৩ দিনের মধ্যে পুনঃ তফসিলের দাবি

আগামী তিন দিনের মধ্যে যদি ডাকসু নির্বাচন বাতিল করে পুনঃ তফসিল দেওয়া না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিতে বাধ্য হব বলে মন্তব্য করেছেন বাম ছাত্রজোটের ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী। তিনি বলেছেন, ‘আগামী তিন দিনের মধ্যে যদি ডাকসু নির্বাচন বাতিল করে পুনঃ তফসিল দেওয়া না হয়, একই সঙ্গে এই নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁরা যদি পদত্যাগ না করেন এবং মামলা প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব রক্ষার্থে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিতে বাধ্য হব।’

ছাত্রলীগ বাদে ভোট বর্জনকারী ডাকসুর পাঁচটি প্যানেল পুনর্নির্বাচন চেয়ে আজ বুধবার দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয়ে কাছে স্মারকলিপি নিয়ে যায়। স্মারকলিপি প্রদানের পর উপাচার্যের প্রতিক্রিয়া নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন লিটন নন্দী।

লিটন নন্দী বলেন, ‘আমরা উপাচার্যকে বলেছি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ করে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। বরং তাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল অ্যাক্টের মামলা দেওয়া হবে। আমরা বলেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে এত দিন যারা ক্রিমিনাল অ্যাক্ট করলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি কোনো উত্তর দেননি।’

এরপর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে অপর এক সংবাদ সম্মেলনে পুনর্নির্বাচনের বিষয়ে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘সকলের কর্মপ্রয়াস, আন্তরিকতা, সময় শ্রম সেগুলোকে নস্যাৎ করার এখতিয়ার, সেটি আমার নেই। প্রত্যেকটি প্রক্রিয়া, প্রত্যেকটি কার্যক্রম রীতিনীতি মেনে হবে।’

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপাচার্য। ছবি: আবদুস সালাম
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপাচার্য। ছবি: আবদুস সালাম

এর আগে দুপুর ১২টা থেকে গতকালের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর পরে তাঁরা স্মারকলিপি নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে যান।

ডাকসু নির্বাচনের পরদিন গতকাল মঙ্গলবার দিনটি ছিল নাটকীয়তায় ভরা। গত সোমবার গভীর রাতে যখন সহসভাপতি (ভিপি) পদে বিজয়ী হিসেবে নুরুল হকের নাম ঘোষণা করা হয়, তখন ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। নুরুলকে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন তাঁরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাম্পাসে এলে তাঁকে ধাওয়াও দেওয়া হয়। এরপর হঠাৎ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী এসে নুরুলকে বুকে জড়িয়ে ধরলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।

নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক তখন বলেন, ‘ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের যে ঘোষণা দিয়েছিলাম, তা থেকে আমরা সরে এসেছি।’

কিন্তু ভোট বর্জনকারী অন্যান্য সংগঠন তাঁর এ ঘোষণা মেনে নেয়নি। তোপের মুখে পড়েন নুরুল। পরে রাতে ঘোষণা দেন, অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন তিনি, চান পুনর্নির্বাচন।