সাংবাদিক ছাড়াই সংবাদ

কাতসুহিরো ইয়োনেশি
কাতসুহিরো ইয়োনেশি

জাপানের টোকিওর এক সংবাদমাধ্যমের বার্তাকক্ষ। তবে তাতে কোনো প্রতিবেদক বা সংবাদদাতা নেই। সেখানে সংবাদ লেখা হয় প্রযুক্তির সাহায্যে। কাজটি করে দেখিয়েছেন জাপানি তরুণ উদ্যোক্তা কাতসুহিরো ইয়োনেশি। প্রতিষ্ঠা করেছেন সংবাদ-প্রযুক্তিভিত্তিক নতুন ব্যবসায় উদ্যোগ (স্টার্টআপ) জেএক্স প্রেস করপোরেশন।

২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও জেএক্স প্রেস নজর কাড়ে গত বছর। ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ার এক বিমানবন্দরে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের সৎভাই কিম জং-নামকে হত্যা করা হয়। মার্কিন সরকার বলেছিল, এটি গুপ্তহত্যা। এদিকে উত্তর কোরিয়া আর মালয়েশিয়া জড়িয়ে পড়ে কূটনৈতিক লড়াইয়ে। ফলে ঘটনাটি গোটা বিশ্বেই গুরুত্ব পায়। আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। আর সেখানেই কেরামতি দেখিয়েছে কাতসুহিরোর প্রতিষ্ঠান।

জাপানের বড় সংবাদমাধ্যমগুলোর চেয়েও প্রায় আধ ঘণ্টা আগে জেএক্স প্রেস হত্যাকাণ্ডের সংবাদটি প্রচার করেছিল। তাতে দুটি প্রশ্ন দেখা দেয়। শত শত প্রতিবেদক নিয়েও অন্যান্য সংবাদমাধ্যম চটজলদি খবরটি প্রকাশ করতে পারেনি কেন? আর সরাসরি সংবাদের মানুষ না হয়েও কাতসুহিরো কীভাবে কোনো প্রতিবেদক ছাড়াই কাজটি সবার আগে করলেন?

কাতসুহিরো তাঁর সংবাদ-প্রযুক্তিভিত্তিক স্টার্টআপ দাঁড় করান ২০০৮ সালে। মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ভর করে মেশিন লার্নিংয়ের সাহায্যে ‘নিউজ ডাইজেস্ট’ নামে তিনি একটি সফটওয়্যার তৈরি করেন, যা ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর পোস্ট বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় তথ্য বাছাই করতে এবং তা দ্রুত সংবাদ আকারে লিখেও ফেলতে পারে। তবে এভাবে তৈরি সংবাদে ভুল থাকার আশঙ্কাও আছে। সে ভুলগুলো ক্ষতিয়ে দেখেন বিভাগীয় সম্পাদক।

বর্তমানে টোকিওভিত্তিক স্টার্টআপটি ২৪ জন তরুণ কর্মী নিয়ে চলছে। তাঁদের দুই-তৃতীয়াংশই প্রকৌশলী, বাকিরা সংবাদ বিপণন কর্মকর্তা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে নির্দিষ্ট অর্থের মাধ্যমে সংবাদ কেনে এবং বিনা মূল্যের অ্যাপ নিউজডাইজেস্টের মাধ্যমে প্রচার করে। আর জাপানে তা ভালোই চলছে।
মারিফুল হাসান, সূত্র: ব্লুমবার্গ