'টাই' ম্যাচে সবচেয়ে দুর্ভাগা দল কলকাতা

আইপিএলে টাই ম্যাচে কখনো জিততে পারেনি কলকাতা। ছবি: এএফপি
আইপিএলে টাই ম্যাচে কখনো জিততে পারেনি কলকাতা। ছবি: এএফপি
>কলকাতা নাইট রাইডার্স ও দিল্লি ক্যাপিটালসের কল্যাণে কাল টাই ম্যাচের উত্তেজনা দেখা গেছে আইপিএল। শেষ হাসি হেসেছে দিল্লিই। এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো আইপিএলের কোনো ম্যাচ সুপার ওভারে গড়াল। কেমন ছিল আইপিএলের ইতিহাসের আগের টাই ম্যাচগুলো?


প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের করা সুপার ওভারে মাত্র ১০ রান নিতে পেরেছিলেন দিল্লির ঋষভ পন্ত, শ্রেয়াস আয়ার ও পৃথ্বী শ। প্রতিপক্ষের কাছে যেহেতু আছে আন্দ্রে রাসেলের মতো অস্ত্র, ব্যাট হাতে কলকাতাই সুপার ওভারের লড়াই হেসেখেলে জিতে যাবে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু সব হিসাব উল্টে দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদা। রাবাদার তোপে কলকাতার রাসেল, দীনেশ কার্তিক ও রবিন উথাপ্পা ৭ রানের বেশি নিতে পারলেন না। আইপিএলে এ নিয়ে আটটি ম্যাচ ‘টাই’ হলো। আসুন দেখে নেওয়া যাক, আগের সাত ‘টাই’ ম্যাচে কোন কোন দল শেষ হাসি হেসেছিল।

রাজস্থান রয়্যালস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স, ২০০৯
দ্বিতীয় আসরে প্রথম টাই দেখেছিল আইপিএল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইউসুফ পাঠানের ৪২ রানে ৬ উইকেটে ১৫০ করেছিল রাজস্থান। পরে সৌরভ গাঙ্গুলীর ৪৬ রানে ভর করে একই রানে আটকে যায় কলকাতা। এরপর সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করতে নামে কলকাতা, কামরান খানের করা ওভারে তিনটি চার মেরে ১৬ রান করেন কলকাতার ক্রিস গেইল। কিন্তু তুখোড় ফর্মে থাকা ইউসুফ পাঠানের কাছে কলকাতার ছুড়ে দেওয়া ১৬ রানের লক্ষ্যকে যথেষ্ট মনে হয়নি। মূল ম্যাচে দুর্দান্ত বল করা অজন্তা মেন্ডিসকে তুলোধুনো করে দুই বল বাকি রেখেই রাজস্থানকে ম্যাচ জেতান পাঠান।

কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব বনাম চেন্নাই সুপার কিংস, ২০১০
পরের বছরেই দুই কিংসের লড়াই শেষ হয় সমানে সমান। মুত্তিয়া মুরালিধরনের তোপে ৮ উইকেটে ১৩৬ রানের বেশি করতে পারেনি পাঞ্জাব। পরের ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে পার্থিব প্যাটেলের ফিফটির পরও ম্যাচটা জিততে পারেনি চেন্নাই। খেলা গড়ায় সুপার ওভারে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৯ রান করে চেন্নাই। তাড়া করতে নেমে খুব সহজেই সে লক্ষ্য অতিক্রম করে পাঞ্জাবকে জেতান মাহেলা জয়াবর্ধনে ও যুবরাজ সিং।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বনাম সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, ২০১৩
পরের টাই ম্যাচ দেখতে আইপিএলের দর্শকদের অপেক্ষা করতে হয় পাক্কা তিন দুই মৌসুম। এই মৌসুমে টাই ম্যাচ হয় দুটি। দুটিতেই জড়িয়ে আছে বেঙ্গালুরুর নাম। প্রথমটায় হায়দরাবাদের মুখোমুখি হয়েছিল বেঙ্গালুরু। অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার মোজেস হেনরিকেস ও ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির দুটি ইনিংসের কল্যাণে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৩০ করে বেঙ্গালুরু। হনুমা বিহারির ব্যাটে চড়ে একই রান করে হায়দরাবাদও। পরে সুপার ওভারে অসি অলরাউন্ডার ক্যামেরন হোয়াইটের ঝড়ে ২০ রান তোলে হায়দরাবাদ। বেঙ্গালুরুর গেইল আর কোহলি পরে চেষ্টা করেও ১৫ রানের বেশি তুলতে পারেননি।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বনাম দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, ২০১৩
এবার আর মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে হয়নি কোহলির বেঙ্গালুরুকে। দিল্লির সঙ্গে ম্যাচটায় দুই দলই ১৫২ রান করে। পরে সুপার ওভারের শেষ দুই বলে দুই ছক্কার কল্যাণে ১৫ রান তোলে বেঙ্গালুরু। পরে ব্যাট করতে নেমে ক্যারিবীয় পেসার রবি রামপালের বোলিং নৈপুণ্যে ১১ রানের বেশি তুলতে পারেনি দিল্লি।

রাজস্থান রয়্যালস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স, ২০১৪
পাঁচ বছর পর আবার আরেকটা ‘টাই’ ম্যাচে মুখোমুখি হয় কলকাতা-রাজস্থান। এবারও শেষ হাসি হাসে রাজস্থানের। এমনকি সুপার ওভারেও এই দুই দলের রান সমান হয়ে যায়। আইপিএলের নিয়মানুযায়ী সুপার ওভারের রানও সমান হয়ে গেলে যে দলের বেশি বাউন্ডারি থাকে, তারা জেতে। সে নিয়মের সুবিধা নিয়ে জিতে যায় স্টিভেন স্মিথের রাজস্থান। কলকাতার হয়ে ম্যাচ হেরে অনন্য অভিজ্ঞতার সাক্ষী হন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান।

রাজস্থান রয়্যালস বনাম কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব, ২০১৫
আইপিএলের পরবর্তী টাই ম্যাচের সঙ্গেও জুড়ে আছে রাজস্থানের নাম। যদিও এবার রাজস্থানের কপালে জেতা হয়ে ওঠেনি। দুই দল ১৯১ রানে থেমে গেলে শুরু হয় সুপার ওভার, যেখানে প্রথমে ব্যাট করতে নামে পাঞ্জাব। রাজস্থানের সামনে ১৫ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় তারা। কিন্তু রাজস্থান ৬ রানের বেশি করতে পারেনি তাদের সুপার ওভারে।

গুজরাট লায়নস বনাম মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, ২০১৭
গুজরাট ও মুম্বাই, দুই দলের ইনিংসই থেমে যায় ১৫৩ রানে। সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মুম্বাই তোলে ১২ রান। কিন্তু পরে মুম্বাইয়ের পেসার জসপ্রিত বুমরার নৈপুণ্যে ছয় রানের বেশি করতে পারেননি গুজরাটের কিউই ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও অ্যারন ফিঞ্চ। মুম্বাই ম্যাচ জেতে ৬ রানে।

আইপিএলের ইতিহাসে এ নিয়ে আট টাই ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই ছিল কলকাতা। যদিও একটি ম্যাচেও জিততে পারেনি ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটি।