সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার বিচার আবার শুরু

সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত
ফাইল ছবি

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার বিচারকাজ আবার শুরু হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হ‌ুমায়ূন কবীরের আদালত বাদীর জেরা পর্ব শুরুর আদেশ দেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা মামলাটির বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। তবে আসামিপক্ষ আজ বাদীকে জেরা করতে অস্বীকৃতি জানায়। এর ফলে আজ সাক্ষীকে জেরা করা যায়নি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল মজিদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য হওয়ায় তাঁরা সাক্ষীকে জেরা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। আদালতের কাছে তাঁরা লিভ টু আপিল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত সময় চাইলে আদালতের বিচারক বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ১৭ নভেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।

সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল লতিফ জানান, মামলাটির ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে মামলার স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেন আসামিরা। এরপর চলতি বছরের ২২ অক্টোবর উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ৯০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ ১৮ বছর পর আজ নিম্ন আদালতে মামলাটির কার্যক্রম শুরু হয়। আজ জেরা না হওয়ায় ১৭ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত। ওই দিন এই মামলার সাক্ষী জেরা নতুন করে শুরু হবে।

২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে সড়কপথে ঢাকায় ফিরছিলেন শেখ হাসিনা। পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে তাঁর গাড়িবহরে হামলা হয়।

২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে সড়কপথে ঢাকায় ফিরছিলেন শেখ হাসিনা। পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে তাঁর গাড়িবহরে হামলা হয়। হামলাকারীরা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি করে ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। এ সময় গাড়িবহরে থাকা ১৫ থেকে ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

তৎকালীন সাতক্ষীরা-১ আসনের সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব ও তাঁর নেতা-কর্মীরা এ হামলার পেছনে ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৭০-৭৫ জনকে আসামি করে কলারোয়া থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ। পরবর্তী সময়ে ১২ বছর পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর সাতক্ষীরা আদলতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। আদালত কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দেন।

মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিন ভাগে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এতে সাক্ষী করা হয় ৩০ জনকে। তবে ৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে আসামিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি স্থগিত করা হয়। হাইকোর্ট মামলাটির স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সাতক্ষীরার নিম্ন আদালতে গত তিন বছর বন্ধ হয়ে ছিল মামলাটির বিচারকাজ।