বিপাকে পড়া হুয়াওয়ের জন্য কোয়ালকমের লবিং

যুক্তরাষ্ট্র নিষিদ্ধ হওয়া হুয়াওয়ে টেকনোলজিসের কাছে চিপসেট বিক্রি করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে লবিং করছে চিপ নির্মাতা কোয়ালকম। গতকাল শনিবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।

কোয়ালকমের সূত্র জানিয়েছে, ৫জি স্মার্টফোনে যাতে কোয়ালকমের চিপসেট হুয়াওয়ে ব্যবহার করতে পারে সে জন্য কোয়ালকম লবিং করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

হুয়াওয়েকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ফলে কোয়ালকমের বৈদেশিক প্রতিদ্বন্দ্বীর হাতে ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার সমমানের বার্ষিক বাজার তুলে দিয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে অবশ্য কোয়ালকম এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

গত মাসেই হুয়াওয়ের সঙ্গে লাইসেন্স সংক্রান্ত ঝামেলা মিটিয়ে ফেলেছে কোয়ালকম কর্তৃপক্ষ। এতে কোয়ালকম বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে ১৮০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ পাবে।

এদিকে ভয়েস অব আমেরিকার আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, হুয়াওয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পড়ায় তাদের প্রসেসর চিপের সংকট তৈরি হয়েছে। তাদের নিজস্ব উন্নত চিপের উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। মার্কিন চাপে হুয়াওয়ের ব্যবসার ক্ষতি বাড়ছে।

চীনের হুয়াওয়ে টেকনোলজিস বিশ্বের বৃহত্তম স্মার্টফোন ও নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতি নির্মাতা হিসেবে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যেকার প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা যুদ্ধের মাঝখানে রয়েছে। হুয়াওয়ের পর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার শত্রুতা টিকটক ও উইচ্যাট পর্যন্ত পৌঁছেছে।

গত বছরে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার অজুহাতে হুয়াওয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যন্ত্রপাতি পাওয়া ও গুগলের সেবা পাওয়ার সেবা বন্ধ করা হয়। গত মে মাসে হুয়াওয়ের ওপর ওই নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করা হয়। বিশ্বজুড়ে মার্কিন প্রযুক্তি ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে হুয়াওয়ের কাছে প্রযুক্তি বিক্রি ও সরবরাহ বন্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে তাদের ইউরোপিয়ান মিত্রদের নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলে পরবর্তী প্রজন্মের নেটওয়ার্ক তৈরিতে হুয়াওয়েকে বাদ দিতে লবিং করা হচ্ছে।

চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির অফিশিয়াল পত্রিকা পিপল ডেইলি পরিচালিত গ্লোবাল টাইমস এক সম্পাদকীয়তে সম্প্রতি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকাভুক্ত বাইটড্যান্স ও হুয়াওয়ে টেকনোলজিসের প্রতি মার্কিন সরকার যে আচরণ করেছে, এতে মার্কিন সরকার চীনের সঙ্গে অর্থনীতি পৃথক করে ফেলতে চায়, তার প্রচেষ্টার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে চুরি করে নেওয়ার কোনো বিষয় চীনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হবে না।