বয়স চুরিতে যে রেকর্ড হাতছাড়া হচ্ছে আফ্রিদির

শহীদ আফ্রিদি। ছবি: টুইটার
শহীদ আফ্রিদি। ছবি: টুইটার
>

আত্মজীবনী ‘গেম চেঞ্জার’-এ নিজের আসল বয়স জানিয়েছেন শহীদ আফ্রিদি। তাঁর যে বয়স সবাই জানে, আসলটা তার চেয়ে পাঁচ বছর বেশি! এতে বেশ কিছু রেকর্ড তাঁর দখলে থাকে না

ক্রিকেটপ্রেমী অনেকেরই ধারণা ছিল, শহীদ আফ্রিদির আসল বয়সটা কখনোই জানা যাবে না। এই ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক নিজেই। আত্মজীবনী ‘গেম চেঞ্জার’-এ আফ্রিদি লিখেছেন, এত দিন সবাই তাঁর যে বয়স জেনেছেন, সেটি আসলে ঠিক নয়। বইয়ে তিনি তাঁর জন্মসাল লিখেছেন ১৯৭৫। তার অর্থ দাঁড়াচ্ছে, আফ্রিদির যে বয়সটা সবাই জানেন, তাঁর আসল বয়স তার চেয়ে পাঁচ বছর বেশি! পাসপোর্ট অনুযায়ী তাঁর জন্মতারিখ ১ মার্চ ১৯৮০।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৩ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন আফ্রিদি গত বছর। পাসপোর্ট অনুযায়ী তখন তাঁর বয়স ৩৯ বছর। কিন্তু বইয়ের জন্মসাল অনুযায়ী অবসর নেওয়ার সময় পাকিস্তানের সাবেক এ অধিনায়কের বয়স দাঁড়ায় ৪৩ বছর। ক্রিকেটমহলে কথা উঠেছে, দু-এক বছর না হয় এদিক-সেদিক হয়, তাই বলে পাঁচ বছর বয়স চুরি! আত্মজীবনীতে আফ্রিদি এই হেরফের ধরিয়ে দেওয়ার পর কিন্তু তাঁর বেশ কিছু রেকর্ড এখন হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম।

১৯৯৬ সালে কেনিয়ার নাইরোবিতে ৩৭ বলে সেঞ্চুরির সেই বিখ্যাত ইনিংসটা দিয়ে শুরু করা যায়। আফ্রিদির পাসপোর্টের জন্মসাল অনুযায়ী তখন তাঁর বয়স ১৬ বছর ২১৭ দিন। সেই ম্যাচে ওয়ানডেতে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন আফ্রিদি। কিন্তু বয়স চুরির বিষয়টি আফ্রিদি সামনে তুলে আনার পর রেকর্ডটি আর তাঁর দখলে থাকে না। ১৬ বছর ২৫২ দিন বয়সে ম্যাচসেরা হওয়া আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানের দখলে চলে যাবে রেকর্ডটি।

বইয়ের জন্মসাল অনুযায়ী নাইরোবিতে দুর্দান্ত সেই ইনিংস খেলার সময় আফ্রিদির বয়স ছিল ২১ বছর। অর্থাৎ ওয়ানডেতে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে সেঞ্চুরির রেকর্ডটিও তাঁর দখলে থাকছে না। মাত্র ৩৭ বলে সেঞ্চুরি করে ওই ম্যাচে রেকর্ডটি গড়েছিলেন আফ্রিদি, যা টিকে ছিল তিনি নিজে আসল বয়স বলে দেওয়ার আগ পর্যন্ত। স্বাভাবিকভাবেই এখন তা আফগান ওপেনার উসমান গণির দখলে। পাঁচ বছর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৭ বছর ২৪২ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করেছিলেন গণি।

১৯৯৮ সালে করাচিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে এক ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন আফ্রিদি। তখন সেটি ছিল সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট অভিষেকে এক ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড। পাসপোর্টের জন্মসাল অনুযায়ী আফ্রিদির বয়স তখন ১৮ বছর ২৩৫ দিন। পরে তাঁর এ রেকর্ড ভেঙেছিলেন প্যাট কামিন্স (১৮ বছর ১৯৩ দিন)। এবং বর্তমানে রেকর্ডটি বাংলাদেশের স্পিনার নাঈম হাসানের (১৭ বছর ৩৫৫ দিন) দখলে। কিন্তু আফ্রিদি আসল বয়স বলে দেওয়ার পর এই রেকর্ড তালিকার শীর্ষ পাঁচেও তাঁর জায়গা হবে না। শীর্ষ পাঁচের সবার বয়স যে ১৯ বছরের নিচে আর আসল বয়স অনুযায়ী আফ্রিদি তখন ২১ বছরের ক্রিকেটার।

নাইরোবিতে বিস্ফোরক সেই ইনিংসটি খেলার পথে ওয়ানডেতে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ফিফটির রেকর্ডও গড়েছিলেন আফ্রিদি। পরে রেকর্ডটি ভেঙে দেন নেপালের রোহিত পাউডেল (১৬ বছর ১৪৬ দিন)। কিন্তু আসল বয়স অনুযায়ী, রেকর্ডটি তখনো আফ্রিদির দখলে থাকার কথা নয়। কারণ তো সবার জানাই, ২১ বছর বয়সে এই রেকর্ড হয় কীভাবে! এ ছাড়া সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে ১ হাজার, ২ হাজার ও ৩ হাজার রানের মাইলফলক গড়ার রেকর্ডও ধরে রাখতে পারবেন না আফ্রিদি—যদি তাঁর জন্মসাল ১৯৭৫ হয়।