ভাবিনি ফেসবুক এত বড় হবে - মার্ক জাকারবার্গ

মার্ক জাকারবার্গ
মার্ক জাকারবার্গ

নতুন কিছু করতে হলে সব বাধা পেরিয়ে দ্রুত এগোতে হবে। ফেসবুক পরিচালনায় এই হলো প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গের দর্শন। কিন্তু মাত্র ১৩ বছরে ১৮০ কোটির বেশি মানুষকে যুক্ত করতে শুধু এই দর্শনটুকু যথেষ্ট ছিল না। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ফেসবুক পরিচালনায় তাঁর সেরা পাঁচ কৌশল। ২৪ মে লিংকড-ইনের সহপ্রতিষ্ঠাতা রিড হফম্যানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তা-ই জানালেন মার্ক। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি করবে নতুন কোনো ব্যবসায় উদ্যোগ বা স্টার্টআপ। কিন্তু সেটা  যে ফেসবুক হবে, তা কোনো দিন চিন্তাও করিনি।’

দৃঢ় বিশ্বাস থাকাটা জরুরি

ফেসবুকে যখন প্রথম ‘নিউজ ফিড’ চালু করা হলো, তখন মানুষ তা স্বাগত জানায়নি। অনেকেই এ নিয়ে তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সংবাদকর্মী এবং শিক্ষার্থীরা ফেসবুক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন। কিন্তু মার্ক ও তাঁর দল বিশ্বাস করেছিলেন যে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু নিয়ে কাজ করছেন। আর তাঁদের পথটা সঠিক ছিল। ব্যবহারকারীদের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়তে শুরু করে এবং ফেসবুক ব্যবহারের মধ্যমণিতে পরিণত হয় নিউজ ফিড। বিশ্বাস থাকা এবং সেই বিশ্বাস কেন কাজে লাগবে তা জানা থাকলে প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনায় কখন কান দিতে হবে, তা নির্ধারণ করা সহজ হয়।

অনুমান নয়, পরীক্ষা করুন

ব্যবহারকারীদের সেরা অভিজ্ঞতা দিতে ফেসবুক কখনো অনুমাননির্ভর কিছু করে না, সব সময় পরীক্ষা করে দেখে। ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সম্মতির অপেক্ষা না করে কর্মীদের যদি তাঁদের নতুন ধারণা সম্পর্কে তথ্য পেতে প্রয়োজনীয় টুল দেওয়া হয়, তবে দ্রুত এগোনো সম্ভব বলে মনে করেন মার্ক। তিনি বলেন, ফেসবুকে আমরা সব সময় বলি, নিখুঁত করার চেয়ে কোনো কাজ শেষ করাটা জরুরি।

উদ্ভাবনের কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে

ফেসবুকের মুঠোফোন সংস্করণ চালুর শুরুটা সহজ ছিল না। একই সঙ্গে মুঠোফোন সংস্করণে কাজ করা এবং ডেস্কটপ সংস্করণের জন্য নতুন সুবিধা চালু করতে গিয়ে ফেসবুক দল পুরো ব্যাপারটা গুলিয়ে ফেলে। সে সময় খুব কঠিন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা। মার্ক বলেন, ‘তা হলো পরবর্তী দুই বছরের জন্য নতুন কোনো সুবিধা না!’ তখন সহজ এক অ্যাপ বানানোয় মনোযোগ দিয়েছিল পুরো দল।

দীর্ঘ মেয়াদের জন্য দল

ফেসবুক ব্যবস্থাপনা পর্ষদের বেশির ভাগ সদস্য বর্তমান পদে পৌঁছেছেন দীর্ঘদিন কাজ করার পর। মার্ক বলেন, এর সুবিধা হলো যাঁরা দীর্ঘদিন একসঙ্গে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন, তাঁরা জানেন কীভাবে কাজটি করতে হয়, তাঁদের মধ্যে আস্থা আছে। অভ্যন্তরীণ নিয়োগের আরেকটি সুবিধা হলো দীর্ঘ মেয়াদে প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি নির্ধারণ করা যায়। মার্ক বলেন, তা ছাড়া এতে সব কর্মীর জন্য একটি সংকেত থাকে যে যদি কাজটা ভালোভাবে করেন তবে তাঁরাও প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানে পৌঁছাতে পারবেন।

আপনার চেয়ে ভালো কর্মী নিয়োগ করুন

জাকারবার্গ বলেন, কর্মী নিয়োগের ব্যাপারটা যদি উল্টো হতো তবে কি আপনি তাঁর হয়ে কাজ করতেন? এমন কাউকে নিয়োগ দেবেন না যাঁর হয়ে আপনি নিজে কাজ করবেন না। উদাহরণ হিসেবে মার্ক বলেন, ‘এমন অনেক কিছু আছে যে বিষয়ে শেরিল স্যান্ডবার্গ আমার চেয়ে বেশি পটীয়সী। তাঁর সেই দক্ষতা আমার জন্য ভালো, ফেসবুকের জন্য ভালো।’

মেহেদী হাসান, সূত্র: এন্ট্রাপ্রেনিউর ম্যাগাজিন