করোনার ২০০ কোটি ডোজ সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরির ঘোষণা

ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছেন গবেষকেরা। ছবি: রয়টার্স
ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছেন গবেষকেরা। ছবি: রয়টার্স

ব্রিটিশ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা সম্ভাব্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ২০০ কোটি ডোজ সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। ২টি নতুন চুক্তি হওয়ার পর তাদের সক্ষমতা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। সম্প্রতি এই ওষুধ কোম্পানি থেকে এ কথা জানানো হয়।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত মাসে অ্যাস্ট্রাজেনেকার পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের ১০০ কোটি ডোজ তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। তারা যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সঙ্গে এ ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা দুটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি করেছে, যাতে তাদের উৎপাদনক্ষমতা দ্বিগুণ হবে। নতুন চুক্তির মধ্যে একটির পেছনে রয়েছেন বিল গেটস।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার পক্ষ থেকে তাদের তৈরি ভ্যাকসিনের অর্ধেক নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে সরবরাহ করার ব্যাপারে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার একটি চুক্তি হয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে, যারা বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী হিসেবে পরিচিত। আরেকটি চুক্তি হয়েছে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটসের অর্থায়নে পরিচালিত দুটি স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে।

ওই দুটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান হচ্ছে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস (সিইপিআই) ও জিএভিআই ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স। এ দুটি প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিনের ৩০ কোটি ডোজ উত্পাদন এবং বিতরণ করার জন্য উত্পাদন-সুবিধা খুঁজে পেতে সহায়তা করবে। বছরের শেষের দিকে ভ্যাকসিন সরবরাহ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী পাস্কাল সারিওট বলেন, তাঁদের তৈরি ‘এজেডডি১২২’ ভ্যাকসিনটি কার্যকর কি না, আগস্টের মধ্যেই জেনে যাবেন বলে আশাবাদী তিনি। অন্যদিকে সিইপিআইয়ের প্রধান নির্বাহী রিচার্ড হ্যাচেট বলেছেন, এখনো ভ্যাকসিনটি কার্যকর না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে অ্যাস্ট্রাজেনেকার লাইসেন্সিং চুক্তি হলো স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য এক বিলিয়ন ডোজ সরবরাহ করা। এর মধ্যে ২০২০ সাল শেষ হওয়া আগেই ৪০ কোটি ডোজ সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

সারিওট বলেন, সংস্থাটি মহামারির সময় কোনো লাভ ছাড়াই বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য এবং ভ্যাকসিনের দুই বিলিয়ন ডোজের জন্য উত্পাদনক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে অনেকগুলো সরবরাহের চেইন তৈরি করছে।

ইতিমধ্যে সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটির যুক্তরাষ্ট্রকে ৩০ কোটি ও যুক্তরাজ্যকে ১০ কোটি ডোজ সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। সেপ্টেম্বরে প্রথম ধাপে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে এ দুটি দেশকে।

বিশ্বজুড়ে সরকারগুলো কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং বেশ কয়েকটি ওষুধ সংস্থা সম্ভাব্য ওষুধ উৎপাদন ও পরীক্ষার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘ভ্যাকসিনকে অবশ্যই বিশ্বব্যাপী জনস্বার্থ হিসেবে দেখা উচিত। ভ্যাকসিনের জন্য বিশ্বনেতাদের আহ্বান ক্রমেই বাড়ছে।’