দ্বিতীয় সংখ্যাটি প্রথম সংখ্যার কত গুণ?

গণিতে সংখ্যার ম্যাজিক বেশ বড় একটি বিষয়। এতে যেমন গণিতের কৌশল আছে, তেমনি আছে মজা। যেমন একটি প্রশ্ন ধরা যাক। ক্রমিক কয়েকটি জোড় বা বিজোড় সংখ্যার সমষ্টি সব সময় কোন সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য? এ রকম কোনো সংখ্যা কি আছে? এ প্রশ্নের সহজ সমাধান কী? মনে হয় খুব কঠিন, কিন্তু একটু চিন্তা করলেই জট খুলে যায়।

অবাক হতে হয়, যখন দেখি যেকোনোসংখ্যক ক্রমিক বিজোড় সংখ্যার সমষ্টি মোট যতগুলো সংখ্যার সমষ্টি, সেই সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য। ধরা যাক, (২ক – ৩), (২ক – ১), (২ক + ১) এবং (২ক + ৩) মোট ৪টি ক্রমিক বিজোড় সংখ্যা। এদের যোগফল = ৮ক। এই যোগফল সব সময়ই ৪ এবং (২ক) দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য।এখানে (২ক) হলো সংখ্যাগুলোর গড় এবং পদসংখ্যা = ৪, যা একটি জোড় সংখ্যা।

একইভাবে ধরা যাক, (২ক – ৩), (২ক – ১), (২ক + ১), (২ক + ৩) এবং (২ক + ৫) মোট ৫টি ক্রমিক বিজোড় সংখ্যা। এদের যোগফল = (১০ক + ৫)। এটি পদসংখ্যা ৫ দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য।
জোড় সংখ্যার ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য।

সহজভাবে বলা যায়, ‘ক’ সংখ্যক জোড় বা বিজোড় সংখ্যার যোগফল ‘ক’ দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য। যেমন: যদি ‘ক’ যেকোনো সংখ্যা হয়, তাহলে ৪টি ক্রমিক জোড় বা বিজোড় সংখ্যার যোগফল = (ক – ৩) + (ক – ১) + (ক + ১) + (ক + ৩) = ৪ক, যা ৪ এবং ‘ক’ দ্বারা বিভাজ্য। এখানে পদসংখ্যা ৪, যা একটি জোড় সংখ্যা। পদসংখ্যা যদি বিজোড় হয়, তাহলে ধরা যাক ৫টি ক্রমিক জোড় সংখ্যার যোগফল = (ক – ৩) + (ক – ১) + (ক + ১) + (ক + ৩) + (ক + ৫) = (৫ক + ৫), যা পদসংখ্যা ৫ দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য।
এক কথায় বলা যায়, ৮টি ক্রমিক সংখ্যার যোগফল ৮ দ্বারা, ১৯টি ক্রমিক সংখ্যার যোগফল ১৯ দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য। ইত্যাদি।

এ সপ্তাহের ধাঁধা
একটি সংখ্যার এক–তৃতীয়াংশ (১/৩ অংশ) যদি দ্বিতীয় একটি সংখ্যার এক–ষষ্ঠাংশের (১/৬ অংশ) সমান হয়, তাহলে দ্বিতীয় সংখ্যাটি প্রথম সংখ্যার কত গুণ?
খুব সহজ। অনলাইনে মন্তব্য আকারে অথবা [email protected] ই–মেইলে আপনাদের উত্তর পাঠিয়ে দিন। সঠিক উত্তর দেখুন আগামী রোববার অনলাইনে।

গত সপ্তাহের ধাঁধার উত্তর
ধাঁধাটি ছিল এ রকম: এক ব্যক্তি মোটর সাইকেলে অফিস যাচ্ছেন। মোট দূরত্বের দুই–তৃতীয়াংশ পথ যাওয়ার পর প্রচণ্ড যানজটে পড়লেন। তিনি অবশিষ্ট পথ হেঁটে অফিসে পৌঁছলেন। এতে মোটর সাইকেলে যত সময় তিনি চলেছেন, তার ৫ গুণ সময় হাঁটতে হয়েছে। তাঁর হাঁটার তুলনায় মোটরসাইকেলের গতি কত গুণ ছিল?

উত্তর
মোটর সাইকেলের গতি ছিল তাঁর হাঁটার তুলনায় ১০ গুণ।
সঠিক উত্তর পাঠিয়েছেন সবাই। ধন্যবাদ।

কীভাবে উত্তর বের করলাম
মোটরসাইকেলে ওই ব্যক্তি গিয়েছেন (২/৩) অংশ এবং হেঁটে গিয়েছেন অবশিষ্ট (১/৩) অংশ পথ। তার মানে, মোটরসাইকেলে যত পথ গিয়েছেন, তার অর্ধেক দূরত্ব হেঁটে গিয়েছেন। এই হাঁটাপথের দূরত্ব পার হতে ৫ গুণ সময় লেগেছে। তাহলে মোটরসাইকেলে পার হওয়া দূরত্বের সমান পথ যেতে লাগবে এর দ্বিগুণ সময়। সুতরাং মোটরসাইকেলের গতি তাঁর হাঁটার গতির তুলনায় ১০ গুণ।

এর ব্যাখ্যার জন্য, ধরা যাক অফিসের দূরত্ব ২৪ কি.মি.। এর দুই-তৃতীয়াংশ = ১৬ কি.মি. পথ মোটরসাইকেলে যেতে যদি, ধরা যাক, ২৪ মিনিট সময় লাগে, তাহলে মোটরসাইকেলের গতি ঘন্টায় (১৬/২৪)×(৬০) = (২×২০) = ৪০ কি.মি.। অন্যদিকে, হেঁটে এর অর্ধেক দূরত্ব = ৮ কি.মি. যেতে মোট লেগেছে মোটরসাইকেলের সময়ের ৫ গুণ = (২৪×৫) = ১২০ মিনিট। সুতরাং হাঁটার গতি ১২০ মিনিটে ৮ কি.মি., অথবা ঘণ্টায় ৪ কি.মি.। আমরা দেখছি, আলোচ্য ক্ষেত্রে মোটরসাইকেলের গতি ঘণ্টায় ৪০ কি.মি. এবং হাঁটার গতি ঘণ্টায় ৪ কি.মি.। সুতরাং মোটরসাইকেলের গতি হাঁটার গতির ১০ গুণ।

আব্দুল কাইয়ুম, সম্পাদক, মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা