লুকাকু-লওতারোরা আগে থেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত?

>গত বছরের শেষ থেকেই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। ইন্টার মিলানের বেলজিয়ান স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু সন্দেহ করছেন, তখন থেকেই করোনা বাসা বেঁধেছিল ইতালিতে
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে ইতালির অবস্থাই সবচেয়ে বেশি খারাপ যেন। ইতালীয় সমাজের বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের পাশাপাশি ফুটবলাররাও করোনার হাত থেকে বাঁচতে পারেননি।
জানুয়ারি মাসের ৩১ তারিখে দুজন চীনা পর্যটকের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজে পান রোমের কর্মকর্তারা। কিন্তু ইন্টারের স্ট্রাইকার রোমেলু লুয়াক্কুর কথা মানলে, করোণা দেশটিতে বাসা বেঁধেছিল আরও অনেক আগে।
লুকাকুর মতে, ইন্টারের খেলোয়াড়েরা যখন শীতকালীন ছুটি কাটিয়ে অনুশীলনে ফিরে আসেন, তাঁদের প্রায় সবার শরীরেই করোনাভাইরাসের লক্ষণ ছিল, 'আমরা যখন শীতকালীন ছুটি শেষ করে অনুশীলনে ফিরলাম। ২৫ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে অন্তত ২৩ জন অসুস্থ ছিল। আমি ঠাট্টা করছি না।'
২১ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত শীতের ছুটিতে ছিলেন লুকাকুরা। তখনই সবাই একটা রহস্যময় অসুখে আক্রান্ত হন বলে মনে করে করেন তিনি। তাঁর কিছুদিন পর ব্যাপারটা আরও প্রকট হয়ে ওঠে, 'আমরা সেদিন ক্যালিয়ারির বিপক্ষে (২৬ জানুয়ারি) নিজেদের মাঠে খেলতে নেমেছিলাম, মাত্র ১৭ মিনিট যেতে না যেতেই মিলান স্ক্রিনিয়ার (স্লোভাকিয়ার সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার) কে তুলে নেওয়া হয়। ওর মাথা ঘুরছিল। ঝিমঝিম করছিল। ও খেলা চালিয়ে যেতে পারেনি সেদিন, আরেকটু হলে অজ্ঞানই হয়ে যেত মাঠের মধ্যে।'
লুকাকু নিজেও পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন না, 'সবাই কাশছিল, কফ ফেলছিল। মোটামুটি সবারই জ্বর ছিল। আমার মনে পড়ে, আমিও তা দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম নিজের জন্য। পরে সন্দেহ হলে আমি যখন আমার নিজের শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখলাম, দেখলাম স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। যেখানে আমার পাঁচ বছর ধরে জ্বর হয় না।'
মোটামুটি গোটা স্কোয়াডের খেলোয়াড়দের একজই সমস্যা হলেও ইন্টার মিলান তাঁদের পরীক্ষা করার জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে জানিয়েছেন লুকাকু, 'সে ম্যাচের পর পিউমার (ক্রীড়াসরঞ্জাম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান) কিছু কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাতের খাবার খাওয়ার কথা ছিল। তবে আমি তাঁদের সঙ্গে দেখা না করে সোজা ঘুমোতে চলে যাই। আমরা কোনো ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত কি না, সে পরীক্ষা করা হয়নি। তাই আমরা বুতে পারি না, আমরা কোনো বিশেষ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলাম নাকি না।'
মাসখানেক আগে জুভেন্টাসের ডিফেন্ডার দানিয়েলে রুগানি এক অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডে নাম লিখিয়েছিলেন। ইতালিয়ান লিগে করোনায় আক্রান্ত প্রথম ফুটবলার ছিলেন তিনিই। তাঁর কিছুদিন পর সতীর্থ মাতুইদিও আক্রান্ত হন। যদিও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি ফরাসি মিডফিল্ডারের মধ্যে। জুভেন্টাসে এই দুজন ছাড়াও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন স্ট্রাইকার পাওলো দিবালা। দিবালা আবার একবার সুস্থ হওয়ার পর দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হয়েছেন।
ইতালিতে খেলা ফুটবলারদের মধ্যে আটালান্টা, সাম্পদোরিয়া ও ফিওরেন্টিনার বেশ কিছু ফুটবলারও আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ফিওরেন্টিনার তিন তারকা জার্মান পেজ্জেলা, দুসান ভ্লাহোভিচ ও প্যাট্রিক কুত্রোনে সুস্থ হয়েছেন বলে গত সপ্তাহে জানিয়েছে ক্লাবটি।
লুকাকুর এই বক্তব্য ইতালিতে করোনার অবস্থা সম্পর্কে নতুন করে ভাবিয়ে তুলল যেন!