সোনালি ধানে খুশি কৃষক

মাঠে মাঠে এখন পাকা ধানের সোনালি হাসি। আমন ফসল ভালো হওয়ায় কৃষকেরাও ভীষণ খুশি। ঘরে ঘরে নতুন ধান তোলার তোড়জোড় চলছে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত কৃষকেরা, যেন দম ফেলার ফুরসত নেই।
গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের উত্তরমুলাইম এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে কৃষকেরা পাকা ধান কাটায় মগ্ন। কেউ কেউ কাটা ধান আঁটি বাঁধছেন। কেউ মাথায় করে ধানের আঁটি বাড়ি নিচ্ছেন। এ সময় কৃষক তনজু মিয়া (৫৫) বলেন, ‘এবার ধান ভালো অইছে। যেদিকে তাকাউকা দেখবা ধান আর ধান। অখন সবাই কেমনে ধান ঘরে তুলতো, তা লইয়া ব্যস্ত।’
আবদুল করিম বলেন, ‘ফসল ভালা অইছে। এবার ধানে চুচা (চিটা) কম। ধান ভালা অইলে আমরার আর কুনতা (কিছু) লাগে না। আমরার অইলো কাজ করতাম। ভাত খাইতাম।’
কৃষক ও খেতমজুরদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এ বছর এক বিঘা জমির ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াই বাবদ কৃষিশ্রমিকদের এক হাজার ৪০০ টাকা থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে। খেতমজুর ওমর আলী (৩০) বলেন, ‘এবার আড়াই শ টাকা রোজে কাজ করছি।’
সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের রনভীম গ্রামের কৃষক ইয়ারোপ মিয়া জানান, এক বিঘা জমিতে হালচাষ, বীজ, সার প্রয়োগ এবং ধান কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধান পাওয়া যাবে সাত হাজার থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আবুল কালাম চৌধুরী জানান, এবার এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সারের দাম কম থাকায় কৃষকেরা চাহিদামতো তা ব্যবহার করতে পেরেছেন। এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে বৃষ্টি হওয়ায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, এ বছর মৌলভীবাজার জেলায় রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৫ হাজার ৯৩০ হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে ৯৯ হাজার ৪৫ হেক্টর। অপরদিকে বোনা আমনের (স্থানীয়ভাবে কাতারি নামে পরিচিত) লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার ৯০৮ হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে দুই হাজার ৯৬৫ হেক্টরে।