ব্লু হোয়েল নিয়ে যা ভাবছেন পাঠকেরা

সম্প্রতি অনলাইন গেম ব্লু হোয়েল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গেমটি থেকে অন্যকে বিরত রাখতে অনেকেই তাদের বন্ধুদের ইনবক্সে একটি বার্তা কপি-পেস্ট করে ছড়াচ্ছেন। অনেকেই হাসি ঠাট্টার ছলে গেমটি খেলে দেখার চ্যালেঞ্জও জানাচ্ছেন। এ বিষয়ে পাঠকের মতামত জানতে চেয়ে আজ দুপুরে প্রথম আলো ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করা হয়।

পোস্টটির নিচে করা পাঠকের মন্তব্যগুলো বিশ্লেষণ করলে বোঝ যায়, বেশির ভাগ পাঠকই মনে করেন যে গেমটি নিয়ে এত হইচইয়ের কিছু নেই। গেমটি আমাদের দেশের জন্য সহজলভ্য নয়। তবে সতর্ক থাকা ভালো।

পথিক সাদ্দামের মতে, ব্লু হোয়েলের কোনো অস্তিত্ব বাংলাদেশের নেটওয়ার্কে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশে কয়েকজনের মৃত্যুতে গুঞ্জন উঠেছে তারা নাকি ব্লু হোয়েল গেমার ছিল! সর্বশেষ ধাপ খেলতে গিয়ে আত্মহত্যা করছে! আসলে ব্লু হোয়েলের অস্তিত্বকে আমি অস্বীকার করছি না, তবে বাংলাদেশে এর প্রভাব এখনো পড়েনি।’

আমিনুল ইসলাম জাহিদ, ইমতিয়াজ সুলতান, মামুন মিন্নাত, ফরহাদ হোসেইন রনি ইনবক্স বা পোস্টে সতর্ক ম্যাসেজ দেওয়ার ব্যাপারটিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, অতি উৎসাহী তরুণেরা এসব বার্তা দেখে সতর্ক তো হচ্ছেই না, উপরন্তু ‘দেখি খেলে কী হয়’ মানসিকতা নিয়ে গেমটির ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

সামসুল হক শুভ লিখেছেন, গেমটি খেলতে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হয় যা সাধারণ কিশোর-কিশোরীদের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব না। বাংলাদেশে কেউ গেমটি খেলে আত্মহত্যা করেছে—বিষয়টিকে গুজব হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন মোহাম্মদ উজ্জ্বল, শাহাদাৎ হোসেইন, আজিজুল হক মল্লিক, সাব্বির খান, জিতু বিশ্বাস জয়সহ বেশ কয়েকজন পাঠক। তাদের মত, গেমটা খেলতে যেহেতু ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করতে হয় আর গেমটির অস্তিত্ব বাংলাদেশে নেই, সেহেতু এ বিষয় নিয়ে লেখালেখির কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।

রিয়াদ হাসান শরিফ, মো. বাহারুল ইসলাম, মোহাম্মদ মিরাজ, শাকিরা মজুমদারের মতে, গেমটি নিয়ে মেতে থাকাই প্রমাণ করে বাঙালি হুজুগে। যারা গেমটির ভয়াবহতা জেনেও গেমটি খেলতে চায়, তাদের মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে মনে করেন মোহাম্মদ শাহিনুর ইসলাম, দালিয়া রাহাত ও সুমি।

আবদুল্লাহ অনিক বেশ মজা করে বলেছেন, ‘অলস বাঙালি ছেলেপেলেরা ব্লু হোয়েলের ৫০টি ধাপ শেষ করে আত্মহত্যা করবে—এটা আমার বিশ্বাস হয় না। বছরে এরা ৫০টি কাজ করে কিনা সন্দেহ আছে (দৈনন্দিন কাজ ছাড়া)।’ তবে সামিদ আল হোসেইন এ বিষয়ে জনসচেতনতার পক্ষে।

ইসমাইল রাজু লিখেছেন, ‘যারা মজা করে এবং সচেতন হওয়ার জন্য মেসেজ বা পোস্ট করছে তাদের ৯৯% লোকের এই গেম সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। তারা অন্যেরটা দেখে শুধু কপি-পেস্ট আর ফরোয়ার্ড করে।’ আরিয়ান হাজং লিখেছেন, ‘এ গেম নিয়ে যারা লেখালেখিতে আর প্রচারের কাজে সময় ব্যয় করছে তারাই মূলত এ গেমটির প্রতি আসক্ত হয়ে গেছে বলতে পারেন।’ আর সনেট দেবের মত, ‘সতর্কতার আড়ালে বাড়ছে প্রচারণা, যেটা মোটেই কাম্য নয়।’