মানুষের বুদ্ধিমত্তার সমকক্ষ হয়ে উঠবে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স

কৃত্রিম বুদ্ধিমান রোবট সোফিয়া। ছবি: এএফপি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমান রোবট সোফিয়া। ছবি: এএফপি।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৫০ বছরেরও কম সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমান যন্ত্র মানুষের সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারবে। বিশেষজ্ঞেরা ধারণা করছেন, ২০৬২ সাল নাগাদ অভিযোজন যোগ্যতা, সৃজনশীলতা ও মানসিক বুদ্ধিমত্তার বৈশিষ্ট্যে মানুষের সমকক্ষ হবে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বা এআই।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেস্টিভ্যাল অব ডেঞ্জারাস আইডিয়াস অনুষ্ঠানে অধ্যাপক টবি ওয়ালস পূর্বাভাস দেন, ২০৬২ সাল নাগাদ মানুষের বুদ্ধিমত্তার সমান হয়ে যাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। বাস্তবের পথে চলে আসবে কৃত্রিমতা।

গবেষক ওয়ালসের বরাতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওয়ালস মনে করেন, বুদ্ধিমত্তায় মানুষের সমপর্যায়ে আসতে ২০৬২ সালের কথা বলা হলেও ইতিমধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগতে মৌলিক স্থানান্তর ঘটে গেছে।

ওয়ালস যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘এখনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনেক দূরের বিষয় হলেও আমরা ইতিমধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ঝুঁকি প্রত্যক্ষ করছি। এখনো স্মার্ট বা উন্নত যন্ত্রের উদ্ভাবন ছাড়াই আমি এর ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং আমাদের এ ক্ষেত্রে পছন্দের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে।’

ওয়ালস ‘২০৬২: দ্য ওয়ার্ল্ড দ্যাট এআই মেড’ নামে একটি বই লিখেছেন।

ওয়ালসের মতে, ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হাতে ধ্বংস ঠেকাতে আমাদের নতুন যুগের তথ্য কীভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব, সেটা বিবেচনা গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রতি ফেসবুক থেকে ফাঁস হওয়া তথ্য কেলেঙ্কারি কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার উদাহরণ দিয়ে ওয়ালস বলেন, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য কীভাবে কাজে লাগাচ্ছে, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকে যায়।

গত মার্চে ফেসবুক থেকে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার বিরুদ্ধে, যা ফেসবুক কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি হিসেবে পরিচিতি পায় এবং ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুক। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ওই কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৮ কোটি ৭০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হয়। এ ঘটনায় ফেসবুকের প্রাইভেসি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আইএএনএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ একেবারে নতুন কিছু নয়।

গবেষক ওয়ালস বলেন, ‘আমাদের অনেকের স্মার্টওয়াচ বা স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন বিষয় পরিমাপের যন্ত্র রয়েছে। আমাদের রক্তচাপ, হৃৎস্পন্দন বা শরীরের নানা সংকেত এসব যন্ত্রে ধরা পড়ছে। কিন্তু এসব যন্ত্র নির্মাতা বা সেবাদাতাদের নীতিমালা পড়লে দেখবেন, এসব তথ্যের মালিকানা কিন্তু ব্যবহারকারীর হাতে থাকছে না। আপনার ডিজিটাল পছন্দ-অপছন্দের কথা নিয়ে মিথ্যা বলতে পারেন। কিন্তু আপনার হৃৎস্পন্দন নিয়ে তো তথ্য লুকাতে পারবেন না। তাই যন্ত্র ব্যবহারের নীতিগত জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’