নতুন কোচ কবে পাবে বাংলাদেশ?

>
বিসিবি সভাপতি কাল বললেন, কোচ হওয়ার ব্যাপারে হাথুরুর সঙ্গে কিছু নির্দিষ্ট হয়নি। ছবি: প্রথম আলো
বিসিবি সভাপতি কাল বললেন, কোচ হওয়ার ব্যাপারে হাথুরুর সঙ্গে কিছু নির্দিষ্ট হয়নি। ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ দলের কোচিং স্টাফে বেশির ভাগ জায়গা এখন শূন্য। বিশেষ করে প্রধান কোচ কে হচ্ছেন, সেটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। বিসিবি সভাপতি কালও জানাতে পারেননি, কে হতে যাচ্ছেন কিংবা কবে নতুন কোচ পাবে বাংলাদেশ

স্টিভ রোডসের বিদায়ের পর হন্যে হয়ে কোচ খুঁজছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। পছন্দ হওয়ার মতো কাউকে এখনো পাওয়া যায়নি। কাজটা যে সহজ নয়, আগে অনেকবার বুঝেছে বিসিবি। এবারও সেটির ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

রোডসকে বিদায় করে দেওয়ার পর ১৮ জুলাই পর্যন্ত প্রধান কোচের পদে আবেদন করার সুযোগ ছিল। কে কে আবেদন করেছেন, কালও সেটি পরিষ্কার করে বলতে পারেনি বিসিবি। ২৭ জুলাইয়ের বোর্ড সভা থেকেও নিশ্চিত কিছু বলার সম্ভাবনা ক্ষীণ। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান কাল ধানমন্ডিতে তাঁর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘২৭ তারিখে নতুন কিছু বলতে পারব কি না নিশ্চিত নই। তবে প্রক্রিয়া চলছে। হেড কোচ, ফাস্ট বোলিং কোচ দেখছি, আবার ফিজিও আছে।’ কোর্টনি ওয়ালশের চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় একজন পেস বোলিং কোচও নেবে বিসিবি। সেটি অনেকটা ঠিকও হয়ে গেছে বলে শোনা যাচ্ছে। সভাপতি আশাবাদী, বোর্ড সভা শেষে বোলিং কোচের নাম ঘোষণা করা সম্ভব হবে।

স্টিভ রোডস বিদায় নেওয়ার পর এখনো নতুন কোচ হিসেবে কাউকে আনতে পারেনি বিসিবি। ছবি: প্রথম আলো
স্টিভ রোডস বিদায় নেওয়ার পর এখনো নতুন কোচ হিসেবে কাউকে আনতে পারেনি বিসিবি। ছবি: প্রথম আলো

বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দীন চৌধুরী জানালেন, যেসব কোচ আবেদন করেছেন বা যাঁদের সঙ্গে বিসিবির আলোচনা চলছে, কৌশলগত কারণে তাঁদের নাম প্রকাশ করতে পারবেন না। নাম প্রকাশ হলে কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়া অনেক সময় নাকি ব্যাহত হয়। কদিন ধরে অনেক কোচের নাম শোনা গেছে ক্রিকেটপাড়ায়। কখনো অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, মিকি আর্থার, কখনো আবার টম মুডির নাম শোনা গেছে। এমনকি গ্যারি কারস্টেনের নামও এসেছে। গতবারও কারস্টেন আলোচনায় ছিলেন। পরে তিনি বিসিবির কোচ নিয়োগে পরামর্শক হন। এবার আর কারস্টেনকে এমন দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি, ‘না, এবার আমরা নিজেরা বসেই সিদ্ধান্ত নেব। হ্যাঁ, অনেকের মতামত নিতে পারি। কিন্তু সিদ্ধান্ত আমরাই নেব।’

বাংলাদেশ দলের সম্ভাব্য কোচের তালিকায় এসেছে বর্তমানে শ্রীলঙ্কা দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের নামও। হাথুরু অবশ্য দুদিন আগে কলম্বোয় এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, তিনি জানেনই না শ্রীলঙ্কায় তাঁর মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে! কাল বিসিবি সভাপতি নাজমুলও হাথুরু-প্রসঙ্গ উড়িয়ে দিলেন, ‘এখন শ্রীলঙ্কায় সিরিজ চলছে। হাথুরুসিংহের সঙ্গে এখন কথা বলা নিষেধ। এটা নিয়ে যে তথ্য এসেছে সেটা ঠিক নয়। এই সিরিজের পর যদি তার বিরতি থাকে আর সে যদি আসতে চায় তাহলে সে কোচ পদে একজন প্রার্থী হবে। ও রকম নির্দিষ্ট কিছু এখনো কারও সঙ্গে হয়নি (কোচ হওয়ার ব্যাপারে)।’

বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাবে যে নানা শর্ত জুড়ে দেন বিদেশি কোচরা, কোচ নিয়োগে প্রতিবার দেরি হয় ঠিক এ কারণে। ২০১৪ কিংবা গত বছর বিসিবি হেঁটেছিল অন্য পথে। বিসিবি চেয়েছিল যিনি বড় কোনো নাম নন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে পরিচিত করবেন বাংলাদেশের সাফল্য দিয়ে, এমন কোচ চায়। বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দাপটে নামীদামি কোচ পাওয়া কঠিন বলে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল বিসিবিকে। এবার কেমন কোচ চাইছে বিসিবি, কাল সেটির কিছু ধারণা দিয়েছেন নাজমুল, ‘প্রথমত, জাতীয় দলে কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, উপমহাদেশের কোনো দলকে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতাও থাকতে হবে। বাকি বিষয়গুলো মোটামুটি সাধারণ বিষয়।’

নতুন কোচ পেতে কত দেরি হতে পারে, সেটিও এখনো পরিষ্কার নয় বিসিবি সভাপতির কাছে, ‘আমরা তো এখনই চাচ্ছি। যত দ্রুত সম্ভব। বিশ্বকাপের পর কজনের চুক্তি এখনো শেষ হয়নি। যারা আটকে আছে, এমন অনেকের সঙ্গে কথা চলছে। ওখান থেকে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে নিজেরা বসেই নির্বাচন করব।’