Thank you for trying Sticky AMP!!

২৬ জানুয়ারি আসামিপক্ষের পরবর্তী যুক্তিতর্ক

সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া তিনটা পর্যন্ত আসামিপক্ষের আংশিক যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। ২৬ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীরের আদালতে আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়।

কাঠগড়ায় ৩৪ জন আসামির উপস্থিতি ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্কের জন্য ২৬ জানুয়ারি দিন ধার্যের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মো. আনোয়ারুল ইসলাম।

আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা, সাতক্ষীরা জজকোর্টের পিপি আবদুল লতিফ, সাবেক পিপি ওসমান গণি, অতিরিক্ত পিপি ফাহিমুল হক কিসলু, সাবেক পিপি তপন কুমার দাস, সাবেক অতিরিক্ত পিপি আজাহার হোসেন, আইনজীবী শহীদুল ইসলাম, ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী আবদুল গফফার, অতিরিক্ত পিপি সৈয়দ জিয়াউর রহমান, আইনজীবী ওকালত আলী, নাজমুন্নাহার, জিয়াউর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীরের আদালতে আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়।

আসামিপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন হাইকোর্টের আইনজীবী শাহানারা আক্তার, আবদুল মজিদ, মিজানুর রহমান, তোজাম্মেল হোসেন কামারুজ্জামান প্রমুখ।

বেলা সোয়া ১১টায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল মজিদ মামলাটিতে বিভিন্ন গরমিল রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। আদালতকে তিনি বলেন, একজন সাক্ষীর জবানবন্দির সঙ্গে অপর সাক্ষীর জবানবন্দির গরমিল, রাস্তায় আড় করে দেওয়া যাত্রীবাহী বাসে কখনো যাত্রী না থাকা আবার কখনো ৩৫ জন যাত্রী ছিল বলা, কয়েকজন সাক্ষী হামলার ১০ মিনিট আগে কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসে অবস্থান করার কথা বললেও তাঁদের একজন শেখ হাসিনার গাড়িবহরে ছিলেন বলে জবানবন্দি দেওয়া, বাসটি সরসকাটি থেকে চান্দুড়িয়া রুটের বলা হলেও চালক নজিবুল্লাহ সাক্ষীতে যাত্রীসহ বাসটি নিয়ে তিনি ওই দিন বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা থেকে যশোরে যাচ্ছিলেন বলে উল্লেখ করাসহ বিভিন্ন গরমিল রয়েছে উল্লেখ করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সম্পূরক অভিযোগপত্রে ঘটনাস্থলের আশপাশে কমপক্ষে ১৪টি দোকান রয়েছে উল্লেখ করলেও তাঁদের কাউকে সাক্ষী করেননি। সর্বোপরি মামলাটিকে একটি রাজনৈতিক মামলা হিসেবে দাবি করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।

Also Read: সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে সড়কপথে ঢাকায় ফিরছিলেন শেখ হাসিনা। পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে জেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা দলীয় অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস রাস্তার ওপর আড় করে দিয়ে তাঁর গাড়িবহরে হামলা চালান। হামলাকারীরা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি করেন ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। এ সময় গাড়িবহরে থাকা ১৫-২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলায় তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান, সাংবাদিকসহ আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ১২ নেতা-কর্মী আহত হন।

Also Read: শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: তৃতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন

তৎকালীন সাতক্ষীরা-১ আসনের সাংসদ হাবিবুল ইসলাম ও তাঁর নেতা-কর্মীরা এ হামলার পেছনে ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৭০-৭৫ জনকে আসামি করে কলারোয়া থানায় মামলা করতে গেলে মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ। এ ঘটনার ১২ বছর পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর সাতক্ষীরা আদালতে একটি মামলা করা হয়। আদালত কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দেন।

মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সাংসদ হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিন ভাগে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এতে সাক্ষী করা হয় ৩০ জনকে। তবে নয়জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে আসামিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি স্থগিত করা হয়। হাইকোর্ট মামলাটির স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সাতক্ষীরার নিম্ন আদালতে গত তিন বছর বন্ধ হয়ে ছিল মামলাটির বিচারকাজ। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত চলতি বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নথি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন।

Also Read: সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার বিচার আবার শুরু

Also Read: মামলা বাতিল প্রশ্নে রুল শুনানি শেষ, রায় ৮ অক্টোবর