উইন্ডিজ ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ছিল কোনটা, বললেন সাকিব

বৃষ্টিতে অনুশীলন বাতিল, সাকিবের সময়টা কাটল আজ পরিবারের সঙ্গেই। ছবি: প্রথম আলো
বৃষ্টিতে অনুশীলন বাতিল, সাকিবের সময়টা কাটল আজ পরিবারের সঙ্গেই। ছবি: প্রথম আলো

১৪ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান কোনো উইকেট না হারিয়ে ৮৫। যেভাবে এগোচ্ছিল, উইন্ডিজের স্কোর ৩০০ হওয়া কঠিন কিছু ছিল না। শেষ পর্যন্ত সেটি যে হয়নি, স্লগ ওভারের শুরুতেই মাশরাফি বিন মুর্তজার দুটি ধাক্কায়। পেসাররা পরে সাফল্য পেলেও তার আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বড় চাপে রেখেছিলেন দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ।

ইনিংসের মাঝামাঝি সময়ে সাকিব-মিরাজের চাপেই রানের চাকা দ্রুত ঘোরাতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৭ ও ১৮তম ওভারে মিরাজ-সাকিব এনে দিয়েছিলেন গুরুত্বপূর্ণ দুটি ব্রেক থ্রু। ৩৫তম ওভারে যখন নিজের ১০ ওভার শেষ করেন, মিরাজের বোলিং পরিসংখ্যান ৩৮ রানে ১ উইকেট। ইকোনমি ৩.৮০। সাকিব তো আরও কৃপণ—১০ ওভারে ৩৩ রানে ১ উইকেট। তাঁর ইকোনমি ৩.৩। দুই স্পিনার যখন দুই দিক থেকে দিয়েছেন চাপ, ৪০ ওভারের পর ঝুঁকি নিতে হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের। আর তাতেই ছন্দপতন ক্যারিবীয়দের। ম্যাচের মোড় ঘুরল কোথায়, সেটিই আজ ডাবলিনে সাংবাদিকদের বললেন সাকিব, ‘শুরুটা আমরা খুব একটা ভালো করিনি। ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল যখন আমি আর মিরাজ বোলিং করছিলাম। ওই সময়ে আমাদের বোলিং জুটিটা খুব ভালো হচ্ছিল। দুজন ব্রেক থ্রুও দিয়েছি। ওরা যেভাবে শুরু করেছিল, একটা সময় মনে হচ্ছিল ৩০০-৩২০ হবে। আমাদের দুজনের ভূমিকা ওই সময় অনেক বেশি ছিল। আমাদের অনেক সমর্থনও করা হয়েছে। শুরুতে পেসাররা ভালো না করতে পারলেও পরে তারা ফিরে এসেছে। তবে বড় টার্নিং পয়েন্ট ছিল আমাদের দুজনের বোলিং জুটি। ওই সময় ৭-৮ ওভার খুব কম রান দিয়ে ২ উইকেট নেওয়া, আমার কাছে মনে হয় অনেক বড় টার্নিং পয়েন্ট ছিল।’

স্পিনারদের কাজটা কতটা কঠিন ছিল, সেটি আরও বিস্তারিত বললেন সাকিব, ‘আমার কাছে মনে হয় স্পিনাররা উইকেট পড়ে খুব ভালো জায়গায় বোলিং করতে পেরেছে। ওরা যেভাবে শুরু করেছিল, স্পিনাররা ভালো করতে না পারলে বড় স্কোর করতে পারত। দলের ঘুরে দাঁড়াতে স্পিনারদের ওই বোলিং খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথম ১০-১২ ওভারে যেহেতু উইকেট নিতে পারিনি, ওখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। স্পিনরারা যে সেখান থেকে ভালো বোলিং করেছে, এটা আমাদের বড় পাওয়া।’

বিনয় করে সাকিব পরে নিজের নামটা আর বললেন না। তবে তিনি শুধু বোলিংয়েই নয়, ব্যাটিংয়ে অপরাজিত ৬১ রান করেছেন। মোস্তাফিজের বলে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেছেন। একজন আদর্শ অলরাউন্ডার বলতে যা বোঝায়, সাকিব সেটিই কাল করেছেন। কিন্তু কীভাবে সম্ভব হলো? গত ডিসেম্বরের পর প্রায় পাঁচ মাসের বিরতি। মাঝে তাঁকে নিয়ে কত বিতর্ক। লম্বা বিরতির পর জাতীয় দলে ফিরেই দুর্দান্ত খেলার রহস্য বললেন সাকিব, ‘প্রায় ৬ মাস পর ম্যাচ খেললাম জাতীয় দলে। স্বাভাবিকভাবে একটু স্নায়ুচাপ কাজ করে। যেহেতু প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করেছিলাম, একটা আত্মবিশ্বাস ছিল। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ভালো করা অবশ্যই অনেক স্বস্তির ব্যাপার। শুরুটা ভালো হয়েছে। এখন এটা ধরে রাখতে হবে।’