নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা ফিফটি-ফিফটি

নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ ম্যাচে কাউকেই এগিয়ে রাখছেন না আমিনুল। ছবি: ফাইল ছবি
নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ ম্যাচে কাউকেই এগিয়ে রাখছেন না আমিনুল। ছবি: ফাইল ছবি
>
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলতে নামবে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম এ ম্যাচকে বলছেন ফিফটি-ফিফটি।

দারুণ মুডে আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় দলের আত্মবিশ্বাস অনেক উঁচুতে তুলে দিয়েছে। কিউইদের বিপক্ষে মাশরাফি-সাকিব-তামিমরা তাই থাকবে দারুণ চনমনে। নিউজিল্যান্ডেরও এটি দ্বিতীয় ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০ উইকেটের জয় নিয়ে তারাও বাংলাদেশের মতোই থাকবে অনেকটা নির্ভার, আত্মবিশ্বাসী।

দুই দলেরই দ্বিতীয় ম্যাচ। দুটি দলই চাইবে ম্যাচটি জিতে নিজেদের অন্যদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে রাখতে। ম্যাচটা দিনরাতের। সে কারণে এই ম্যাচের জন্য দলগুলোর পরিকল্পনা থাকবে পুরোপুরি ভিন্ন। তবে আমি মনে করি এই ম্যাচে বাংলাদেশ আর নিউজিল্যান্ড একই জায়গায় দাঁড়িয়ে। তাই এটি হবে ফিফটি-ফিফটি ম্যাচ।

দিনরাতের ম্যাচ হওয়ার কারণে, টসে জিতে বিনা দ্বিধায় ব্যাটিং করে নেওয়াটাই ভালো। ইংল্যান্ডে খুব বেশি দিনরাতের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের নেই। ইংল্যান্ডে রাতে ঠান্ডা আরও বেড়ে যায়। বল সুইং করে বেশি। তাই রাতে ব্যাটিং করাটা বেশ কঠিন। নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলাররাও এ সময় ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। তাই টসটা কাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই ম্যাচে বাংলাদেশ দুটি জায়গায় এগিয়ে, একটিতে পিছিয়ে। আগে পিছিয়ে থাকা জায়গা নিয়েই কথা বলি। বাংলাদেশের বিপদের কারণ হতে পারে কিউই ফাস্ট বোলাররা। নামগুলো দেখুন—টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরি, লকি ফার্গুসন। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম মিডিয়াম পেসার হলেও ইংলিশ কন্ডিশনে খুবই কার্যকর। কিছুদিন আগে নিউজিল্যান্ড সফরে এরা সবাই আমাদের ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিয়েছে। তাই আজকের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলারদের বোলিং বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জই।

বাংলাদেশ এগিয়ে ব্যাটিংয়ে আর স্পিন বোলিংয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকা আমাদের ব্যাটিং-শক্তিটা বুঝেছে। তামিম-সৌম্য-সাকিব-মুশফিক-মিঠুন-মাহমুদউল্লাহ। এরপর মোসাদ্দেক, মিরাজ—দীর্ঘ ব্যাটিং লাইনআপ। আমাদের দলের ব্যাটিংয়ের শক্তি এতটাই যে লিটন দাস আর সাব্বির রহমানের মতো দুজন ব্যাটসম্যানের দলে জায়গা নেই। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত যা বুঝছি, তাতে আগে ব্যাটিং করে বড় সংগ্রহটা খুব জরুরি। সেই ‘বড় সংগ্রহে’র ক্ষমতা বা সামর্থ্য আমাদের ব্যাটসম্যানদের যথেষ্টই। সাকিব, মিরাজ গত ম্যাচে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে যে বোলিং করেছে, তাতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওদের নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী। তবে বাংলাদেশের রানিং বিটুইন দ্য উইকেট একটু দুর্বল। এটা নিয়ে কাজ করার যথেষ্ট জায়গা আছে।

কোচ স্টিভ রোডস একটা নির্দিষ্ট ট্যাকটিকস নিয়ে এগোচ্ছেন। এই একটি ট্যাকটিকস আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজে কাজে এসেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও কাজে এসেছে। আমরা জিতেছি। আপাতত এটা পরিবর্তন করার কোনো কারণ দেখি না। পরিবর্তন করাও উচিত না। আমি প্রথম ম্যাচের আগে সাকিব আল হাসানকে ৫ নম্বরে খেলানোর কথা বলেছিলাম। সেটি একটা নির্দিষ্ট ভাবনা থেকে। রোডসেরও নিশ্চয়ই তাকে তিনে খেলানো নিয়ে কোনো ভাবনা আছে, সেটি থাকতেই পারে। তবে এটা বলতে দ্বিধা নেই, তিনি তাঁর পরিকল্পনায় এখন পর্যন্ত দারুণ।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটিংটা কেমন হবে? ওদের ফাস্ট বোলারদের খেলার পরিকল্পনাটাও বা কেমন হবে? আমি মনে করি আজ ব্যাটসম্যানদের সিঙ্গেলসের ওপর প্রচুর জোর দেওয়া উচিত। সিঙ্গেলস নিয়ে নিয়ে বোলারদের রীতিমতো বিষণ্ন করে দিতে হবে। ২০১৯ বিশ্বকাপে স্কয়ার দ্য উইকেট প্রচুর রান আসছে। তাই ব্যাটসম্যানদের স্কয়ার কাট, হুক, পুল—এসব শটে জোর দেওয়া।

নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশের অতিপরিচিত প্রতিপক্ষ। কিছুদিন আগেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গোটা একটা সিরিজ খেলেছে দল। আমরা এই দলটির বিপক্ষে অনেকবার জিতেছি। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আমরা ওদের হারিয়েছি দারুণ খেলে। আশা করি সুখস্মৃতিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ আজ আরও একবার দেশবাসীর জন্য আরও একবার আনন্দের উপলক্ষ এনে দেবে।