কুকের বিদায়ের কোরাসে কেপিও

কেভিন পিটারসেন ও অ্যালিস্টার কুক: যখন সতীর্থ ছিলেন l ফাইল ছবি
কেভিন পিটারসেন ও অ্যালিস্টার কুক: যখন সতীর্থ ছিলেন l ফাইল ছবি

সকালে অনুশীলনে পাওয়া চোট আততায়ী না হলে রোজ বোলে আজ টস করবেন অ্যালিস্টার কুকই। ইংল্যান্ডের ক্রিকেট মহলের একটা বড় অংশেরই অবশ্য দৃশ্যটি ভালো লাগবে না। আথারটন-ভন-হুসেইনদের মতো সাবেকেরা তো বটেই, দৃশ্যটি আর দেখতে চান না কুকের সদ্য সাবেক সতীর্থ কেভিন পিটারসেনও। যুক্তি আর সবার মতোই, ব্যাটসম্যান কুককে ফিরে পেতে অধিনায়ক কুকের বিদায় ছাড়া উপায় নেই!

এই ভারতের বিপক্ষেই সর্বশেষ সিরিজে কুক-পিটারসেনের মেলবন্ধনে জিতেছিল ইংল্যান্ড। ব্যাটিং আর অধিনায়কত্ব মিলিয়ে সফল ছিলেন কুক, মুম্বাইয়ের স্পিন-স্বর্গে পিটারসেন খেলেছিলেন আধুনিক ক্রিকেটের সেরা ইনিংসগুলোর একটি (১৮৬)। দেশের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজেও ব্যাট হাতে দারুণ সফল কুক-পিটারসেন। আজ পিটারসেন বিতর্কিতভাবে দলে ব্রাত্য। আর কুক বিতর্কের খোরাক জোগাচ্ছেন দলে থেকে। দল পারছে না ম্যাচের পর ম্যাচ। অধিনায়ক কুকের ভূমিকা আরও প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাট হাতে ভয়াবহ রানখরায়।

কুককে নিয়ে বিতর্কের সেই কোরাসে যোগ দিলেন পিটারসেনও। দ্য টেলিগ্রাফ-এ ​লেখা নিজের কলামে সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়কের অভিমত, ‘ওর ক্যারিয়ারে হয়তো আরও বছর দশেক বাকি আছে, কিন্তু ওর ব্যাটিংয়ে প্রয়োজন জরুরি সহায়তা। ওর উচিত ইংল্যান্ডের টিম ম্যানেজমেন্টের বাইরের কারও সঙ্গে আলাপ করা। নিজের প্রতি সৎ​ হতে হবে ওকে।’

কেমন ‘সৎ​’ হতে হবে, নিজের ক্যারিয়ার দিয়ে সেই উদাহরণ দিয়েছেন পিটারসেন, ‘বাঁহাতি স্পিন নিয়ে সমস্যা ছিল আমার। তখন আমি অন্যদের সাহায্য নিয়েছি। ভারতীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি আমি, স্পিনের বিপক্ষে যারা বিশ্বের সেরা। জিজ্ঞেস করেছি কীভাবে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারি। আইপিএল খেলার সময় অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ছাড়া ফোনে ও ই-মেইলে কোচ ও ক্রিকেটারদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়েছি এটা নিয়ে আলোচনায়।’

কুকের নেতৃত্বে সর্বশেষ ১০ টেস্টের ৭টি হেরেছে ইংল্যান্ড। তাঁর ব্যাটে সেঞ্চুরি নেই ২৭ ইনিংস। সর্বশেষ সেঞ্চুরি ছিল সেই গত বছরের মে মাসে। পিটারসেনের ধারণা, ইংল্যান্ড ম্যানেজমেন্টে অভিজ্ঞতার ঘাটতিও ভোগাচ্ছে কুককে, ‘ওর জন্য সবচেয়ে কঠিন হচ্ছে ট্যাকটিক্যাল সমস্যাগুলোর সমাধান করা। ওর ব্যাটিং আগেও অণুবীক্ষণযন্ত্রের মুখে পড়েছে, কাজেই ও জানে কীভাবে এই পরিস্থিতি সামলাতে হয়। কিন্তু অধিনায়কত্বের ব্যাপারটি আলাদা। বিশেষ করে এখন সে হারিয়ে ফেলেছে তার ডান হাত ম্যাট প্রায়রকে। কুকের চারপাশে এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোকদের প্রয়োজন, পিটার মুরস (কোচ) ও পল ফারব্রেসের (সহকারী কোচ) যা নেই।’

অন্যান্য দলের উদাহরণ দিয়ে পিটারসেন বুঝিয়েছেন সাবেকদের প্রয়োজনীয়তা, ‘শ্রীলঙ্কা দেখুন কত ভালো করছে, ওদের কোচ মারভান আতাপাত্তু। ভারত সহায়তা নিচ্ছে রাহুল দ্রাবিড়ের, অস্ট্রেলিয়া প্রায়ই শেন ওয়ার্নকে ডাকে। ইংল্যান্ড দলে সাম্প্রতিক সময়ে কজন সাবেক ক্রিকেটার কাজ করেছেন? একজনও না! ইংল্যান্ডে ক্রিকেট-মস্তিষ্কের অভাব​ নেই। কিন্তু তাঁদের কাজে লাগানো হচ্ছে না।’

ব্যাটসম্যান কুকের জন্যও পরামর্শ আছে বরাবরের আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান পিটারসেনের, ‘কুক ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি লম্বা, শক্ত-সামর্থ্য ছেলে। ওর উ​চিত ম্যাথু হেইডেনের মতো ব্যাটিং করা। মিডিয়াম পেসাররা সারা দিন ধরে ওকে হাফ ভলি বল করে যাবে এবং আউট করবে, এসব হতে দেওয়া উচিত নয় ওর। ওর মতো শারীরিক আকৃতি, সামর্থ্য আর তীক্ষ্ণ চোখের একজনের উচিত ওইসব হাফ ভলি সারা​ দিন এলে সারা দিনই চার মারা।’ দ্য টেলিগ্রাফ।