সেই ভারতের কাছে স্বপ্নভঙ্গের বেদনা

>
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ফাইল ছবি

ঘরের মাঠে গত বছরে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালের মতো, কাল ইংল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালেও ভারতের কাছে হেরে গেছে বাংলাদেশ।

শিরোপা জয়ের স্বপ্নে ছোটা বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল সিরিজে নিজেদের সর্বোচ্চ রানটাই করেছিল। এর আগে সিরিজে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংসটা ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫৬, সাসেক্স কাউন্টি মাঠে ফাইনালে কাল ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ করল ২৬১। আকবর আলী-তানজিদ হোসেনদের এক চোখ হয়তো তখন ছিল শিরোপা মঞ্চে। কিন্তু হলো না। প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের চারজনেরই ফিফটিতে ৬ উইকেট ও ৮ বল হাতে রেখে জিতে গেছে ভারত। বাংলাদেশ আরও একবার রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালেও এই ভারতের কাছেই হেরে স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়তে হয়েছিল বাংলাদেশের যুবাদের।

ভারতকেই ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে পাওয়ার পর অধিনায়ক আকবর আলী সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘লক্ষ্য ছিল ফাইনাল খেলার, এবার শেষ ধাক্কাটা দেওয়ার পালা।’ ‘প্রতিশোধ’ জাতীয় শব্দ খেলার চেতনার সঙ্গে যায় না, তবু একটু জ্বালা জুড়ানোর উপলক্ষ তো ছিলই। তা ছাড়া দেশের বাইরে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ের গৌরবও তো কম নয়। ফর্মও ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। ৮ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের গ্রুপ পর্বে শীর্ষে থেকেই ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সমান ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছে ভারত। ফাইনালের আগে টুর্নামেন্টের সেরা ব্যাটসম্যান ও বোলার—দুই তালিকারই শীর্ষে ছিলেন বাংলাদেশের তৌহিদ হৃদয় (ফাইনালের আগে ৭ ইনিংসে ১ সেঞ্চুরিতে ৩২০ রান) ও তানজিম হাসান (ফাইনালের আগে ৫ ইনিংসে ১২ উইকেট, গড় ২২.০৮, ইকোনমি রেট ৫.৫২)।

চারে নামা তৌহিদ কাল শূন্য রানেই আউট হয়ে গেছেন। ফাইনালের আগে সেরা ব্যাটসম্যানের তালিকার শীর্ষ পাঁচে থাকা আরেকজন ওপেনার তানজিদ হাসানও আউট হয়ে গেছেন ২৬ রান করে। তবে বাংলাদেশের ২৬১ রান তোলার পথে বড় অবদান তিনে নামা মাহমুদুল হাসান জয়ের সেঞ্চুরির। ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হওয়ার আগে ১৩৪ বলে ১০৯ রান করেছেন তিনি, তাতে চার ৯টি, ছক্কা ১টি। আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ৭ চার ৩ ছক্কায় করেছেন ৬০ রান।

ওপেনিং জুটিতেই ৫৮ রান তোলেন তানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মাহমুদুল-পারভেজের জুটি ৬৫ রানের। দলীয় ১২৩ রানে পারভেজ ফিরে যাওয়ার পর ছোট্ট একটা ধস, ২৬ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১ উইকেটে ১২৩ থেকে হয়ে যায় ৫ উইকেটে ১৫৯। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে শামিম হোসেনের (৩২) সঙ্গে ৬৪ রানের জুটি গড়েন মাহমুদুল।

কিন্তু লড়াই করার মতো এই রান নিয়েও শিরোপার দেখা আর পেল না বাংলাদেশ। ভারতের উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ১০৪ রান। এরপর ২২ রানের মধ্যে আরও দুই উইকেট হারালেও চতুর্থ উইকেট জুটিটি আবার হয় ১০৯ রানের। প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের চারজনই পেয়েছেন ফিফটি—দুই ওপেনার ইয়াশাভি জসওয়াল (৫০) ও দিভিয়ানশ সাক্সেনা (৫৫), তিনে নামা প্রিয়াম গার্গ (৬৬ বলে ৭৩) ও পাঁচে নামা ধ্রুব জুরেল (৫৯)। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান ১০ ওভারে ৫৫ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট, ১টি করে উইকেট দুই বাঁহাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী (১০ ওভারে ৪৯ রান দিয়ে) ও শরিফুল ইসলামের (৯ ওভারে ৪২ রান দিয়ে)।