রুটি-রুজি হারানোর শঙ্কায় নারী ফুটবলাররা

বিজেএমসি থেকে চাকরি হারানোর শঙ্কায় পেয়ে বসেছে সাবিনা, মৌসুমিদের। ফাইল ছবি
বিজেএমসি থেকে চাকরি হারানোর শঙ্কায় পেয়ে বসেছে সাবিনা, মৌসুমিদের। ফাইল ছবি
>

প্রায় ছয় বছর ধরে মেয়েদের ঘরোয়া লিগ বন্ধ। ফলে মেয়েদের ফুটবল দল চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনো কারণই খুঁজে পাচ্ছে না বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি)। এতে করে চাকরি হারানোর শঙ্কা পেয়ে বসেছে সাবিনা-মৌসুমিসহ ২১ নারী ফুটবলারের।

মেয়েদের ফুটবলে ঘরোয়া লিগ নেই অর্ধযুগ ধরে। বিজেএমসি তাই তাদের ফুটবল দলটাই বন্ধ করে দিতে চায়। প্রতিষ্ঠানটির এ ভাবনায় চাকরি নিয়ে শঙ্কার মধ্যে আছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনসহ ২১ নারী ফুটবলার।

 সাবিনাদের বিজেএমসি চাকরি দিয়েছিল খেলার জন্যই। নারী ফুটবল লিগে বিজেএমসি দলটির হয়ে খেলবেন তাঁরা—চাকরির শর্ত এটিই। কিন্তু ছয় বছর ধরে মেয়েদের ঘরোয়া লিগ বন্ধ। খেলা না হলে প্রতিষ্ঠানটি খেলোয়াড়দের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেওয়ার কোনো কারণই খুঁজে পাচ্ছে না। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কাছে দ্রুত নারী ফুটবল লিগ শুরু করার আবেদন জানিয়েছিল বিজেএমসি। কিন্তু লিগ শুরু হওয়ার কোনো লক্ষ্মণ নেই। সে কারণেই নারী ফুটবল দল নিয়ে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাটি।

প্রতিষ্ঠানের এক শীর্ষ কর্মকর্তার বক্তব্যে দল বন্ধ করে দেওয়ার ইঙ্গিতটা স্পষ্টই, ‘বিজেএমসিতে একজন কোচসহ ২১ জন নারী ফুটবলার চাকরি করছেন। তাঁদের তো আমরা খেলার জন্য নিয়েছি। কিন্তু প্রায় ছয় বছর ধরে কোনো খেলা নেই। এখন খেলা না থাকলে প্রতিষ্ঠান তাঁদের জন্য কেন বেতন গুনবে! প্রতিষ্ঠানতো কাউকে বসিয়ে রেখে বেতন দিতে পারে না। সে কারণেই দল বন্ধ করে দেওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।’

২১ নারী ফুটবলারের মধ্যে ১১ জন আছেন জাতীয় দলের ক্যাম্পে। আছেন অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক মিসরাত জাহান মৌসুমিও। এ ছাড়া সিরাত জাহান স্বপ্না, মাসুরা পারভীনদের মতো তারকারাও আছেন, যাঁরা সিনিয়র জাতীয় দলসহ বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা জাতীয় দলের বাইরে আছেন যাঁরা, তাঁদের। লিগ না হওয়ায় বিজেএমসির চাকরি হারালে রীতিমতো পথেই বসতে হবে তাঁদের। এই খেলোয়াড়দের একমাত্র আয়ের উৎস এ চাকরিটিই।

সাবিনা শঙ্কিত পুরো ব্যাপারটি নিয়ে, ‘আমরা অনেক দিন ধরেই চাকরি হারানোর ভয়ে আছি। এই বছর খেলা না হলে চাকরি হারানোর সম্ভাবনা ৯০ ভাগ। অনেক মেয়ে আছি, যারা এই চাকরির টাকা দিয়েই সংসার চালাই। কী যে হবে বুঝতে পারছি না।’