Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত ছিলেন রোচ

‘লাঞ্চের মধ্যেই ৫ উইকেট নেবেন রোচ’

পরদিন টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। অথচ কাল দুপুরে ড্যারেন স্যামি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের মাঝ-উইকেট কিনা দখল করে নিলেন দুই দক্ষিণ আফ্রিকান!

দুজনকেই আপনারা চেনেন। একজন তো একসময়ের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ফাস্ট বোলার অ্যালান ডোনাল্ডই। আরেকজন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। মিডিয়া সেন্টার প্রান্ত থেকে ছুটে এসে ডোনাল্ড করছিলেন বোলিং, প্যাভিলিয়ন প্রান্তে সেই বলে ডিফেন্স করছিলেন ডমিঙ্গো, কখনো করছিলেন কাট।

Also Read: চ্যালেঞ্জটা জানেন সাকিব, তা জয় করার উপায়ও কি

গতকাল বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে

বাংলাদেশ দলের দুই কোচের এই ক্রিকেটের পুরোটাকেই আসলে বলতে পারেন একটা ‘শ্যাডো’। ডোনাল্ড দু-তিন পা দৌড়ে এসে থ্রোয়ারের মৃদু ঝাঁকুনিতে বল ছুড়ে দিচ্ছিলেন। ডমিঙ্গো হাসতে হাসতে ব্যাটিংয়ের নামে যেটা করলেন, সেটা আসলে কিছুক্ষণ ব্যাটসম্যানের চরিত্রে অভিনয় করার মতোই।

অভিনয়ের ছলে ম্যাচ শুরুর আগের দিন ড্যারেন স্যামি মাঠের উইকেটটাই হয়তো একটু বুঝে নিতে চাইলেন দুই দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ। অথবা পুরোটাই অকারণ, ‘টাইম পাস’।

Also Read: পদ্মা সেতু নিয়ে রোমাঞ্চিত সাকিবও

টেস্ট শুরুর আগের দিন কোচদের ভাবসাবই বলে দিচ্ছিল, দিনটা তাঁরা নির্ভার থাকতে চেয়েছেন। দলের অনুশীলনেও বাড়তি চাপ ছিল না। টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান যেমন কোনো পেস বোলারের বলই খেললেন না নেটে। থ্রোয়ার দিয়ে ছুড়ে মারা বলে কিছুক্ষণ যেন ব্যাট-বলের ঠোকাঠুকির শব্দটাই শুনতে চাইলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররা কেমন, সেটা তো অ্যান্টিগা টেস্টের দুই ফিফটির ইনিংসেই দেখা হয়ে গেছে। ম্যাচের আগের দিন তাহলে আর চাপ নেওয়ার দরকার কী!

Also Read: নতুন কিছু করতে চান না এনামুল

কেমার রোচ

সেন্ট লুসিয়ার উইকেট গতিময়। পেস বোলিংয়ের স্বর্গ। কিন্তু সেই স্বর্গেই সম্ভবত খেলার চাপ থেকে মুক্তি নিচ্ছেন বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। কাল বলতে গেলে কোনো কিছুই না করে অনুশীলনের সময়টা পার করেছেন তিনি। এই টেস্টে যে মুমিনুল হকেরও খেলার সম্ভাবনা কম, সেটি আবার বোঝা গেল, তাঁর ইতিউতি ঘুরে বেড়ানো দেখে। অবশ্য যাঁরা টেস্টটা খেলবেন বলে মোটামুটি কথা পাকা হয়ে আছে, অনুশীলনে তাঁরাও ছিলেন টাইম পাসের মেজাজে।

Also Read: কিট ব্যাগ আসেনি, তাই অনুশীলনে দেরি বাংলাদেশ দলের

অনুশীলনে নামার আগে টেস্ট অধিনায়ক সাকিব অবশ্য বললেন, এই টেস্টে যাঁর যাঁর ব্যাটিংয়ের সমস্যাগুলো সবাই ব্যক্তিগতভাবে সমাধানের চেষ্টা করবেন। তো সেটা যখন হবে, সমস্যা থেকে উত্তরণের কৌশলও ভিন্ন ভিন্ন হওয়াই স্বাভাবিক। তবে সবার সামর্থের যোগফলে সেন্ট লুসিয়ায় লক্ষ্য একটাই। টেস্টটা জিতে সিরিজ ড্র করা।
সেই লক্ষ্য বাংলাদেশ দল আপাতত নিজেদের মধ্যে রেখে দিলেই ভালো। এখানে অন্যদের বললেও যে সেটা বিশ্বাস করার লোক কমই আছে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের মিডিয়া ম্যানেজার থেকে শুরু করে রডনি বের ইন্টারনেট মেকানিক কেনসন, কেউই মনে করেন না যে বাংলাদেশ দল টেস্টটা পাঁচ দিনে নিতে পারবে!

