Thank you for trying Sticky AMP!!

ট্রেনে করে ঈদযাত্রার চতুর্থ দিন আজ শনিবার কমলাপুর রেলস্টেশনে ঘরমুখী মানুষের ভিড়

ঘরমুখী মানুষের ভিড়, ট্রেন দেরিতে ছাড়ায় ভোগান্তি

রেলপথে ঈদযাত্রার চতুর্থ দিন আজ শনিবার রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে ঘরমুখী মানুষের ভিড় বেড়েছে। আবার এদিন সকাল থেকেই প্রতিটি ট্রেন দেরি করে স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে। এতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়ছেন গরমের মধ্যে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা।

ঢাকা রেলস্টেশনের সূচি অনুযায়ী, চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটির আজ বেলা পৌনে দুইটায় কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর বেলা ৩টার দিকে ট্রেনটি ছেড়ে গেছে।

চট্টলা এক্সপ্রেসের অ্যাটেন্ডেন্ট প্রদীপ দাস প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসার পর ট্রেনের ইঞ্জিনের কিছু কাজ করা হচ্ছে। তাই ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হয়েছে।

রেলপথে ঈদযাত্রার প্রথম তিন দিন ঘরমুখী মানুষকে খুব একটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। বেশির ভাগ ট্রেন ছেড়ে গেছে নির্ধারিত সময়ে। তবে আজকের চিত্রটা ছিল ভিন্ন।

সরেজমিন ট্রেনটি পরিদর্শন করে দেখা যায়, আসনে বসে যাত্রীরা গরমে হাঁসফাঁস করছেন। মাথার ওপর ফ্যান চললেও অনেকে হাতপাখা দিয়ে গরম সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। নারী ও শিশুরা বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। গত তিন দিনের তুলনায় যাত্রীর চাপও ছিল আজ বেশি।

ট্রেনটির যাত্রী হুমায়ুন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, যানজট এড়াতে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পোস্তগোলা থেকে রওনা দিয়েছেন তিনি। নির্ধারিত সময়ের আগে এসে ট্রেনে আসনও পেয়েছেন। কিন্তু যথাসময়ে ছাড়ছে না ট্রেন। গরমে টেকা যাচ্ছে না। ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

ঢাকা রেলস্টেশন সূত্র বলছে, আজ পৌনে দুই ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সেপ্রেস। ট্রেনটি সকাল ছয়টায় কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছেড়েছে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে।

ইঞ্জিন–সংকটে ট্রেন ছাড়তে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এর বাখ্যায় তিনি বলেন, যে ট্রেনটি বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকায় আসছে, সেটি আবার বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়েও যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ইঞ্জিনের রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কিছুটা সময় লাগছে।
মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার, ঢাকা রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ অভিমুখী মহুয়া কমিউটার ও চট্টগ্রাম অভিমুখী কর্ণফুলী এক্সেপ্রেস ট্রেনও অনেকটা বিলম্বে স্টেশন ছেড়ে গেছে। এতে এসব ট্রেনের যাত্রীরাও পড়েন ভোগান্তিতে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী বনলতা এক্সপ্রেস বেলা দেড়টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রেনটি বেলা ২টার দিকে ছেড়েছে।

ট্রেনে করে গন্তব্যে যেতে ছুটছেন মানুষ। আজ শনিবার, কমলাপুর রেলস্টেশনে

রেলপথে ঈদযাত্রার প্রথম তিন দিন ঘরমুখী মানুষকে খুব একটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। বেশির ভাগ ট্রেন ছেড়ে গেছে নির্ধারিত সময়ে। তবে আজকের চিত্রটা ছিল ভিন্ন।

নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছেড়ে না যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ইঞ্জিন–সংকটে ট্রেন ছাড়তে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এর বাখ্যায় তিনি বলেন, যে ট্রেনটি বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকায় আসছে, সেটি আবার বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়েও যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ইঞ্জিনের রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রাথমিক পরীক্ষা–নিরীক্ষায় কিছুটা সময় লাগছে।

Also Read: ট্রেনের অগ্রিম টিকিট: শেষ দিনেও ব্যাপক চাহিদা

ঢাকা রেলস্টেশন সূত্র বলছে, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ রেলওয়েতে ট্রেনের ইঞ্জিন ছিল ৪৮৬টি। বর্তমানে আছে ৩০৩টি। এগুলোর ৭০ শতাংশ ঝুঁকি নিয়ে চলছে। রেলের বেশির ভাগ ইঞ্জিন পুরোনো হওয়ায় এসব রক্ষণাবেক্ষণে সময় লাগছে। তাই বিভিন্ন উৎসবে যাত্রীর চাপ বাড়লে পরিস্থিতি ঠিকমতো সামাল দেওয়া যায় না।

শিশুকে কোলে নিয়ে ঘরমুখী এক যাত্রী। আজ শনিবার, কমলাপুর রেলস্টেশনে

এদিকে রাজশাহীগামী সিল্ক সিটি বেলা ২টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। ট্রেনটির যাত্রী রেজাউল করিম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদ করতে রাজশাহী যাচ্ছেন। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রেজাউল প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনছি, সকাল থেকেই সব ট্রেন দেরী করে ছাড়ছে। এই ধারা চলতে থাকলে তীব্র গরমে যাত্রীদের অনেক কষ্ট হবে।’

রেলওয়ে সূত্র বলছে, বেলা ৩টা পর্যন্ত সিল্ক সিটি ছেড়ে যায়নি।

Also Read: ট্রেনে আগাম টিকিটে ভোগান্তিহীন ঈদযাত্রা শুরু

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা রেলস্টেশনের দুজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, যেহেতু আজ প্রতিটি ট্রেন দেরিতে ছেড়ে গেছে, এ কারণে আগামীকাল রোববার শিডিউল বিপর্যয় ঘটতে পারে।

ট্রেন আসার অপেক্ষায় যাত্রীরা। আজ শনিবার, কমলাপুর রেলস্টেশনে

সাধারণত কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন ৪২টি আন্তনগর ও ২৫টি লোকাল মেইল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল করে। ঈদ উপলক্ষে আটটি বিশেষ ট্রেন রাখা হয়েছে। এর মধ্যে আজ কমলাপুর থেকে তিনটি ছাড়া হয়। আগামীকাল রোববার থেকে বিশেষ আটটি ট্রেনই চলবে বলে ঢাকা রেলস্টেশন থেকে জানানো হয়েছে।

Also Read: কমলাপুর স্টেশনে ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে