চীনে অফিস খোলার পরিকল্পনা করছে ফেসবুক

মার্ক জাকারবার্গ
মার্ক জাকারবার্গ

একবার ভাবুন তো চীনের ১৪১ কোটির বেশি মানুষের কথা। ফেসবুক ২০০ কোটির বেশি মানুষকে তাদের প্ল্যাটফর্মে আনতে পেরেছে। কিন্তু চীনের বিশাল জনগোষ্ঠী বাইরে থেকে গেছে। দেশটিতে ফেসবুক বন্ধ। সব মানুষকে তাদের প্ল্যাটফর্মে আনতে ফেসবুকের যে পরিকল্পনা, তা এই দেশের জন্যই অনেকটা আটকে আছে। ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ নানাভাবে চীনে ঢোকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সফল হননি।

জাকারবার্গ মান্দারিন ভাষা শিখেছেন। তিয়েনআনমেন স্কয়ারের দৌড়েছেন। চীনা মেয়ে বিয়ে করেছেন। লাভের লাভ হয়নি কিছুই। এবারে ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে চীনে ঢুকতে যাচ্ছেন জাকারবার্গ। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনে একটি অফিস খুলতে চাইছেন জাকারবার্গ। এ জন্য লাইসেন্স বা অনুমতি পেয়েছেন। আকর্ষণীয় চীনা বাজারে ফেসবুকের ঢোকার পরিকল্পনার প্রাথমিক ধাপ মনে করা হচ্ছে একে।

ফেসবুক বলছে, তারা চীনে যে অফিস করবে, তা হবে ‘ইনোভেশন হাব’ বা উদ্ভাবনী সূতিকাগার। এখান থেকে চীনা ডেভেলপার, উদ্ভাবক ও স্টার্টআপগুলোকে সহায়তা করা হবে। এভাবেই চীনের উদ্যোক্তাদের আকর্ষণ করে চীনে ঢুকতে চাইছে ফেসবুক। ফেসবুকের ওই অফিস যদি চীন সরকার অনুমোদন দেয়, তবে তা হবে দেশটিতে ফেসবুকের আনুষ্ঠানিক উপস্থিতি।

নিউইয়র্ক টাইমস অবশ্য বলছে, চীনা সরকারি ওয়েবসাইট থেকে সম্ভাব্য জটিলতার কারণ দেখিয়ে ফেসবুকের অফিস নিবন্ধনের তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

বিশ্বের বৃহত্তম সোশ্যাল মিডিয়ার বাজার বলা হয় চীনকে। তবে টুইটার, ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় সেবাগুলো সেখানে বন্ধ। এর পরিবর্তে ব্যবহারকারীরা চীনের স্থানীয় সামাজিক যোগাযোগের সাইট ওয়েবু, রেনরেন, ইয়কু ব্যবহার করতে পারেন। এগুলোতে সরকার নজরদারি করতে পারে।

বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, কয়েকবার চীনের বাজারে ঢোকার চেষ্টা চালিয়েছেন ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। চীনা কর্মকর্তাদের মনোযোগ কাড়তে সে দেশের ভাষাও শিখেছেন।

চীনের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে অফিস নিবন্ধনের তথ্য সরিয়ে ফেলার আগে দেখা যায়, চীনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর হ্যাংঝোতে ফেসবুকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের নামে অফিস নেওয়া হয়। এতে তিন কোটি ডলার বিনিয়োগের কথা বলা হয়।

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট রিকোডকে মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, ‘চীনে দীর্ঘদিন ধরেই যেকোনো কিছু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

২০০৯ সাল থেকে দেশটিতে ফেসবুক বন্ধ। সেখানে একটি উদ্ভাবনী পরীক্ষাগার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফেসবুক। আইন মেনে এটি সম্ভব হলে সেখানে ব্যবসা করার সুযোগ তৈরি হবে।

ফেসবুক বলছে, ইতিমধ্যে ফ্রান্স, ব্রাজিল, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ায় তারা ইনোভেশন হাব করেছে। চীনেও একই রকম হাব করতে চায় তারা। এখানে প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কশপ করা হবে এবং ডেভেলপার ও উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করা হবে।