সেই শচীনের কণ্ঠেই সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর!

এবার আর সমালোচনা নয়, ধোনির প্রশংসাই করেছেন টেন্ডুলকার। রয়টার্স ফাইল ছবি
এবার আর সমালোচনা নয়, ধোনির প্রশংসাই করেছেন টেন্ডুলকার। রয়টার্স ফাইল ছবি
>আফগানিস্তান ম্যাচের পর মহেন্দ্র সিং ধোনির বেশ সমালোচনা করেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। এবার বাংলাদেশ ম্যাচের পর সেই টেন্ডুলকারের কণ্ঠেই ধোনির জন্য বরাদ্দ থাকল প্রশংসা

বেশি দিন নয়, এই তো দিন দশেক আগের কথা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে পাঁচ নম্বরে নেমে ৫২ বলে ২৮ রানের মন্থর এক ইনিংস খেলেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। পঞ্চম উইকেটে কেদার যাদবকে সঙ্গে নিয়ে ৮৪ বলে ৫৭ রান যোগ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ১১ রানে জিতেছিল ভারত, কিন্তু সমালোচনা এড়াতে পারেননি ধোনি। সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শচীন টেন্ডুলকারের মতো কিংবদন্তিও সেদিন ধোনির সমালোচনা করেছিলেন। এবার বাংলাদেশ ম্যাচের পর সেই শচীনের কণ্ঠেই সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর!

পরশু ম্যাচে ৩৯তম ওভারে ক্রিজে এসেছিলেন ধোনি। আউট হয়েছেন একদম শেষ ওভারে। আউট হওয়ার আগে করেছেন ৩৩ বলে ৩৫ রানের ইনিংস,স্ট্রাইক রেট ১০৬.০৬। আফগানিস্তান ম্যাচের তুলনায় অনেক ভালো মনে হতে পারে, কিন্তু ধোনির মতো মারকাটারি একজন ব্যাটসম্যানের নামের পাশে এ ইনিংস খুব একটা মানানসই নয়। খুব যে মেরে খেলেছেন, সেটিও নয়। ৩৩ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি মেরেছেন মাত্র চারটি। বাউন্ডারির আশায় মোস্তাফিজুর রহমানের শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে কোনো রান নেননি। কিন্তু বাউন্ডারি তো মারতে পারেনই নি, উল্টো তৃতীয় বলেই মোস্তাফিজের স্লোয়ার বাউন্সারে সাকিবের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন।

শেষ দশ ওভারে মাত্র ৬৩ রান তুলতে পেরেছে ভারত। উইকেটে ধোনি থাকা সত্ত্বেও ডেথ ওভারে এ রানকে কমই বলতে হয়। কিন্তু তবুও ধোনির গতকালের ইনিংসে সন্তুষ্ট শচীন। ম্যাচ শেষে ধোনির ইনিংসের প্রশংসা করে শচীন বলেছেন, ‘আমার মনে হয়েছে, ধোনির ইনিংসটা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দলের যেটা প্রয়োজন ছিল, ঠিক সেটাই করেছে সে। সে শেষ ওভার পর্যন্ত উইকেটে থাকা মানে দলের বাকিরা তাকে ঘিরে খেলতে পারে। দল ওর কাছ থেকে যা চায়, ঠিক সেটাই করেছে সে।’

শচীনের মতে, নিজের জন্য নয়, বরং দলের চাহিদা অনুযায়ীই খেলেছেন ধোনি, ‘ওর কাছে দলই সব। উইকেটে থাকার সময় পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেটাই করার দরকার ছিল এবং ধোনি ঠিক কাজই করেছে।’

অথচ আফগানিস্তান ম্যাচের পর শচীনই প্রকাশ্যে ধোনির সমালোচনা করেছিলেন। আগে ব্যাট করেও দলকে বড় পুঁজি এনে দিতে না পারায় সেদিন ধোনির ওপর বেশ বিরক্ত হয়েছিলেন ‘মাস্টার ব্লাস্টার’। দলের চাহিদা অনুযায়ী আক্রমণাত্মক না হওয়ায় সেদিন নিজের হতাশা গোপন করতে পারেননি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান ও সেঞ্চুরির মালিক শচীন, ‘আমি কিছুটা হতাশ। আমাদের ব্যাটিং আরও ভালো হতে পারত। কেদার আর ধোনির জুটি দেখে আমি খুশি নই। তারা ধীর গতিতে ব্যাট করেছে। স্পিনের বিরুদ্ধে ৩৪ ওভার ব্যাটিং করে আমরা মাত্র ১১৯ রান করেছি। বোঝা যাচ্ছে আমরা স্পিনে বেশ দুর্বল।’

শচীনের এমন মন্তব্যের পর অবশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে বেশ কথা শুনিয়েছিলেন ধোনির ভক্তরা। ২৮ বছর পর ভারতকে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ এনে দেওয়া ধোনির ভক্ত-সমর্থকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তাদেরই একাংশ টুইটারে শচীনকে জবাব দিয়েছিলেন বেশ দৃষ্টিকটুভাবে। কেউ কেউ দুজনের ক্রিকেটীয় অর্জনের তুলনায় নেমেছিলেন, আবার কেউ কেউ তাদের বায়োপিকের দর্শকসংখ্যাকেও টেনে এনেছিলেন! পরশু ম্যাচের পর ধোনির পক্ষেই ব্যাট ধরেছেন শচীন। এবার নিশ্চয়ই আর ধোনি ভক্তদের সমালোচনা শুনতে হবে না তাঁকে!

আরও পড়ুন: