নয় বছরের শিশুর হাত ধোয়ার যন্ত্র

স্টিফেন ওয়ামুকোটা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
স্টিফেন ওয়ামুকোটা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

কেনিয়ার নয় বছরের শিশু স্টিফেন ওয়ামুকোটা কয়েক টুকরা কাঠ, পানির পাত্র আর তরল সাবান ব্যবহার করে তৈরি করে ফেলেছে হাত ধোয়ার যন্ত্র। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জনসাধারণের ব্যবহারের উপযোগী এ সহজ যন্ত্রের উদ্ভাবনের কারণে দেশটির রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছে ছোট্ট স্টিফেন। গুড নিউজ নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

করোনা মহামারির সময় স্পর্শ ছাড়াই হাত ধোয়ার যন্ত্রটি তৈরি করে ইতিমধ্যে বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে স্টিফেন। গত মাসেই বিবিসি ও বার্তা সংস্থা এএফপি তার এ উদ্ভাবনের খবর ও রাষ্ট্রপতির পুরস্কার পাওয়ার খবর তুলে ধরে।

কেনিয়ার পশ্চিম অংশের বুনগোমা এলাকার বাসিন্দা জেমস ওয়ামুকোটার ছেলে স্টিফেন। স্টিফেন কাঠ, পেরেক আর ছোট একটি পানির ড্রাম দিয়ে তৈরি করেছে এই হাত ধোয়ার মেশিন। যেটি ব্যবহার করার জন্য হাত দিয়ে মেশিন স্পর্শ করার প্রয়োজন নেই। স্টিফেনের যন্ত্রটি একটি কাঠামোর মতো দেখতে। যেখানে দুটি প্যাডেল রয়েছে। একটিতে পা দিয়ে চাপ দিলেই তরল হ্যান্ডওয়াশ বেরিয়ে আসছে। অন্যটিতে চাপ দিলে একটি ড্রাম থেকে পানি পড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিচে বেসিনের মতো করে রাখা হয়েছে একটি প্লাস্টিকের গামলা। হাত ধোয়া পানি সেই গামলা হয়ে দূরে চলে যাচ্ছে পাইপের মাধ্যমে।

স্টিফেন জানিয়েছে, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম থেকে সে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে হাত ধোয়ার গুরুত্বের কথা জানতে পারে। তার পরই সে এই যন্ত্রটি তৈরি করে।

স্টিফেনের বাবা জেমস বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি জানালার কাঠামো বানানোর জন্য কিছু কাঠ এনে রেখেছিলাম। কিন্তু একদিন কাজ শেষে ফিরে দেখি, স্টিফেন যন্ত্রটি বানিয়ে ফেলেছে। এ ধারণাটি পুরোপুরি তাঁর। আমি তাঁকে এটি শক্ত করে তৈরি করতে সাহায্য করেছি মাত্র। আমি তার জন্য গর্বিত।’

স্টিফেনের তৈরি হাত ধোয়ার যন্ত্রটির ছবি ফেসবুকে ব্যাপক শেয়ার হয়। এরপর সে আরেকটি যন্ত্র তৈরি করে। এখন এ ধরনের আরও যন্ত্র তৈরির কথা ভাবছে স্টিফেন।

গত মাসে তাঁর এ উদ্ভাবনের জন্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছে সে। ভবিষ্যতে প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখা স্টিফেনকে ভবিষ্যতে কলেজে ভর্তির জন্য বৃত্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কেনিয়ার গভর্নর।

স্টিফেনের বাবা বলেন, ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তিনি। সে সব সময় কারখানা গড়ার ও প্রকৌশলী হওয়ার কথা বলে। আমি আশা করি সে তা হতে পারবে ও মহৎ মানুষ হতে পারবে।’