রামোসকে ছেড়ে দেবে রিয়াল, যদি...

রামোস পেরেজের সম্পর্ক শীতল হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। ছবি: টুইটার
রামোস পেরেজের সম্পর্ক শীতল হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। ছবি: টুইটার
>

রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের সঙ্গে শীতল সম্পর্ক চলছে সার্জিও রামোসের। যদিও তাঁকে বিক্রি করার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন পেরেজ। তবে ভালো কোনো প্রস্তাব পেলে রোনালদোর মতো তাকেও যেতে দিতে পারে রিয়াল।

ভয়াবহ এক মৌসুম শেষ করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। একে তো জেতা হয়নি কিছুই, তার ওপর দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের বাজে পারফরম্যান্স। রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকেরা যখন বড় কোনো তারকাকে দলে চাচ্ছে, ঠিক তখনই গুঞ্জন ছড়িয়েছে সার্জিও রামোসের দল ছাড়ার। রিয়াল অধিনায়ক দল ছাড়তে চাইলে নাকি খুব একটা আপত্তি নেই ক্লাবে। সে ক্ষেত্রে প্রস্তাবটা হতে হবে আকর্ষণীয়। সহজ ভাষায় বেশি টাকা পেলেই রামোসকে ছেড়ে দেবে রিয়াল। এটি জানিয়েছেন ক্লাব সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ নিজেই।

রামোস ও রিয়ালের সম্পর্ক পেরিয়ে গিয়েছে এক যুগ। ২০০৪ সালে দুর্দান্ত এক ফ্রি কিক চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছিল জিদান, বেকহাম, রবার্তো কার্লোসদের। এর পরেই সেভিয়া থেকে ১৮ বছর বয়সী রামোসকে কিনে আনেন পেরেজ। সেই থেকে শুরু। একে কেটে গিয়েছে ১৫ বছর। হয়েছেন রিয়ালের রক্ষণভাগের মূল কান্ডারি, ক্যাসিয়াসের বিদায়ের পর অধিনায়ক। টানা তিন চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে ঠাঁই করে নিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। রিয়াল ও রামোস হয়ে উঠেছে একই বৃন্তে দুটি ফুল। কিন্তু হঠাৎই যেন সুখের সংসারে আগুন লাগার দুঃসংবাদ।

রামোসের দল ছাড়া অবশ্য কোনো উড়ো খবর নয়। খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সভাপতি পেরেজ নিজেই। স্প্যানিশ রেডিও স্টেশন ওনদা সেরোকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে রামোসের বিষয়টিও। সেখানেই ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ রামোসের দল ছাড়ার বিষয়ে কথা বলেছেন, ‘সার্জিও (রামোস) আমাকে বলেছে তাঁর চীন থেকে কয়েকটি অফার আছে। তারা তাঁকে একেবারে টাকা-পয়সা ছাড়া পেতে চাইছে, কারণ সেখানে দলবদলের অর্থ নিয়ে বেশ ঝামেলা হয়। তবে আমি বলেছি আমাদের অধিনায়ককে আমরা এভাবে যেতে দিতে পারি না। তবে সে আমাকে ছেড়ে যাবে এ কথা বলেনি। শুধু বলেছে ভালো অফার আছে।’

ফ্লোরেন্তিনো আর রামোসের মধ্যে সমস্যার সূচনা আয়াক্সের বিপক্ষে বাজেভাবে হারার পর থেকে। প্রথম লেগে হলুদ কার্ড হজম করে দ্বিতীয় লেগ খেলতে পারেননি রামোস। নিজেদের মাটিতে বাজেভাবে হেরে তিন বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পরে রিয়াল। সে সময় ড্রেসিংরুমে পেরেজ ও রামোসের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। সে সময় রামোস বলেছিলেন, ‘আমার টাকা দিয়ে দাও, আমি চলে যাই।’ যদিও পেরেজ সাক্ষাৎকারে সে কথা অস্বীকার করেছেন, তবুও যা রটে তার কিছু হলেও তো ঘটে।

সাক্ষাৎকারের দিন তিনেক পার হয়ে গিয়েছে। রিয়ালের অনুশীলনেও যোগ দিয়েছেন রামোস। তবে রটনা বন্ধ হয়নি। সার্জিও রামোসের রিয়ালে ভবিষ্যৎ এখনো অনেকটাই অনিশ্চিত। পেরেজ নিজেই বলেছেন, আমরা আমাদের অধিনায়ককে বিনে পয়সায় যেতে দিতে পারি না। তাতে করে গুঞ্জনের পালে আরও হাওয়া লেগেছে। রামোসের ওপর ৮০০ মিলিয়ন ইউরোর বিশাল বাই-আউট ক্লজ দিয়ে রেখেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ব্যাপারটা এমন নিতে হলে সেটা ভেঙে নিয়ে যাও। আশার কথা হচ্ছে রোনালদোর ১ বিলিয়ন বাই-আউট ক্লজ এসে থেমেছে ১০৫ মিলিয়নে। সেখানে রামোসের দাম কমার অপেক্ষা করতেই পারে আগ্রহী দল। তবে রামোসের জন্য ১০০ থেকে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো আশা করছে রিয়াল।

যদিও বয়সটা ৩৩ বছর ছুঁয়েছে রামোসের। তাতে করে আগ্রহী দলের সংখ্যা কমেনি। যে বয়সে অধিকাংশ ফুটবলারের চিন্তা থাকে বুট তুলে রাখার, সেখানে প্রতিদিনই নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন রামোস। তাঁকে কেনার রাস্তায় রয়েছে ইউনাইটেড, পিএসজি ও জুভেন্টাস। চীন থেকেও রয়েছে বছরে ৩৫ মিলিয়ন ইউরো বেতনের দুইটি অফার। দেখা যাক রোনালদোর মতো রামোসকেও যেতে দেয় কিনা রিয়াল মাদ্রিদ।