ভারতের সাবেক কোচের বিরুদ্ধে আইপিএলে বাজি ধরার অভিযোগ

আইপিএলের ম্যাচ নিয়ে বাজি ধরার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আরোঠিকে। ফাইল ছবি
আইপিএলের ম্যাচ নিয়ে বাজি ধরার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আরোঠিকে। ফাইল ছবি
>

আইপিএলে ম্যাচ পাতানোর বিষয়টি নতুন নয়। এবারের আইপিএলে এখনো সে অভিযোগ ওঠেনি। তবে ম্যাচ পাতানোর পেছনের কারণটা এরই মধ্যে নজরে এসেছে। আইপিএলের ম্যাচের ফল নিয়ে বাজি ধরার অভিযোগে ভারতীয় নারী দলের সাবেক কোচ তুষার আরোঠিকে গ্রেপ্তার করেছে গুজরাট পুলিশ। যদিও পরদিনই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে।

আইপিএলে ম্যাচ পাতানোর দায়ে চেন্নাই সুপার কিংস, রাজস্থান রয়্যালস, কোচি টাসকার্স কেরালার মতো ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নিষিদ্ধ করেছিল ভারতের ক্রিকেট বোর্ড। আইপিএলের ম্যাচ পাতাতে গিয়ে নিষিদ্ধ হয়েছেন শান্তাকুমারণ শ্রীশান্তের মতো ক্রিকেটাররা। বিশ্বব্যাপী অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগগুলোর মতো আইপিএলকে ঘিরেও জুয়াড়িদের আগ্রহ-উদ্দীপনা থাকে অনেক। এবারের আইপিএলে ম্যাচ পাতানো হচ্ছে, এই সন্দেহ এখনো ওঠেনি। তবে ভারতের নারী ক্রিকেট দলের সাবেক কোচ তুষার আরোঠিকে ম্যাচ নিয়ে বাজি ধরায় গ্রেপ্তার করেছে গুজরাট পুলিশ।

১ এপ্রিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ও দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচ নিয়ে বাজি ধরার অভিযোগে আরোঠিসহ ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে পরদিন গ্রেপ্তার ১৯ জনকে জামিন দেওয়া হয়েছে। যদিও জানা গেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যাবে পুলিশ। এদিকে তুষার দাবি করেছেন, ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই তাঁর। নিষ্পাপ তিনি।

দুই বছর আগে মিতালি রাজের নেতৃত্বে ভারত বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে ৯ রানে হেরেছিল তাঁরা। তখন তাঁদের কোচ ছিলেন তুষার। পুলিশ কর্মকর্তা জয়দীপ সিং জাদেজা জানিয়েছেন, বাজি ধরার খবর তাঁদের কাছে আগে থেকেই ছিল। সেই খবর পেয়ে গত সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁরা একটি ক্যাফেতে তল্লাশি চালাতে যান। ক্যাফের নাম ক্যাফে স্টক এক্সচেঞ্জ। এই ক্যাফের মালিকপক্ষের একজন হলেন তুষারের পুত্র ঋষি। তল্লাশির সময় তুষার ছাড়াও ক্যাফের দুই অংশীদার হেমাং প্যাটেল ও নিশ্চল মিতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বাজেয়াপ্ত করা হয় ২১টি মোবাইল ও ৯টি গাড়ি। প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ টাকার মালামাল জব্দ করে পুলিশ। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ও দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচ নিয়েই ক্যাফেতে তুষাররা বাজি ধরছিলেন। কিন্তু ঠিক সময়ে পুলিশ এসে জুয়াড়িদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে দেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তুষার সক্রিয়ভাবে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।

জামিন পেয়ে তুষার জানিয়েছেন, পুলিশ কেন তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে তাঁর মাথাতেই ঢুকছে না, ‘আমি বাজি ধরার সঙ্গে জড়িত নই। আমি সেদিন আমার বরোদা দলের ফিজিও ওসমান জুঝুরার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আমরা আলাদা একটি কক্ষে বসে গল্পগুজব করছিলাম। তখনই পুলিশ এসে ক্যাফেতে হানা দেয়।’ এদিকে তুষার আরও দাবি করেছেন, পুলিশ যে তিনটি অ্যাপ দিয়ে বাজি ধরার কথা বলেছে, সেগুলোর একটিও তাঁর মোবাইলে নেই, ‘আমার ফোনে কোনো অ্যাপও (বাজি ধরার) নেই। তাহলে পুলিশ কীভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করতে পারে? প্যাটেলের ফোনে সেই অ্যাপ পাওয়া গেছে। আমি যখন জিনিসটা জানতে পারলাম, আমার প্যাটেলের গালে একটা চড় মারতে ইচ্ছে হয়েছিল। কিন্তু পারিনি। প্যাটেল এত খারাপ জানলে আমি ক্যাফের মালিকানায় ওকে রাখতাম না।’

পুলিশ আরোঠির বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে। পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণাদি পাওয়া গেলে তবেই তাঁদের বিপক্ষে চার্জশিট দাখিল করা হবে।