কার্তিকে কোমলগান্ধার

পিশাচিনী-পিষ্ট ওই অবরুদ্ধ মুমূর্ষু নগর

বিচিত্র নখরে ছিন্ন-দীর্ণ বীজতলা কবিতার

সব ভোলানোর জাদু জানে সকরুণ এ অরুণাপল্লি

                                    বর্ষাস্নানরত অপার্থিব এক শান্তিধাম

এইখানে ডানাচ্যুত কজন গায়ক-পাখি

ফিরে পেল উড্ডয়নশক্তি, হারানো পালক

মাৎস্যন্যায় পেরোনো হাঁসফাঁস এক মৎস্যমানবী

চাইল বৃষ্টির সুতো ছুঁয়ে সাঁতরাতে মেঘসরোবরে

দীর্ঘাঙ্গী সারস গূঢ় গ্রীবা নামিয়ে রইল বসে দিনমান

                        ক্লান্তপ্রাণ মোহনীয় ভাস্কর্য-ভঙ্গিতে

সবুজ-সাম্রাজ্যে এসে বিদগ্ধ বিষণ্ন ফুসফুস

                        জিবে তুলে নিল সবুজাভ সুরা

শুধু বৃষ্টিসুধা আজ প্রার্থিত পানীয়

বর্ষাধ্বনি—কেবল সুরেলা গান

জলমগ্ন তৃণই একমাত্র বিশ্রাম-বিছানা

মেঘের ঠিকানা শুদ্ধ মাতালের মানস-মঞ্জিল

বরষার জলরং ছবি নিজেই নিজের চিত্রকর

তাতে চুমু খায় স্বপ্নোত্থিত বিহ্বল নিপল

এইখানে সুদর্শন হরিণের মৌনতা মুছে যাক

মৃত নক্ষত্রের ঘুম ঘুচে যাক, যুক্ত হোক জন্মান্তর

নগরে নিহত যত নান্দনিকতার নৃত্যের উচ্ছ্বাসে

দূর অতীতের রোদে ঝলসানো মৃত্তিকা-দেয়াল ফুঁড়ে

অলৌকিক যে হাওয়ার মৃদু লাফ—ঝালর-ঝাপট

তার সংকল্প জানি শুধু আমি: দলছুট অস্থির জোনাকি

পাতার পরম ইচ্ছা, অন্ধকার এবং জ্যোৎস্নার

দ্বন্দ্ব, আর প্রকৃতিসম্মত ছন্দ যে জানে না

হাড়ের ভেতরে বসে তার সে হাওয়া আজ

নিশ্চিত শোনাবে এ কার্তিকে কোমলগান্ধার