Also Read: চোট সারছে না বলে দেশে ফিরে আসছেন ইয়াসির

কেমার রোচ

সেন্ট লুসিয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের মিডিয়া ম্যানেজার ডারিও ব্রাথলেকে কাল তাদের অনুশীলন শেষে বললাম, টেস্টের আগের দিন। একজন খেলোয়াড় তো লাগে কথা বলার জন্য। অধিনায়ক বা কেমার রোচকে কি দেওয়া যায়?

প্রশ্ন শুনে ব্রাথলের হাসিটা দুই কান পর্যন্ত পৌঁছে গেল। প্রথমে বললেন, ‘আরেকটু আগে বললে না কেন? সবাই তো এখন বাসে উঠে গেছে। আশা করি কাল (আজ) আমি দিতে পারব।’

Also Read: ‘ফিট’ হয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাচ্ছেন ‘রোমাঞ্চিত’ তাসকিন

এরপরই চেহারায় সিরিয়াসভাব এনে তাঁর দুষ্টুমি, ‘… কাল (আজ) লাঞ্চের পরপরই কথা বলে নিয়ো, কেমন? কেমার রোচ নিশ্চয়ই ততক্ষণে ৪৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নেবে।’
বললাম, বাংলাদেশ এতটা খারাপ এবার খেলবে না। ব্রাথলের তাৎক্ষণিক জবাব, ‘ঠিক আছে, তাহলে টি ব্রেকে, টি পর্যন্ত তো হয়ে যাবে আশা করি।’

বিকেলে হোটেলে ফিরে দেখি ওয়াইফাই ক্যারিবীয় গতিকেও হার মানিয়ে দিচ্ছে। ক্যারিবীয় পেস বোলারদের গতি নয় অবশ্য, এখনকার মানুষের ঢিমেতালের জীবনযাত্রার কথা বলছি। মেকানিক খবর দেওয়া হলো। এলেন রাস্তাফারিয়ান ক্যাপ পরা তরুণ কেনসেন।

Also Read: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলা দেখা যাবে বিনা মূল্যে

প্রথম ম্যাচের সেরা রোচ

কাজের কথার পর যখন বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রসঙ্গ এল, কেনসেন ‘হে হে হে’ করে অদ্ভুত এক হাসি হাসতে লাগলেন। হাসতেই হাসতেই বললেন, ‘আগের টেস্টটা তোমরা যা খেললে! এখানে তো আরও বেশি পেস, বাউন্স। তিন দিন, বড়জোর চার দিন… কী বলো?’

Also Read: অ্যান্টিগায় না থেকেও আছেন তাসকিন

বললাম, একটা ইনিংস বা টেস্ট তো খারাপ হতেই পারে। আর বাংলাদেশ কিন্তু খুব আত্মবিশ্বাসী, এখানে ভালো খেলবে। কেনসেন যেন তাতেও মানতে পারলেন না অ্যান্টিগায় বাংলাদেশের ১০৩ রানে অলআউট হওয়া, চার দিনের হেরে যাওয়া, ‘আরে এ রকম হতে পারে বড় দলের বিপক্ষে। ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া। সবারই হয়। তা–ই বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ!’

‘ব্রাথলে, কেনসেন… তোমরা ইতিহাস দেখার অপেক্ষা করো। ড্যারেন স্যামি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের ভিন্ন কিছু করার ইতিহাস।’ মুখে কৃত্রিম হাসি ঝুলিয়ে কথাগুলো মনে মনে বলেই নিজেকে প্রবোধ দিলাম। মুখে বলার সাহস হলো না। ওদের রসিকতা এরপর কোনদিকে যায় কে জানে!

Also Read: ১০০ রানের কম লক্ষ্য, তবু হেরেছে যে দুদল