে হতো এবং আইন অনুযায়ী এটা গ্রহণযোগ্য সে কেন বাটলারকে আউট দিয়েছে। এটা দুই দলের ওপরই নির্ভর করছে খেলা আইন ও চেতনা দুইয়ের সম্মেলনে যেন হয়। নন-স্ট্রাইকারকে সাবধান হতে হবে যেন সে আগে ক্রিজ ছেড়ে অবৈধ সুবিধা না নেয়, বোলারকেও ৪১.১৬ আইনানুযায়ী সময় মেনে রান আউট করতে হবে।’

এমসিসির বিবৃতিতে ব্যাপারটা খোলাসা না হয়ে ব্যাপারটি আরও জটিলই হলো! তাই নয় কি?