মা ভালো থাকলে সন্তানও ভালো থাকবে

মডেল দীপা সন্তানকে সুস্থ রাখার জন্য নিজের প্রতি খেয়াল রাখেন। ছবি: প্রথম আলো
মডেল দীপা সন্তানকে সুস্থ রাখার জন্য নিজের প্রতি খেয়াল রাখেন। ছবি: প্রথম আলো

কথায় আছে ‘মায়ের চাকরি ২৪ ঘণ্টা—হোক সে গৃহিণী কিংবা চাকরিজীবী।’ তাঁদের অধিকাংশেরই দিন শুরু হয় ঘুম থেকে উঠেই কে কী খাবার খাবে, বাচ্চাকে স্কুলের জন্য তৈরি করা; এর মাঝেই খেয়ে না খেয়ে বাচ্চাকে নিয়ে বের হয়ে যাওয়া কিংবা অফিসের জন্য দৌড়! এভাবেই চলতে থাকে আমাদের মায়েদের জীবন। যত যাই বলুন, আমাদের মায়েরা আমাদের পাশে থাকা সবচেয়ে ব্যস্ত মানুষ। দিনের পুরোটা সময়ই তাঁদের কেটে যায় পরিবারের অন্য সদস্যদের যত্নআত্তি করতে। নিজের শরীর-মনের খবর নেওয়ার সময় পান না।

সুস্থ মা, সুস্থ শিশু—এ স্লোগানটি ব্যবহারই করা হয় মায়ের সুস্থতার ওপর জোর দেওয়ার জন্য। যে মায়েরা এখনো সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন, ঘরে-বাইরে কাজ করছেন; তাঁদের উচিত হবে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা, ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ করা। আবার যাঁদের সন্তান বড় হয়ে গেছে, তাঁরা সন্তানদের নিয়েই হাঁটতে বের হতে পারেন। তবে একজন মায়ের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও আছে কিছু কর্তব্য। বিশেষ করে সন্তানের বাবার উচিত সংসারের বিভিন্ন কাজে তাঁকে সাহায্য করা। এটি যেমন দায়িত্ব, তেমনি মানবিক।

যেভাবে মায়েরা নিজেদের প্রফুল্ল রাখতে পারেন

নিজের সময়

সন্তানদের স্কুলে দিয়ে অথবা অফিস থেকে ফিরে কিংবা দিনের যেকোনো অংশে নিজের জন্য রাখুন কিছুটা সময়। যাবতীয় সব চিন্তা কিছুক্ষণের জন্য বাদ দিয়ে এ সময়টায় ভাবুন নিজেকে নিয়ে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় রাখুন এই খাতে। একটু আয়েশ করে চা খাওয়া, পছন্দের ম্যাগাজিনে চোখ বোলানো অথবা বই নিয়েও বসতে পারেন এ সময়টাতে।

সৌরভময় সময়

সারা দিন চনমনে মেজাজে থাকতে ঘরের এক কোণে কিংবা অফিসে ডেস্কের পাশে রাখতে পারেন প্রিয় ফুল অথবা সৌরভ আছে এমন মোমবাতি, কাগজ। ওয়াশরুমে রাখতে পারেন ফ্রেগ্রানস ডিফিউজার। এটি শুধু আপনার মনই ভালো রাখবে তা নয়, আপনার আশপাশের পরিবেশকেও করবে সুন্দর।

বই পড়া

বই পড়াও মানসিক প্রশান্তির আরেকটি জায়গা। অনেকেরই বই পড়ার অভ্যাস থাকে। কিন্তু সংসারজীবনে ঢোকার পর অনেকেরই পড়ার সেই অভ্যাসটা হারিয়ে যায়। তাই সময় বের করে আবার শুরু করতে পারেন বই পড়ার অভ্যাস। প্রতিদিন বসুন পছন্দের লেখকের বই নিয়ে। এটি যেমন আপনাকে পুরোনো ভালো লাগার কাছে নিয়ে যাবে, ঠিক তেমনি আপনাকে নতুন কিছু শুরু করার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

অভ্যাস করুন সতেজ থাকতে

প্রতিদিন চেষ্টা করুন বিভিন্ন ফলের রস পান করতে। এমনকি হতে পারে ঘরে বানানো ফলাহার, ফলের বিভিন্ন জুস, অথবা শুধু ফল। এটি যেমন শরীর সতেজ রাখে, ত্বকের জন্য ভালো।

মনের জন্য গানের থেরাপি

তৈরি করুন নিজের পছন্দের গানের তালিকা। দিনের শুরুতে, কাজের ফাঁকে কিংবা অবসরে শুনুন নিজের পছন্দের গানটি। গান শুনতে না চাইলে বিভিন্ন ইনসট্রুমেন্টাল মিউজিকও শুনে দেখতে পারেন। রিলাক্সিং অনেক ট্র্যাকও পাওয়া যায় অনলাইনে। এই থেরাপি মনের বিষণ্নতা যেমন দূর করবে, তেমনি মনকে রাখবে প্রফুল্ল।

লেখক: শিশুবিশেষজ্ঞ