ঘণ্টায় চলবে ৭০০ মাইল বেগে

হাইপারলুপের পথ হবে এমন
হাইপারলুপের পথ হবে এমন

পরিবহন খাতে সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য উদ্ভাবন হলো বিমান। সেই ১১৫ বছর আগের। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হচ্ছে হাইপারলুপ। যদি সফল হয়, তবে তা হয়তো ভ্রমণে একুশ শতকের সবচেয়ে বড় উদ্ভাবন বলে বিবেচিত হবে।

রকেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক প্রথম হাইপারলুপের ধারণা দেন। এ পদ্ধতিতে যাতায়াত করতে হবে প্রায় বায়ুশূন্য টিউবের মধ্যে দিয়ে। টিউবের মধ্যে চলাচল করবে ক্যাপসুলের মতো পড। এই পডগুলো ম্যাগনেটিক লেভিটেশন পদ্ধতিতে টিউবের মধ্যে দিয়ে ভেসে যাবে।

হাইপারলুপ নিয়ে কাজ করছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে আছে ভার্জিনের হাইপারলুপ ওয়ান, হাইপারলুপ ট্রান্সপোর্টেশন টেকনোলজিস এবং ইলন মাস্কের দ্য বোরিং কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ইলন মাস্ক প্রতিষ্ঠানটি দুই মাইল দীর্ঘ সুড়ঙ্গে হাইপারলুপের পরীক্ষা চালাচ্ছে। মাস্ক ঘোষণা দিয়েছেন, ১০ ডিসেম্বর থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে হাইপারলুপ।

ভবিষ্যতে রাস্তার পাশেও থাকতে পারে হাইপারলুপ
ভবিষ্যতে রাস্তার পাশেও থাকতে পারে হাইপারলুপ


প্রস্তাব অনুযায়ী দুটি বড় টানেলের মধ্যে দিয়ে চলবে হাইপারলুপ। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোকে লস অ্যাঞ্জেলেসের সঙ্গে মাটির নিচ দিয়ে যুক্ত করবে। আর যাত্রী বহন করতে ব্যবহার করা হবে পড। মাস্ক জানিয়েছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছালে ঘণ্টায় ৭০০ মাইল বেগে ছুটবে এই হাইপারলুপের পডগুলো। আর শুরু থেকে শেষে পৌঁছাতে মাটির নিচ দিয়ে ট্রেনটির সময় লাগবে প্রায় ৩৫ মিনিট। যেখানে গাড়িতে করে সান ফ্রান্সিসকো থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসের প্রায় ৩৮৩ মাইল পাড়ি দিতে সময় লাগে প্রায় ৭ ঘণ্টা। প্রতিটি হাইপারলুপের ট্রেন শুরুতে প্রায় ৪০ জন যাত্রী বহন করতে পারবে।

পড—এতে করেই হবে যাতায়াত
পড—এতে করেই হবে যাতায়াত

২০২১ সালে শুরু হবে গণপরিবহন
ইলন মাস্কের কাছ থেকে হাইপারলুপের ধারণা প্রথম জনসম্মুখে আসে ২০১২ সালের শেষ দিকে। এরপর সান ফ্রান্সিসকো থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসের জন্য হাইপারলুপ আলফার নকশা প্রকাশ করা হয় ২০১৩ সালের আগস্টে। হাইপারলুপ নির্মাণের প্রাথমিক ব্যয়ভার ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। এরপরের দীর্ঘদিন সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকে নির্মাণের কাজ। অবশেষে গত বছরের ৪ এপ্রিল পুরোদমে হাইপারলুপের নির্মাণকাজ শুরু করে ইলনের দ্য বোরিং কোম্পানি। গণমাধ্যমে ইলন বলেছিলেন, ২০৩০ সালের আগে পূর্ণাঙ্গ কাজটি শেষ হওয়ার কথা না ভাবাই ভালো। তবে হাইপারলুপের নির্মাণকাজ ২০২১ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার ধারণা করা হচ্ছে। তবে আগামী বছর নাগাদ এর পরীক্ষামূলক উন্মোচন হতে পারে বলে আশা করা যায়।

হাইপারলুপের প্রকল্পটি শুধু যে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য, এমন নয়। ইলন জানিয়েছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা তাঁর এই প্রকল্প নিজ দেশে বাস্তবায়িত করার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য ও ভারত রয়েছে। এ ছাড়া ইলন প্রকল্পটির মূল নকশা সবার জন্য উন্মুক্ত রাখবেন বলে জানিয়েছেন। অর্থাৎ যেকোনো প্রতিষ্ঠান হাইপারলুপ নির্মাণ করতে পারবে।