Thank you for trying Sticky AMP!!

জামাল ভুঁইয়াদের অনুশীলনের ছবিটি গত বছরের আগস্টে। সে বারই বাংলাদেশ দল দেশের মাটিতে শেষবার অনুশীলন করেছিল

২২ বছর পর কেমন হবে বাংলাদেশের ফুটবলারদের সৌদি আরব সফর

সর্বশেষ ২০০১ সালে বাংলাদেশ ফুটবল দল গিয়েছিল সৌদি আরব। দাম্মাম শহরে সেবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে খেলেন আমিনুল হকরা। ভিয়েতনামের সঙ্গে ড্র দিয়ে শুরু। মঙ্গোলিয়াকে ৩ গোলে উড়িয়ে স্বাগতিক সৌদি আরবের কাছে হার ৩ গোলে। জর্জ কোটানের সেই বাংলাদেশ দলের গোলকিপার আমিনুল দুর্দান্ত খেলেন টুর্নামেন্টজুড়ে।

সেই সফরটা আজও মনে আছে গোলকিপার বিপ্লব ভট্টাচার্যের। পেছন ফিরে বিপ্লব বলছিলেন, ‘সবাই খুব ভালো খেলেছিল দাম্মাম সফরে। তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ফেরা ছিল আমাদের জন্য বিশাল ব্যাপার। দারুণ সফর ছিল সেটি। আমি বলব, সফল এক সফর।’ বিপ্লব প্রসঙ্গক্রমে জানালেন, সেই সফরে ডিফেন্ডার আবু ফয়সাল এক জার্সির সঙ্গে আরেক সেটের শর্টস পরেন। বাংলাদেশকে জরিমানা করা হয় এ কারণে। অবশ্য তা বড় কোনো জরিমানা ছিল না।

২২ বছর পর আজ আবার বাংলাদেশ ফুটবল দল যাচ্ছে সৌদি আরবের মদিনা শহরে। এবার অবশ্য কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে নয়। আগামী ২২-২৮ মার্চ সিলেটে ব্রুনাই ও সেশেলকে নিয়ে সিলেটে আয়োজিত তিন জাতি টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি নিতে।

Also Read: তাহলে কি আর্জেন্টিনায় খেলা হচ্ছে না জামাল ভূঁইয়ার

সফরে থাকা-খাওয়া ও স্থানীয় পরিবহন–সুবিধা দেবে সৌদি ফুটবল ফেডারেশন। তাদের কাছে দুটি অনুশীলন ম্যাচও চেয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি সৌদি আরব ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় এক সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাফুফে। সেটারই অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে এই আতিথ্য দেবে সৌদি ফেডারেশন।

দলের একাংশ নিয়ে আজ রাতে সৌদি আরবগামী বিমানে উঠছেন হাভিয়ের কাবরেরা

বাংলাদেশ দলের নির্বাচিত ২৭ খেলোয়াড়ের মধ্যে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের ১২ খেলোয়াড়ের ১১ জন আজ রাত ১টায় উঠছেন সৌদি আরবগামী বিমানে। কিংসের আরেক খেলোয়াড় তারিক কাজী ফিনল্যান্ড থেকে সরাসরি যাবেন দাম্মাম।

প্রধান কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ও ফিটনেস কোচ ও ইভান রাজলকও আজ যাবেন।
শেখ রাসেলের ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও পুলিশের ফরোয়ার্ড রবিউল ইসলাম যাবেন তাঁদের পাসপোর্ট–সংক্রান্ত জটিলতার সমাধান হলে। বাকি খেলোয়াড়েরা যাবেন আগামীকাল রাত ১টার ফ্লাইটে।

Also Read: কাবরেরার প্রাথমিক দলে এলিটা কিংসলি, ক্যাম্প সৌদি আরবে

সৌদি আরবে এমনিতে তাপমাত্রা একটু বেশি। গরমের মধ্যে দেশটিতে আবাসিক ক্যাম্প করা কতটা ফলপ্রসূ হবে, এ প্রশ্ন আছে কারও কারও মনে। তবে বাংলাদেশও গরমের দেশ হওয়ায় সমস্যা হবে না মনে করছে বাফুফে।

মদিনায় আবহাওয়া এখন সকালে ২৩-২৪ ডিগ্রি থাকে। আজ দুপুরে তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি। এমন আবহাওয়ায় অবশ্য বাংলাদেশের ফুটবলাররা অভ্যস্ত। বাংলাদেশ দল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা ও সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যেকোনো সময়ে অনুশীলন করতে চেয়ে সৌদি ফুটবল ফেডারেশনকে লিখেছে।

