বলুন তো সংখ্যাটি কত?

গণিতের কিছু সমস্যা বেশ ধাঁধা লাগিয়ে দেয়। যেমন ধরুন, দুই অঙ্কের (ডিজিট) এমন একটি সংখ্যা লিখতে হবে, যার অঙ্ক দুটির যোগফল ৮ এবং সংখ্যাটি থেকে ৩৬ বিয়োগ করলে মূল সংখ্যার অঙ্ক দুটি উল্টে যাবে। মানে, অঙ্ক দুটি স্থান পরিবর্তন করবে। সমস্যাটি সহজে সমাধান করার উপায় হলো, প্রথমে দেখা অঙ্কগুলো কী হতে পারে। ওগুলো হতে পারে, ৭১, ৬২, ৫৩ বা ৪৪ এবং এর প্রথম তিনটি সংখ্যাকে উল্টিয়ে লেখা আরও তিনটি সংখ্যা, অর্থাৎ ১৭, ২৬ ও ৩৫। এদের প্রতিটির অঙ্কগুলোর যোগফল ৮। এখন একটু চোখ বুলিয়েই বলে দেওয়া যায় যে আমাদের শর্ত পূরণ করে ৬২ সংখ্যাটি। কারণ, (৬২-৩৬) = ২৬, যার অঙ্ক দুটি ৬২-এর ঠিক উল্টো অবস্থানে রয়েছে।

একটু কঠিন হলেও গণিতের সহজ নিয়মেও এর উত্তর বের করা যায়। যেমন, প্রথমে মনে করি সংখ্যাটি কখ, যেখানে ক ও খ প্রতিটিই একটি করে অঙ্ক (ডিজিট)। এর এককের ঘরে রয়েছে খ ও দশকের ঘরে ক। এর মান (১০ক + খ)। এখন এই সংখ্যা থেকে ৩৬ বাদ দিলে হবে (১০ক + খ - ৩৬)। শর্ত অনুযায়ী, (১০ক + খ - ৩৬) = খক = (১০খ + ক)। এবার এই সমীকরণ থেকে আমরা পাই, (৯ক - ৯খ) = ৩৬, বা (ক-খ) = ৪। আবার অপর শর্ত অনুযায়ী (ক + খ) = ৮। সুতরাং, আমরা দুটি অজানা রাশি ক ও খ-এর জন্য দুটি সমীকরণ পাচ্ছি। এই সমীকরণ দুটি থেকে আমরা পাই, ক = ৬ ও খ = ২। অর্থাৎ, সংখ্যাটি ৬২।

এ রকম আরেকটি সহজ ধাঁধা দেখুন। ৩, ৯, ২৭, ?। মানে চতুর্থ সংখ্যাটি কী? খুব সহজ। প্রথমে সিরিজটি লক্ষ্য করুন। এর প্রতিটি রাশি পূর্ববর্তী রাশির তিন গুণ। সুতরাং চতুর্থ রাশিটি হবে (২৭ * ৩) = ৮১।

আজকের প্রশ্ন
প্রশ্নটা একটু কঠিন মনে হতে পারে, আসলে সহজ। ১০০-এর চেয়ে বড়—এমন একটি ক্ষুদ্রতম সংখ্যা বের করুন, যেটা নিজে মৌলিক সংখ্যা (প্রাইম নম্বর) নয়, কিন্তু ২ থেকে ১০০ পর্যন্ত কোনো সংখ্যা দিয়েই নিঃশেষে বিভাজ্য নয়।

আপনার উত্তর অনলাইনে মন্তব্য আকারে অথবা আমার ই-মেইলে পাঠাতে পারেন।

গত রোববারের প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্নটি ছিল: কোন সংখ্যাকে ২, ৩ ও ৪ দিয়ে ভাগ করলে যথাক্রমে ১, ২ ও ৩ অবশিষ্ট থাকবে?

প্রায় সবাই সঠিক উত্তর দিয়েছেন। সবাইকে ধন্যবাদ। বিভিন্নভাবে এর উত্তর দেওয়া যায়। তবে সহজে উত্তর বের করার কৌশল হলো, প্রথমে হিসাব করে বের করা যে, কোন সংখ্যাগুলোকে ২ ও ৩ দিয়ে ভাগ করলে যথাক্রমে ১ ও ২ অবশিষ্ট থাকে। এরপর আমরা দেখব ওই সংখ্যাগুলোর মধ্যে অভিন্ন (কমন) সংখ্যাগুলো কী। ওগুলো বেছে আলাদা করব। এরপর দেখব, ওই সংখ্যাগুলোর মধ্যে কোনটিকে ৪ দিয়ে ভাগ করলে ৩ অবশিষ্ট থাকে।

আমরা দেখছি ৩, ৫, ৭, ৯, ১১, ১৩, ১৫, ১৭, ২৩...সংখ্যাগুলোকে ২ দিয়ে ভাগ করলে প্রতিটি ক্ষেত্রে ১ অবশিষ্ট থাকে, এবং ৫, ৮, ১১, ১৪, ১৭, ২০, ২৩...সংখ্যাগুলোকে ৩ দিয়ে ভাগ করলে প্রতিটি ক্ষেত্রে ২ অবশিষ্ট থাকে। এখন এই দুই সারি সংখ্যার মধ্যে অভিন্ন সংখ্যাগুলো হলো ৫, ১১, ১৭, ২৩ প্রভৃতি। এটি একটি গাণিতিক সিরিজ, যার প্রতিটি রাশি পূর্ববর্তী রাশির চেয়ে ৬ বেশি। সুতরাং অভিন্ন সংখ্যাগুলোর ধারা আমরা জেনে গেলাম। এখন দেখা যাক, এই সংখ্যাগুলোকে ৪ দিয়ে ভাগ করলে কী হয়। প্রথমে দেখছি ৫-কে ৪ দিয়ে ভাগ করলে অবশিষ্ট থাকে ১। কিন্তু আমরা চাই ৩। তাই এটা হবে না। ১১-কে ৪ দিয়ে ভাগ করলে অবশিষ্ট থাকে ৩, আমরা যেটা চাই। সুতরাং এটাই উত্তর। ১১ হলো সেই সংখ্যা, যাকে ২, ৩ ও ৪ দিয়ে ভাগ করলে অবশিষ্ট থাকবে যথাক্রমে ১, ২ ও ৩। এ রকম সংখ্যা আরও আছে, যেমন ২৩, তবে ওদের মধ্যে ক্ষুদ্রতম হলো ১১।

আব্দুল কাইয়ুম: সম্পাদক, বিজ্ঞানচিন্তা
quayum@gmail. com