সাফল্যের রহস্য রশিদ নিজেই ফাঁস করলেন

নিজের অস্ত্র বাড়াচ্ছেন রশিদ। ছবি: টুইটার
নিজের অস্ত্র বাড়াচ্ছেন রশিদ। ছবি: টুইটার

আইপিএল শুরু হয়ে গেছে এক সপ্তাহ হলো। এর মধ্যে তিনটি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে সব দল। তিন ম্যাচে দুই জয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদের। দলের মতোই মিশ্র সাফল্য রশিদ খানের। তিন ম্যাচে মাত্র ২ উইকেট রশিদের। ওভারপ্রতি যদিও সাতের কম রান দিয়েছেন, কিন্তু হায়দরাবাদ তো তাঁকে দলে নিয়েছে উইকেট নেওয়ার জন্য। প্রতিপক্ষ দলগুলো কি তাহলে রশিদের রহস্য ধরে ফেলছেন? আফগান লেগ স্পিনার অবশ্য এ নিয়ে চিন্তিত নন। কারণ, ব্যাটসম্যানদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকার উপায় তাঁর জানা আছে।


ক্রিকবাজের সঙ্গে কথোপকথনে রশিদ বলেছেন, প্রতিপক্ষ যে বোলিং নিয়ে প্রতিনিয়ত কাটাছেঁড়া করছে, সেটা জানা আছে তাঁর, ‘ক্রিকেট তো এমনই। সবাই আপনাকে নিয়ে গবেষণা করবে, আপনার ভিডিও দেখবে বারবার এবং ওদের মাথায় নতুন কোনো বুদ্ধি আসবে। আপাতত আমি অতীতে ভালো যা কিছু করেছি, তাতে মনোযোগ দিচ্ছি। অনুশীলনে বিভিন্ন ধরনের লেগ স্পিন নিয়ে কাজ করছি। এবং প্রতিটি গ্রিপ (বল ধরার ভঙ্গি) আমাকে ভিন্ন ফল দিচ্ছে। গুগলির ক্ষেত্রেও যখন আমি ভিন্ন গ্রিপ ব্যবহার করছি, ভিন্ন ফল আসছে। কিছু বল বেশি বাউন্স করছে, কিছু বেশি ঘুরছে। আমি দ্রুতগতি ও আমার দ্রুত অ্যাকশনের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছি।’

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দিয়ে বিশ্ব জয় করেছেন রশিদ। বিশ্বের সব প্রান্তেই এখন আফগান স্পিনারের সমাদর। কিন্তু ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন সংস্করণের জন্যই নিজের দক্ষতা বাড়াতে হচ্ছে রশিদকে, ‘এখন আমরা টেস্ট খেলছি। এ কারণেই আমাকে স্কিল বাড়াতে হচ্ছে। আমি এখন পাঁচ-ছয়টি লেগ স্পিন নিয়ে কাজ করছি। এখনো সব কটির ওপর নিয়ন্ত্রণ আসেনি আমার। নেটে ভালোভাবেই করতে পারি বলগুলো কিন্তু ম্যাচে পারছি না। আমার অ্যাকশন বেশ দ্রুত এবং ব্যাটসম্যানদের জন্য আমাকে পড়া বেশ কঠিন। যদি অ্যাকশন বুঝতেও পারেন, তারপর মারতেও তো হবে।’

আইপিএলের নতুন মৌসুম মাত্র শুরু হয়েছে। এখনো বলা কঠিন রশিদের রহস্য অন্যরা ধরে ফেলেছে কি না। গত মৌসুমেও টানা দুই ম্যাচে প্রায় ৫০ রান দিয়েছেন আফগান স্পিনার। গতবার কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে ৫৫ রান দিয়েছিলেন রশিদ। পরের ম্যাচেই চেন্নাই সুপার কিংস তাঁর বলে নিয়েছে ৪৯ রান। টানা দুই ম্যাচে অমন পারফরম্যান্স থেকে শিক্ষা নিয়েছেন রশিদ, ‘ওই ম্যাচগুলোর ভিডিও আমি বারবার দেখেছি এবং আমি জানি কী ভুল করেছিলাম। আমি খুব বেশি সামনে বল ফেলছিলাম। উইকেট পাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু কোনো স্পিন ছিল না। আর আপনি যে-ই হোন না কেন, এসব ক্ষেত্রে মার খাবেনই। আমি তখন বুঝেছি, সব ম্যাচেই উইকেট পাব না। এর চেয়ে আমি যা করতে পারি, তাতে নজর রাখা উচিত। আমার নজর দেওয়া উচিত বলের লেংথে। ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিই আমার শক্তি। আমি আমার লেংথে ফিরে গেছি।’

নিজের ফর্ম ধরে রাখার পেছনের রহস্যটাও খোলাসা করেছেন রশিদ। আর সেটা হলো খেলা উপভোগ করা, ‘আপনাকে প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে হবে। যদি তা না করেন, তাহলে আপনার বিশ্বাস হারাবেন, খেলার ধারও। টিভিতে যখনই আমাকে অলস মনে হয়, আমার ভাতিজা ফোন করে জিজ্ঞেস করে, “কী হয়েছিল?” আমাকে এটা মাথায় রাখতে হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ফিটনেস। গত দুই বছরে আমি এ নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছি।’