'আমি দাবার সঙ্গেই আছি'

>বছর চারেক ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক দাবা থেকে তিনি দূরে। রিফাত বিন সাত্তার সেভ দ্য চিলড্রেনের আঞ্চলিক পরামর্শক হিসেবে এত দিন কর্মরত ছিলেন কম্বোডিয়ায়। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। এত দিনের দাবাহীন জীবন নিয়ে কাল প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বললেন বাংলাদেশের এই গ্র্যান্ডমাস্টার

*দেশে ফিরেছেন কবে?  

রিফাত বিন সাত্তার: ঢাকায় এসেছি মাস খানেক হলো। তবে এখনো ফেডারেশনে যাইনি।

* কম্বোডিয়ায় দাবা খেলতেন না?

রিফাত: ওখানে খেলার সুযোগ ছিল না। মাঝেমধ্যে অনলাইনে দাবা খেলে সময় কাটাতাম। তবে দেশের দাবার সব খবর রাখতাম। দেশে কী হচ্ছে না হচ্ছে সেগুলো জানার চেষ্টা করতাম। সপ্তাহ খানেক হলো বাংলাদেশে ‘রুম টু রিড’ নামের সংগঠনে যোগ দিয়েছি।

* এত দিন দাবা ছেড়ে থাকতে নিশ্চয়ই খারাপ লেগেছে?

রিফাত বিন সাত্তার
রিফাত বিন সাত্তার

রিফাত: একটু খারাপ তো লেগেছেই। এই যে দাবা অলিম্পিয়াডে দল যাচ্ছে, আমি যেতে পারছি না। এ জন্য একটু খারাপ লাগছে। তবে আমি যেহেতু নিজেই সচেতনভাবে অন্য একটা জগৎ বেছে নিয়েছি, সেখানে একটা আত্মতৃপ্তি আছে। না খেললেও সামাজিক উন্নয়নের কাজ করছি।
* আবার কবে দাবার বোর্ডে দেখা যাবে আপনাকে?
রিফাত: সত্যি বলতে, সবাই যেভাবে ভাবছে, আমি দাবা ছেড়ে দিয়েছি—বিষয়টা তেমন না। আমি দাবার সঙ্গেই আছি। মাঝখানে দু-তিন বছর বিরতি নিয়েছিলাম, এই আর কী...। আবারও খেলতে শুরু করব। এমন তো না যে আমি দাবা ছেড়ে দিয়েছি। হয়তো পরের জাতীয় দাবাতেই অংশ নেব। সুযোগ পেলে দেশকে আবার প্রতিনিধিত্ব করব।
*দেশের বাইরে থেকে ফেডারেশন ও দাবাড়ুদের সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
রিফাত: প্রথমেই নতুন কমিটিকে সাধুবাদ জানাব। কারণ গত কয়েক বছর দাবা পেছানোর বড় কারণ ছিল ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের ব্যর্থতা। আমরা না খেলে এর প্রতিবাদও করেছিলাম। আমার ৩৪ বছরে ক্যারিয়ারে মনে হচ্ছে এটা দাবার সেরা কমিটি।

*কেন এমনটা মনে হচ্ছে?

রিফাত: আমার মনে হয়েছে, এ কমিটি দাবাড়ুদের পেছনে বিনিয়োগ করবে। এদের সেই ইচ্ছাও আছে। এর প্রমাণ, কর্মকর্তারা আমাদের পাঁচ গ্র্যান্ডমাস্টারকে কদিন আগে ডেকেছিলেন। ওঁরা আমাদের জন্য কিছু করতে চান। আমাদের কাছে পরামর্শ চেয়েছেন। দাবার উন্নতির জন্য এটা খুব ভালো দিক। এঁদের সাধ ও সাধ্য দুটোই আছে। আগে তো সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় ছিল না।

* নতুন কোনো দাবাড়ু চোখে পড়েছে?

রিফাত: আমার সামনে একজন সম্ভাবনাময় দাবাড়ুকেই দেখছি—ফাহাদ। ওর মধ্যে ভালো সম্ভাবনা আছে। কিন্তু শুধু সম্ভাবনা থাকলেই হবে না, পাশাপাশি এদের ভালো পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। আমরাও যখন উঠে এসেছি, খেলেছি তখন পরিবার থেকে, অন্যদের কাছ থেকে পারিপার্শ্বিক সব সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি। আশা করি, ফেডারেশনের পক্ষ থেকে সেই সহযোগিতা থাকবে।

* আপনার ছেলেমেয়েরা কেউ কি দাবা খেলে?

রিফাত: আমার বড় মেয়ে মারজুকা রিফাত। ওর বয়স সাড়ে ১২ বছর। ছেলে সায়ান আরিফ রিফাত সাড়ে ৭ বছর। ওরা জানে যে বাবা একজন গ্র্যান্ডমাস্টার। কিন্তু ওরা দাবা খেলে না। ওদের এখনো দাবা শেখাইনি। আমার মনে হয়, আমি তত ভালো শিক্ষকও না (হাসি)।