দেশের মাটিতে বাংলাদেশ দলের সর্বশেষ অনুশীলন হয়েছিল গত বছরের আগস্টে

মদিনার প্রিন্স সুলতান বিন আবদুল আজিজ স্পোর্টস সিটিতে অনুশীলন চলবে। ১৬ মার্চ পর্যন্ত ১০-১১টি অনুশীলন সেশন পাবে বাংলাদেশ দল। আর এই অনুশীলন সেশনগুলো ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট ছাপিয়ে আগামী জুনে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতিতেও কাজে লাগবে বিশ্বাস কোচ কাবরেরার।

তিনি বলেছেন, ‘সৌদি আরবের অনুশীলন–সুবিধা কেমন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের লক্ষ্য হলো, মদিনায় নিরবচ্ছিন্নভাবে অনুশীলন করা। আশা করি, এই প্রস্তুতি সাফেও কাজে লাগবে।’

সিলেটে খেলা হলেও বিদেশে ক্যাম্প করার পক্ষে টিম ম্যানেজমেন্টের যুক্তি, দেশে অনেক সময় অনুশীলনের পুরো মনোযোগ রাখতে পারেন না ফুটবলারদের। পরিবার বা বন্ধুবান্ধবকে সময় দিতে হয়। কিন্তু বিদেশে অনুশীলনের প্রতি মনোযোগ থাকে শতভাগ।

এর আগে বিভিন্ন সময় জাতীয় দল বিদেশে অনুশীলন ক্যাম্পে করেছে। জেমি ডের সময় কাতারের একাধিকবার ক্যাম্প হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ডে হয়েছে। ১৯৯৫ সালে অটো ফিস্টারের সময় মালয়েশিয়ায় ক্যাম্প হয়েছে এক মাস। তবে সৌদি আরবে এই প্রথম ক্যাম্প করছে বাংলাদেশ ফুটবল দল।  

Also Read: জামাল ভূঁইয়াদের সঙ্গে কাজ করবেন নতুন যে তিন বিদেশি

এ সফরে বাংলাদেশ কোচের বড় লক্ষ্য স্ট্রাইকারদের তৈরি করা। কদিন আগেও যাকে একাদশে মূল স্ট্রাইকার রাখা হয়েছিল, সেই মোহামেডানের স্ট্রাইকার সাজ্জাদ হোসেন দল থেকে বাদ পড়েছেন। চোট ও অন্যান্য কারণে সাজ্জাদ লিগে খেলার সুযোগ পাননি তেমন।

লিগে স্থানীয়দের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ গোল করা আবাহনীর ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজকে দলেই নেননি কোচ। শৃঙ্খলার কারণ দেখিয়ে বাদ দেওয়া হয়েছে নাবিবকে। যাঁদের নিয়েছেন, তাঁদেরও গোলখরা। মূল স্ট্রাইকার সুমন রেজা এবারের প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বের ১০ ম্যাচে কোনো গোলই করতে পারেননি। ১ গোল করা মতিন মিয়া আছেন দলে।

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অনুশীলন

ফর্টিস এফসির তরুণ গোলকিপার মিতুল মারমাকে নেওয়া হয়েছে দলে। লিগে ভালো করার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। টিম ম্যানেজমেন্টের আশা, কিংসের গোলকিপার আনিসুর রহমানের পর দ্বিতীয় স্থানের জন্য আবাহনীর শহিদুলের সঙ্গে জোর টক্কর দেবেন মিতুল। কোচিং স্টাফের এক সদস্যে বলছেন, ‘বিল্ডআপের সময় পায়ে খেলা গোলকিপার খুব আমাদের দেশে। মিতুল সেই জাতের গোলকিপার যে পায়ে খেলতে পারে।’

মুক্তিযোদ্ধার তরুণ গোলকিপার শ্রাবণকে নিয়েও আশা টিম ম্যানেজমেন্টের। শ্রাবণ চেষ্টা করে গেলে ভবিষ্যতে আমিনুলের মতো গোলকিপার হতে পারবে মনে করেন ওই সদস্য।  বাফুফের একাডেমি থেকে উঠে আসা ফর্টিসের মিডফিল্ডার মাহবুবুর রহমান জনিকে নিয়েও আছে বড় আশা। মদিনার এই ১০ দিনের আবাসিক ক্যাম্প তাঁদের আরও পরিণত করবে বলেই বিশ্বাস কোচের।

Also Read: বাফুফেতে এসে মুগ্ধ আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী