'ভ্যালুলেস' ব্যাটসম্যানের চার-ছক্কার উৎসব

>কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ব্যাটে-বলে দারুণ খেলেছেন ঢাকা প্লাটুনের মেহেদী হাসান। সাধারণত শেষ দিকে ব্যাট করে থাকলেও আজ তিনে নামার ব্যাখ্যা দিলেন এ ক্রিকেটার
ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে ঢাকা প্লাটুনের মেহেদী হাসান। ছবি: বিসিবি
ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে ঢাকা প্লাটুনের মেহেদী হাসান। ছবি: বিসিবি

ঢাকা প্লাটুনের ইনিংসে এনামুল হক আউট হওয়ার পর চমকে যেতেই হলো। তিনে ব্যাট করতে নামলেন জাতীয় দলে স্পিনার হিসেবে একটি টি-টোয়েন্টি খেলা মেহেদী হাসান! এ বিপিএলে ঢাকার আগের চার ম্যাচের মধ্যে মাত্র একবারই তিনে ব্যাট করেছেন ২৫ বছর বয়সী তরুণ। ঢাকায় সে ম্যাচে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে তেমন ভালোও (১৭ বলে ১২ রান) করতে পারেননি। তাহলে আজ সেই কুমিল্লার বিপক্ষেই আবার কেন?
মেহেদী এ ম্যাচে কেমন ব্যাটিং-বোলিং করেছেন খেলা দেখে থাকলে জানা থাকার কথা। তবে সেই একদিন বাদে বাকি তিন ম্যাচে যে ক্রিকেটার লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান, তিনি আজ কেন তিনে, প্রশ্নটির জবাবে মেহেদী রসিকতাই করলেন, ‘আমার উইকেট ছিল ভ্যালুলেস (মূল্যহীন)।’ হাসির রোল উঠল সংবাদ সম্মেলনে।

এরপরই ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যায় চলে গেলেন ঢাকার স্পিন অলরাউন্ডার, ‘মুজিব ছিল তো, মুজিবকে খেলা একটু মুশকিল। আমার উইকেট না ধরে এ জন্য মুজিবকে সামলাতে আমাকে পাঠিয়েছে। আমি অফ স্পিনার পেয়ে গেছি, সুযোগ নিয়েছি আর আমি সফল হয়েছি।’ হ্যাঁ, মেহেদী সফলই। সেটি শুধু ব্যাটে না বল হাতেও। ৭ ছক্কা ও ২ চারে খেলেছেন ২৯ বলে ৫৯ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস। তার আগে বল হাতে ৪ ওভারে ৯ রানে ২ উইকেট নিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন কুমিল্লার ব্যাটসম্যানদের। এমন পারফরম্যান্সের পর বিপিএলে আজ দিনের প্রথম ম্যাচের ম্যাচসেরা কে সে প্রশ্নটা ওঠাই অবান্তর।

ঢাকার তিন ওপেনার তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক ও এনামুল হক খেলেছেন আজকের ম্যাচে। এনামুল উইকেট দেওয়ার পর তামিম ছিলেন অন্য প্রান্তে। আরেকজন বাঁ হাতি নামালে মুজিব সুবিধা পেয়ে যেতে পারেন, এ ভাবনা থেকে মেহেদীকে নামিয়েছে কুমিল্লার টিম ম্যানেজমেন্ট। জুয়াটা কাজে লেগেছে দারুণভাবে। না, মুজিবকে মেহেদী মারতে পারেননি তবে অন্য প্রান্তের অফ স্পিনার রবিউল ইসলামকে পেয়ে পুষিয়ে নিয়েছেন। ৪ ছক্কা ও ১ চারে তাঁর এক ওভারেই তুলেছেন ২৮! রবির আগের ওভারেও মেরেছেন এক ছক্কা ও এক চার। এ ছাড়াও কুমিল্লার পেসার সুমন খানকে কভারের ওপর দিয়ে পার করেছেন চোখ জুড়ানো টাইমিংয়ে।

নিজের ব্যাটিং নিয়ে তাই বলতেই হলো মেহেদীকে, ‘অফ স্পিনার পেয়েছি, সুযোগ নিয়েছি আর সফল হয়েছি।’ কিন্তু মেহেদীর ছোট শরীরে এত স্ট্রোক আসে কীভাবে? ক্রিকেটারটির ব্যাখ্যা, ‘এটা আমার জন্মগতই। খেললে এ রকমই খেলি। ঘরোয়া ম্যাচ দেখেন, আমি খুব পেটাতে পারি, বিপিএল একটু অন্নরকম জায়গা। এ জায়গায় সুযোগ আমি ওভাবে পাই না সত্যি বলতে। দেখবেন, আমি সব সময় একই জায়গায় ব্যাটিং করতে পারি না। কখনো ১০ নম্বর কখনো ৯ নম্বর, শেষের দিক আমার জন্য কঠিন। বোলাররা তখন ইয়র্কার করে, বাউন্সার করে, তখন একটু কঠিন হয়ে যায়। নতুন বলের জন্য আমি ঠিক আছি। পাওয়ার প্লে ব্যবহার করতে পারি, কোচেরও সেই পরিকল্পনাটা ছিল আরকি।’

টি-টোয়েন্টিতে মেহেদী কখনো এত ছক্কা মারেননি, সে কথাও জানালেন, ‘না না। এর আগে টি-টোয়েন্টিতে এতগুলো ছয় কখনো মারিনি। হ্যাঁ, এখন পর্যন্ত এখানেই সবচেয়ে বেশি ছয়।’ সবচেয়ে বেশি কিন্তু শেষ তো নয়!