Thank you for trying Sticky AMP!!

ডিজেলের দাম ৩৪ টাকা বাড়ানোর পর কমল ৫ টাকা

দাম বাড়ানোর ২৩ দিনের মাথায় জ্বালানি তেলের দাম কমাল সরকার। ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম লিটারপ্রতি ৫ টাকা কমানো হয়েছে। এতে ভোক্তারা তেমন সুফল পাবেন না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়ানোর পর কমানো হয়েছে মাত্র ৫ টাকা।

Also Read: এটা ‘গরু মেরে জুতা দান’ ছাড়া আর কিছু নয়: মান্না

আজ সোমবার রাতে জ্বালানি তেলের নতুন মূল্য নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এটি রাত ১২টার পর থেকে কার্যকর হচ্ছে। এ হিসাবে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকার বদলে বিক্রি হবে ১০৯ টাকায়। আর ১৩০ টাকার বদলে ১২৫ টাকায় বিক্রি হবে প্রতি লিটার পেট্রল। ১৩৫ টাকা থেকে কমে অকটেনের লিটারপ্রতি নতুন দাম ১৩০ টাকা।

জ্বালানি তেল আমদানি ও সরবরাহের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্র বলছে, গত অর্থবছরে জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে ৬৯ লাখ টন। এর মধ্যে শুধু ডিজেল বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৪৮ লাখ টন। আর পেট্রল ৪ লাখ ৪৬ হাজার এবং অকটেন ৩ লাখ ৯৩ হাজার টন বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে মূলত ডিজেলের দাম বাড়া-কমার কারণে পরিবহন ভাড়া ও বাজারে জিনিসপত্রের দামে প্রভাব পড়ে।
ইতিমধ্যে ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এতে সব পণ্যের দামও বেড়ে গেছে। তাই ডিজেলের যে পরিমাণ দাম কমানো হয়েছে, তাতে তেমন কোনো প্রভাব বাজারে পড়বে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Also Read: ঘোড়াটা আগে বাঁধা উচিত ছিল

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম প্রথম আলোকে বলেন, দাম কমানোর বিষয়টি হয়তো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু দাম ৫ টাকা কমানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই, অন্তত ১০ টাকা কমানো যেত। এতে পরিবহনমালিকেরা ভাড়া কমাবেন না। বাড়তি টাকা ব্যবসায়ীদের পকেটে যাবে; সরকারের কোনো রাজনৈতিক সুবিধা হবে না।

গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকে। এতে করে লোকসান শুরু হয় বিপিসির। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্ববাজারে ডিজেলের দাম ব্যারেলপ্রতি (১৫৯ লিটার) ১৭০ মার্কিন ডলার উঠেছিল। এটি কমে ১৩৪ ডলারে আসার সময় দেশে জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়েছে। এরপর দাম আরও কমে ১১৮ ডলারে নেমে আসে। বিশ্ববাজারে দাম কমার প্রবণতা এবং জ্বালানি তেলের শুল্ক কমিয়ে দেশে দাম কমানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এরপর গতকাল রোববার ডিজেলে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। আর ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববাজারে ডিজেলের দাম এখন ১৪০ ডলারের বেশি। তাই শুল্ক কমানোর পরও ঘাটতিতে আছে বিপিসি।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, শুল্ক কমানোয় ডিজেলের প্রতি লিটারে খরচ কমেছে ১ টাকা ৯০ পয়সা। আর দাম কমানো হয়েছে ৫ টাকা। বিশ্ববাজারে দাম চড়া থাকায় বিপিসিকে ভর্তুকি দিতে হবে। তবে বিশ্ববাজারে দাম কমলে আবার সমন্বয় করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

৬ আগস্ট থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের লিটারে ৩৪ টাকা এবং পেট্রল ও অকটেনে ৪৬ টাকা দাম বাড়ানো হয়েছিল। এরপর পরিবহন ভাড়া বেড়েছিল সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ। এর আগে গত নভেম্বরে লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়ানো হয় ডিজেল ও কেরোসিনের দাম। ওই সময়েও পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শুল্ক কমানোর যে সিদ্ধান্ত সরকার নিল, তা আগে থেকেই নিতে পারত। যখন গণপরিবহনের ভাড়া বেড়েছে, নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে, মানুষের ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ; তখন এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। তাই জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত ভোক্তার তেমন কোনো কাজে না–ও আসতে পারে।