ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে মাইক্রোসফট কর্মীদের খোলা চিঠি

ট্রাম্প প্রশাসন পরিবার-বিচ্ছিন্ন করার যে আইন কঠোরভাবে প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এর মধ্যে তা বিভিন্ন মহলের কঠোর সমালোচনার শিকার হয়েছে। সে তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছেন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের কর্মীরাও। 

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির ১০০ জনের বেশি কর্মী তাঁদের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলার বরাবর একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। ওই চিঠিতে তাঁরা মাইক্রোসফটকে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশনস অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) সঙ্গে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। আইসিইর সঙ্গে চুক্তি বাতিলসহ যাঁরা ট্রাম্পের ওই নীতি সমর্থন করেন, তাঁদের সঙ্গেও কাজ না করার অনুরোধ জানান।

ওই চিঠিতে মাইক্রোসফট কর্মীরা বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, মাইক্রোসফট নৈতিক অবস্থান নেবে এবং লাভের চেয়ে পরিবার ও শিশুদের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবে।’

চিঠিতে মাইক্রোসফটকে একটি পরিষ্কার নীতিমালার খসড়া করতে বলা হয়, যাতে মাইক্রোসফট বা এর সঙ্গে থাকা কেউ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনকারীর সঙ্গে কাজ করতে পারবে না।

চিঠিতে বলা হয়, আইসিইর সঙ্গে মাইক্রোসফটের ১ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলারের চুক্তি আছে। আইসিই মাইক্রোসফটের ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা ব্যবহার করে ডেটা প্রসেস ও মেশিন লার্নিং কাজ চালায়।

হোয়াইট হাউসের ‘কোনো ছাড় না দেওয়া’র অবস্থানে অনিবন্ধিত মা-বাবা থেকে শিশুর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ঘটনায় এখন সমালোচনার মুখে পড়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে যে বিতর্কিত এই নীতি রাজনৈতিকভাবে কতটা টেকসই হবে? ট্রাম্পের নিষ্ঠুর নীতিমালার বিরুদ্ধে মাইক্রোসফট এক বিবৃতিতে বলেছে, সীমান্তে পরিবারের সঙ্গে জোর করে শিশুদের পৃথক করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, সীমান্তে পরিবারের কাছ থেকে শিশুদের আলাদা করে ফেলার কোনো প্রকল্পের সঙ্গে মাইক্রোসফট যুক্ত ছিল না। এ ধরনের কোনো কাজে আইসিইকে তারা সাহায্য করেনি। মাইক্রোসফটের ক্লাউড সেবা এ খাতে ব্যবহৃত হয়নি।

মাইক্রোসফটের কর্মীরা মাইক্রোসফটের এ বিবৃতিতে সন্তুষ্ট নন। তাঁরা আইসিইর সঙ্গে চুক্তি বাতিল চান। চিঠিতে বলা হয়, যে মানুষদের জন্য প্রযুক্তি তৈরি করে মাইক্রোসফট মুনাফা করে, তাদের জন্য ক্ষতিকর কিছু করা ঠিক নয়।

ট্রাম্পের নিষ্ঠুর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অ্যাপল, ফেসবুক, ইউটিউব, উবারের প্রধান নির্বাহীরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের ও সিদ্ধান্তকে ‘বিবেকবিরুদ্ধ’ হিসেবে ঘোষণা দেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার। এরপর ট্রাম্প প্রশাসন জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বেরিয়ে গেছে।