অনেক ছবি

ঝকঝকে রোদ।

নীল আকাশ।

আকাশে সাদা সাদা মেঘ।

পাখি উড়ে যায়।

ছোট বড় পাখি।

একটা লাল ঘুড়ি।

মন কি আমাদের পাখি?

ঘুড়ি আর পাখি।

পাখি আর ঘুড়ি।

বটগাছ।

গাছের ঝুরি।

গাছের গুঁড়িতে ছোট ছোট খোঁড়ল। খোঁড়লে ইঁদুর। বটের ডালে কাক।

নীল রোদে বটের পাতা ঝিলমিল করে।

একটা মরা ইঁদুর।

একটা দাঁড় কাক।

বটের পাশে একটা পুকুর।

পুকুরে ব্যাঙ।

কচুরিপানা।

লাফ দেয় ব্যাঙ।

ব্যাঙ লাফ দেয় সাপের মাথায়।

সাপ হিলহিল করে চলে যায় পানির গভীরে।

ছোট পুকুর।

পুকুরে খলশে মাছ।

কিছু তেলাপিয়া।

তখন বৃষ্টি আসে।

বৃষ্টি মানে ঝুম।

বটগাছ ভিজতে থাকে। কাক ভেজে। ব্যাঙ ভিজতে থাকে।

নীল আকাশ।

ঝকঝকে রোদ ম্লান হয়ে যায়। এই রোদ। এই বৃষ্টি।

এই খেলা।

আজ কি খ্যাঁকশিয়ালের বিয়ে হবে। রোদ হচ্ছে। বৃষ্টি হচ্ছে। কী মজা! কী মজা!

এই আশ্বিন মাস।

বর্ষা গেছে।

আসবে শরৎ।

তারপর হেমন্ত।

বৃষ্টি চলে গেল।

আবার রোদ উঠল।

আবার ব্যাঙ তাকাল পুকুরে।

আবার ইঁদুর ছুটল বটের ডালে ডালে।

আবার কাক ডেকে উঠল কা কা করে।

আবার ঘুড়ি উড়বে আকাশে।

আমি তখন ঘরের জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকব দূরের মাঠে।

ওখানে দুটো ছাগল।

সবুজ পাতা ছাওয়া বকুলগাছ।

একটা ফুটবল।

দুটো বাঁশ পুঁতে রাখা।

ওটা খেলার মাঠে বার পোস্ট। সারা দিন পোলাপানে বল খেলে।

আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি।

আমার অসুখ।

রিউমেটিক ফিভার।

গায়ে হাতে ব্যথা।

আমি ফুটবল খেলতে পারি না। আমি ছুটতে পারি না।

আমি দৌড়াতে পারি না। আমি ঘরে বসে ছবি আঁকি। যা দেখি তার ছবি আঁকি।

যা ভাবি তার ছবি আঁকি। আমার বাবা বলেন, তোর ছবি একদিন খুব নাম করবে। লোকে দেখে অবাক হবে।

কত ধরনের ছবি যে আমার মাথায় প্রতি মুহূর্তে আঁকা হয় তার কোনো হিসাব নেই।

আমি শুধুই ছবি আঁকি। যখন স্নান করি তখন জলের ছবি আঁকি। যখন রাতে ঘুমাই তখন ঘুমের মধ্যে ছবি আঁকি। যখন একা একা হেঁটে যাই তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে ছবি আঁকি। আকাশে সাদা সাদা মেঘে হাতি থাকে। ময়ূর থাকে। রবীন্দ্রনাথ থাকেন। হাত তুলে বঙ্গবন্ধু থাকেন।

আমি বঙ্গবন্ধুর ছবি আঁকি। আমি রবীন্দ্রনাথের ছবি আঁকি। আমি আঁকতেই থাকি।

রংতুলি দিয়ে আঁকি।

জলরং দিয়ে আঁকি।

মনে মনে আঁকি।

হাত দিয়ে আঁকি।

আমার চারপাশে অনেক ছবি। অনেক রং। অনেক রেখা।

অনেক গান।

অনেক সুর।

অনেক কথা।

অনেক ছবি।