আইপিএলের মেদ ঝরাতে ডি ভিলিয়ার্সের দাওয়াই

এবি ডি ভিলিয়ার্স। ছবি: টুইটার
এবি ডি ভিলিয়ার্স। ছবি: টুইটার

তাঁর সরল মুখখানি দেখে বোঝার উপায় নেই ব্যাট হাতে কতটা ভয়ংকর। রুদ্রমূর্তি ধারণ করতে পারেন উইকেটের চারপাশেই। এবি ডি ভিলিয়ার্সকে এ জন্য ডাকা হয় ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি’। মজার ব্যাপার, এই ডি ভিলিয়ার্সই আবার কলম হাতে বেশ রসিক। মজার ছলে খোঁচা মারতে পারেন ভালোই। আইপিএলে ম্যাচগুলোর দৈর্ঘ্য কেমন ফুলে-ফেঁপে সীমালঙ্ঘন করছে, সে তো সবাই দেখছে। মোহাম্মদ কাইফ, টম মুডিরা এ নিয়ে এর আগে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন। ডি ভিলিয়ার্সও তুললেন। সেটি বেশ ব্যতিক্রমভাবে। আইপিএলে ম্যাচগুলোর অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে জিমে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন এই প্রোটিয়া।

আইপিএলে প্রতি ইনিংস ৯০ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে দুবার ‘স্ট্র্যাটেজিক টাইম আউট’ যার মেয়াদ আড়াই মিনিট করে। তাতে একটি ম্যাচের দৈর্ঘ্য ২০০ মিনিট পেরিয়ে যায়। কারণ খেলোয়াড়েরা চোট পেলে এমনিতেই অতিরিক্ত আরও কিছু সময় লাগে। কিন্তু এবার আইপিএলে রাতের বেশির ভাগ ম্যাচ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে শেষ হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে (ভারতীয় সময়) রাত ৮টায় শুরু হয়ে শেষ হতে হতে রাত ১২টা পেরিয়ে যায়। অধিনায়কদের স্লো ওভাররেট এর অন্যতম কারণ। এ মৌসুমে সে জন্য জরিমানাও দিতে হয়েছে তিন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের অধিনায়ক—বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা ও অজিঙ্কা রাহানেকে। কিন্তু ডি ভিলিয়ার্সের কৌশলী প্রশ্ন, জরিমানায় ঠিক কতটা কাজ হচ্ছে?

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’য় লেখা কলামে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই অধিনায়ক বেশ রসিকতা করেই লিখেছেন, ‘প্রথমবার এমন করলে জরিমানা দিতে হয়, এরপর নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু এ ধরনের পদক্ষেপের ফল তেমন একটা মিলছে না। অনেকটাই এমন যে, ভীষণ মোটা কেউ ওজন কমাতে দুটো বিশাল হ্যামবার্গারের সঙ্গে ডায়েট কোক অর্ডার করেছে!’

আইপিএলে ম্যাচগুলোর দৈর্ঘ্য নিয়ে রসিকতাও করেছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর এই ব্যাটসম্যান। ২০০৮ সালে শুরু হওয়া আইপিএলে এবার ১২তম সংস্করণ চলছে। বলা যায়, টুর্নামেন্টটি এখন বেশ পরিণত। ডি ভিলিয়ার্স এর সঙ্গে তুলনা টেনেছেন জীবনের মধ্যবয়সের, যখন অনেকের শরীরেই মেদ জমে। কলামে তাঁর রসিকতা, ‘এতে লজ্জার কিছু নেই। মধ্যবয়সে সবারই এমন হয়। কিন্তু ফিট থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। সম্ভবত আইপিএলেরও জিমে যাওয়া প্রয়োজন। ম্যাচগুলো সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। এটা পর্যাপ্ত সময়। কিন্তু এবার আইপিএলে ম্যাচগুলো শেষ হতে চার ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। দিল্লি ও কলকাতা ম্যাচের নিষ্পত্তি হতে সুপার ওভার শেষে মনে হয়েছিল সকালের নাশতার সময় হয়ে গেছে! এ নিয়ে কী করা যায়?’

ডি ভিলিয়ার্সের পরামর্শ, ‘মধ্যবয়সীদের মধ্যে যাঁরা কোমর বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে লড়ছেন, তাঁরা জানেন জবাবটা আসলে ভালো অভ্যাসের মধ্যে লুকিয়ে। কম খেয়ে বেশি খাটতে হয়। আইপিএলেও আমরা সবাই মিলে এই দায়িত্ব নিতে পারি। দুই ইনিংসের মাঝে ২০ মিনিটের বিরতিটা কমিয়ে ১০ মিনিট করা যায়, যদি আম্পায়ারেরা তাঁদের চা দ্রুত শেষ করেন। অনেকে বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানা, রান রেট জরিমানা কিংবা পয়েন্ট কর্তনের প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু আইপিএলকে বিকৃত করাও চলবে না। কোমল আচরণ সম্ভবত বেশি কার্যকর হবে। আম্পায়াররা সময়ে চোখ রাখবেন। অধিনায়ক দেরি করলে তাঁকে সতর্ক করবেন। আর খেলোয়াড়েরাও মাঠে হাঁটার বদলে দৌড়াতে পারে। আসলে ভালো অভ্যাসের মাধ্যমেই আইপিএলকে আমরা ফিট রাখতে পারি।’