ইউটিউবে টাকা কামানোর ধান্দা

ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করে তা জনপ্রিয় করতে পারলে টাকা কামানো যায়। যে ধরনের ভিডিওতে বেশি দর্শক টানা যাবে, সে রকম ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব চ্যানেলে ছাড়েন অনেকেই। তবে সম্প্রতি ভারতে একটি ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওকে ঘিরে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। একজন নারীকে জনসম্মুখে চুমু দিয়ে পালানোর দৃশ্য ওই ভিডিওতে দেখানো হয়েছে।

ভিডিওতে জনসম্মুখে নিপীড়নের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ওই ব্যক্তিকে আটক করে শাস্তির দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউটিউবে রঙ্গ করে বিভিন্ন ভিডিও প্রকাশ করা ওই চ্যানেলের মালিককে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ইউটিউবে নিজেকে ‘দ্য ক্রেজি সুমিত’ হিসেবে পরিচয় দেন ওই ব্যক্তি। ২১ বছর বয়সী ওই যুবকের প্রকৃত নাম সুমিত কুমার সিং। তাঁর দাবি, ভিডিওতে যে নারীকে দেখা গেছে, তিনি আসলে অভিনেত্রী। এটি শুটিং ছিল বলে কী ঘটবে—তিনি আগে থেকে জানতেন।

সুমিত দাবি করেন, এই ভিডিও তৈরির উদ্দেশ্য ছিল ইউটিউবে বেশি করে দর্শক টানা। এতে বেশি অর্থ আয় হবে তাঁর।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের এক খবরে জানানো হয়, সুমিতের পাশাপাশি ওই ভিডিও যিনি ধারণ করেছিলেন সেই ক্যামেরাম্যানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরে তদন্তের প্রয়োজনে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এখন ওই অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খুঁজছে পুলিশ। তবে ঘটনা যদি সত্যিই রঙ্গ করার জন্য হয়, তবে জনসম্মুখে এ ধরনের ঘটনার জন্য ওই দুজনকে ধরা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

সুমিতের পাশাপাশি তাঁর ক্যামেরাম্যান সত্যজিৎ কাদিয়ানেরও ‘ডিসি প্রাঙ্ক’ নামে ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। ভারতের গুরগাঁওয়ের কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনের শিক্ষার্থী তাঁরা। তাঁদের দাবি, গত মাসে ওই একটি ভিডিও থেকেই ৭০ হাজার রুপির বেশি আয় করেছেন তাঁরা।

পুলিশের ভাষ্য, গত বছর থেকে প্রায় ৩৫টি ভিডিও ওই চ্যানেলে আপলোড করা হয়েছে। অর্থ আয়ের পাশাপাশি ভিডিও জনপ্রিয় করার জন্য গুগলের কাছ থেকে নানা সুবিধাও পাচ্ছেন তাঁরা। নির্দিষ্ট ওই ভিডিওটি দর্শকদের মনে নাড়া দেওয়ার জন্যই তৈরি করেছেন তাঁরা।

অবশ্য, ইউটিউবের কমিউনিটি নীতিমালায় নিপীড়ন, ধিক্কারজনক মন্তব্য, জঘন্য বা অস্বস্তিকর বিবেচিত কনটেন্ট, অবৈধ কার্যক্রম, সহিংস ঘটনা দেখানো নিষিদ্ধ। যে ভিডিও নীতিমালা লঙ্ঘন করবে, তা বন্ধ করার জন্য দর্শকেরা ফ্লাগ বা পতাকা দেখাতে পারবেন। গুগল বিষয়টি পর্যালোচনা করে ওই ভিডিও সরিয়ে নেবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুগলের কাছে কনটেন্ট প্রদর্শন বন্ধ করার জন্য বৈধ অনুরোধও পাঠাতে পারে।

ইউটিউবে দর্শকদের কাছ থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়ে ১ জানুয়ারি আপলোড হওয়া ওই ভিডিওটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।