করোনার ভ্যাকসিন এ বছরই: মার্কিন বিশেষজ্ঞ

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছেন বিশেষজ্ঞরা । ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছেন বিশেষজ্ঞরা । ছবি: রয়টার্স

বছরের মধ্যেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন চলে আসবে বলে তথ্য দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। গতকাল রোববার এক অনুষ্ঠানে ভ্যাকসিনের এ সুখবর দেওয়ার পাশাপাশি এ কথা বলে তিনি সতর্ক করেছেন, তাই বলে এ নিয়ে নির্ভাবনায় হাত–পা গুটিয়ে বসে থাকা যাবে না। এতে বিপদ হতে পারে।

জনস হপকিনস ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কেন্দ্রের পরিচালক ড. টম ইঙ্গলসবি যুক্তরাষ্ট্রের এনবিসি নিউজের 'মিট দ্য প্রেস' অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন।

ইঙ্গলসবি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক চাক টডকে বলেন, 'ভ্যাকসিনের জন্য এক বা দেড় বছরের টাইমলাইন সাধারণত অবাস্তব মনে হতে পারে। তবে মহামারিকে ঘিরে অসাধারণ পরিস্থিতি এমন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। সব কিছু ঠিকমতো এগোলে আমাদের কিছুটা আশা করা উচিত যে, আমরা সম্ভবত বছরের শেষের দিকে একটি ভ্যাকসিন দেখতে পাব।'

ইঙ্গলসবি বলেন, 'বিশ্বজুড়ে ১১০টি ভ্যাকসিন প্রকল্প নিয়ে বিশ্বের প্রধান প্রধান ভ্যাকসিন কোম্পানিগুলো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবে টনি ফসি ও মনসেফ সাউয়ি এই প্রকল্পে সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে এটা সম্ভব। আমিও মনে করি, এটা সম্ভব। তবে এ জন্য সবকিছু ঠিকঠাক হতে হবে। অনেক উপায় আছে, যেগুলো ঠিকভাবে কাজ করবে না। তা্ই আমাদের এর ওপর অতি নির্ভরশীল হলে চলবে না।'

ফসি হোয়াইট হাউস করোনভাইরাস টাস্ক ফোর্সের সদস্য। সাউয়ি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মনোনীত টিকা তৈরির প্রয়োজনীয় সময় কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

ইঙ্গলসবি বলেন, ভাইরাসের বিস্তার রোধে লকডাউন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম মহামারির শিকার হয়েছি, যা বিশ্বের অন্য দেশের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। তবে সময়ের সঙ্গে এটি সঠিক পথে যাচ্ছে। এখন অঙ্গরাজ্যগুলোকে লকডাউন তোলার ব্যাপারে সাবধানের সঙ্গে ভাবতে হবে।

বাজারে ভ্যাকসিন আসার আগেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ যখন লকডাউন শিথিল করছে, তখনই যতটা সম্ভব সাবধান থাকার কথা বললেন জনস হপকিনসের এই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সবার কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এখনো কয়েক মাস বা কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। তাই আগেভাগে বিধিনিষেধ তুলে নিলে ভাইরাস আবার ফিরে আসতে পারে।

অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার আমেরিকানদের দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা আরও বেশি আশাব্যঞ্জক বলে মনে হচ্ছে।

ট্রাম্প বলেন, করোনার ভ্যাকসিন আসুক বা না আসুক, যুক্তরাষ্ট্রে সব কিছু ফের চালু হবে।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র করোনার ভ্যাকসিন পেতে যাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে সব কিছু চালু হওয়ার জন্য ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় থাকবেন না তিনি। লকডাউন উঠে যাবে।

এক বছরের মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন তৈরি নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞই সংশয় প্রকাশ করেছেন।এ ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পটির নাম 'অপারেশন ওয়ার্প স্পিড'। ট্রাম্প জানান, দ্রুত গবেষণা ও অনুমোদনের লক্ষ্যে প্রকল্পে ১৪টি সম্ভাব্য ভ্যাকিসন নিয়ে কাজ শুরু হবে। কাজটা বড় ও কাজ দ্রুত হবে।