ইংল্যান্ডে কলঙ্কিত, ইংল্যান্ডেই বিশ্বকাপ অভিষেক!

আজই বিশ্বকাপে অভিষেক হতে পারে আমিরের। ছবি: এএফপি
আজই বিশ্বকাপে অভিষেক হতে পারে আমিরের। ছবি: এএফপি
>

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আজ বিশ্বকাপ শুরু করবে পাকিস্তান। একাদশে মোহাম্মদ আমিরের থাকার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ

পাকিস্তানের বিশ্বকাপ দলে মোহাম্মদ আমিরের নাম প্রথমে না থাকা নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। দেশটির সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শুরু করে ওয়াসিম আকরাম, শোয়েব আখতারদের মতো তারকারা ছিলেন সমালোচকদের তালিকায়। চাপের মুখে কিংবা যে কারণেই হোক, শেষ মুহূর্তে আমিরকে বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১৯ দলে অন্তর্ভুক্ত করেন নির্বাচকেরা। এখন ওয়ানডে বিশ্বকাপে অভিষেকের প্রহর গুনছেন আমির।

শুধু ১৫ সদস্যের দলেই থাকা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকার পাত্র নন পাকিস্তানি পেসার। আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একাদশেও দেখা যাবে তাঁকে। আমিরের দলে থাকার ইঙ্গিতটা দিয়েছেন পাকিস্তান দলের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ, ‘ আমির এখন পুরোপুরি সুস্থ এবং আগামীকালের ( আজ) ম্যাচে তাঁকে খেলানো সম্ভব। ’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মোহাম্মদ আমিরের আবির্ভাব উল্কার মতো। ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বলে রবি বোপারার উইকেট পান এ বাঁ হাতি। ওই টুর্নামেন্টে ৭ ম্যাচ খেলে ৬ উইকেট নিলেও আমিরের বোলিং মুগ্ধতা ছড়িয়েছিল। তখন থেকেই তাঁর মধ্যে ওয়াসিম আকরামের ছায়া দেখতে শুরু করেছিলেন অনেকে। ওই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান।

ওই বছরই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে টেস্ট ও ওয়ানডে অভিষেকও হয়ে যায় আমিরের। নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন ওই সংস্করণেই। ফলে তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশার পারদ চড়তে থাকে একটু একটু করে। তবে বিপত্তি ঘটে ২০১০ সালে। আমির তখন দুর্দান্ত ফর্মে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে ২ টেস্টে ১১ উইকেট ২২. ২৭ গড়ে। তারপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ টেস্টের ৭ ইনিংসে ১৯ উইকেট, ১৮. ৩৬ গড়ে। কিন্তু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই সিরিজের লর্ডস টেস্টে জড়িয়ে পড়লেন স্পট ফিক্সিংয়ে। পাঁচ বছর নিষিদ্ধ হন সব ধরনের ক্রিকেট থেকে। ছয় মাসের কারাবরণও করতে হয়েছে।

সেই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন আমির। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ও এশিয়া কাপ দুটিতেই দুর্দান্ত বল করেছেন। পরের বছর ইংল্যান্ডে জিতেছেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে নিয়েছেন ১৬ রানে ৩ উইকেট।

তার মানে ইংল্যান্ডে যেমন তাঁর দুর্দশার গল্প আছে, তেমনি আছে সফলতার গল্পও। আইসিসির দুটি টুর্নামেন্টে খেলেছেন ইংল্যান্ডে, দুটিতেই দলের হয়ে জিতেছেন শিরোপা। এবার সেই ইংল্যান্ডেই বিশ্বকাপ অভিষেক হতে যাচ্ছে আমিরের। পাকিস্তান তাঁকে ঘিরে স্বপ্ন দেখতেই পারে।

অবশ্য চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর থেকেই নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন এই বাঁ হাতি পেসার। এই দুই বছরে ১৫ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন মাত্র ৫ উইকেট, গড় ৯২. ৬০! এই সময়ে খেলা কোনো ম্যাচে একটির বেশি উইকেট নিতে পারেননি। এর মধ্যে ছিলেন ৯টি ম্যাচ উইকেটশূন্য! এমন ফর্মের কারণেই শুরুতে বিশ্বকাপ ক্রিকেট দলে ডাকা হয়নি তাঁকে।

প্রতিভাবান এই বোলারের অবশ্য শুভাকাঙ্ক্ষীর অভাব হয়নি কখনো। তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কিংবদন্তি পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরাম, দাবি জানিয়েছেন বিশ্বকাপে নেওয়ার। আমির সমর্থন পেয়েছেন আরেক সাবেক পেসার শোয়েব আখতারেরও। নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত নিয়ে সাবেকদের এই সমালোচনা এবং ইংল্যান্ড সিরিজে দলের অন্য বোলারদের বাজে ফর্ম কপাল খুলে দেয় আমিরের। ডাক পান বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে।