বলুন তো ন্যূনতম কত সময় লাগবে?

ছোটবেলায় ঘড়ির সময় নিয়ে বন্ধুদের ধাঁধা ধরতাম। তখন তো আমাদের হাতঘড়ি বেশি ছিল না। স্কুলে পড়ার সময় আমাদের কেউই হাতঘড়ি পরতাম না। আর মোবাইলের তো প্রশ্নই নেই। আমরা বলধা গার্ডেনে দল বেঁধে যেতাম। সে প্রায় ৫০-৬০ বছর আগের কথা। ঢাকার ওয়ারীতে বলধা গার্ডেনে ছিল একটা সূর্যঘড়ি। একটা অর্ধবৃত্তাকার সিমেন্টের স্থাপনা, পশ্চিম থেকে পুবে ঢালু হয়ে আবার উঁচু। সেখানে সকাল প্রায় ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত দাগ কেটে সময় লেখা আছে। মাঝ বরাবর একটি লোহার রড। সূর্য পূর্ব দিকে উঠে পশ্চিমে যেতে থাকলে সেই রডের ছায়া ক্রমে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় নির্দেশ করত। সূর্য পূর্ব থেকে পশ্চিমে যায় আর রডের ছায়া পশ্চিম থেকে পূর্বে যায়। সেই ছায়া দেখে বলে দেওয়া যায় কয়টা বাজে। সূর্যঘড়ির ঢালটি দক্ষিণমুখী। কারণ, না হলে সেখানে সূর্যের ছায়া পড়ত না। বন্ধুদের জিজ্ঞেস করতাম, বল তো কয়টা বাজে? যারা সূর্যঘড়ি চিনত না, ওরা বলতে পারত না। আমরা বাঁকা চোখে সূর্যঘড়ির দাগ দেখে সময় বলে দিতাম। সবাই অবাক হয়ে যেত। এখনো সেই সূর্য ঘড়ি আছে, কিন্তু রোদ আসে না। চারপাশে উঁচু আকাশছোঁয়া ভবনের আড়ালে সূর্য ঢাকা পড়ে গেছে।

কথাগুলো বললাম এ জন্য যে এখানে একটা মজার ব্যাপার আছে। আপনি সূর্যঘড়ি বরাবর দাঁড়ালে দেখবেন সময়–নির্দেশক ছায়াটি বাঁ থেকে ডানে যাচ্ছে। এর কারণ হলো আমরা পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে। তাই সূর্য থাকে দক্ষিণে। এ জন্যই পরে ইংল্যান্ডে আবিষ্কৃত কাঁটাযুক্ত ঘড়ির সময়–নির্দেশক কাঁটা বাঁ থেকে ডানে ঘোরার ব্যবস্থাই স্বাভাবিকভাবে গৃহীত হয়। সব ঘড়ির কাঁটা ডান দিকে ঘোরে। একে বলি ক্লকওয়াইজ ডিরেকশন।

ঘড়ি যদি অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম আবিষ্কার হতো, তাহলে হয়তো কাঁটা ঘুরত উল্টো দিকে, ডান থেকে বাঁয়ে! কারণ, অস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ গোলার্ধে। সেখানে সূর্যঘড়ির ছায়া ডান দিক থেকে বাঁ দিকে ঘোরে। এখন ডিজিটাল ঘড়ি এসে গেছে। এ সপ্তাহে ডিজিটাল ঘড়ি নিয়ে একটি সমস্যা দিচ্ছি।

এ সপ্তাহের ধাঁধা
ডিজিটাল হাতঘড়িতে এখন সময় দেখাচ্ছে 10: 01 (সকাল ১০টা ১ মিনিট)। মজার ব্যাপার হলো ঘড়িটি আয়নার সামনে ধরে দেখি সেখানেও একই সময় দেখাচ্ছে, অর্থাৎ 10: 01, অথচ আয়নায় তো উল্টো দেখানোর কথা। এখন বলুন তো ন্যূনতম কত সময় পর ডিজিটাল ঘড়িতে এ ধরনেরই এমন একটি সময় দেখাবে, যা আয়নার সামনে ধরলেও একই থাকবে, উল্টো দেখাবে না? এবং তখন ডিজিটাল ঘড়িতে সময় কত?
খুব সহজ। কাগজ-কলমেরও দরকার নেই, শুধু মনে মনে চিন্তা করেই বলে দিতে পারেন। এক নিমেষে সমাধান বের করুন। অনলাইনে মন্তব্য আকারে অথবা [email protected] ই-মেইলে উত্তর পাঠিয়ে দিন। সঠিক উত্তর জানার জন্য দেখুন আগামী রোববার অনলাইনে।

গত সপ্তাহের ধাঁধার উত্তর
ধাঁধাটি ছিল এ রকম: বলুন তো (৩)১৭ কে ২৬ দিয়ে ভাগ করলে কত অবশিষ্ট থাকবে?

উত্তর
অবশিষ্ট থাকবে ৯
ধাঁধাটি সম্ভবত একটু কঠিন ছিল। তাই সঠিক উত্তর খুব কমই এসেছে। যাঁরা উত্তর দিয়েছেন বা চেষ্টা করেছেন, তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ।


কীভাবে উত্তর বের করলাম
প্রথমে হিসাব করে দেখলাম (৩) = ২৭ = (২৬ + ১)। ২৭–কে ২৬ দিয়ে ভাগ করলে অবশিষ্ট থাকবে ১। মনে করি ‘ক’ একটি ধনাত্মক স্বাভাবিক সংখ্যা। এখন ক-এর মান যা-ই হোক না কেন, (৩) সংখ্যাটিকে ২৬ দিয়ে ভাগ করলে ১ অবশিষ্ট থাকবে। সুতরাং আমরা লিখতে পারি (৩)১৭ = (৩) × (৩) = (৩)১৫ × (৩) = (৩)১৫ × ৯। এই সংখ্যাকে ২৬ দিয়ে ভাগ করলে অবশিষ্ট থাকবে = ৯।