'অশ্লীলতা সাহিত্যে নয়, থাকে পাঠকের মনস্তত্ত্বে'

শোভা দে। ছবি: সাহাদাত পারভেজ
শোভা দে। ছবি: সাহাদাত পারভেজ
ভারতের জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক শোভা দে লেখেন ইংরেজিতে। উপন্যাসে যৌনতাকে নিরাবরণভাবে উপস্থাপন করে নানা সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন তিনি। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফয়জুল লতিফ চৌধুরী

ফয়জুল লতিফ চৌধুরী: ১৯৮৯ সালে সোশ্যালাইট ইভনিংস বইটির মধ্য দিয়ে কথাশিল্পী হিসেবে আপনার আত্মপ্রকাশ। আপনার প্রতিটি বইই ‘বেস্ট সেলার’। কিন্তু লেখক ছাড়াও আপনার রয়েছে অনেক পরিচয়—তরুণ বয়সে ছিলেন মডেল, কাজ করেছেন কপিরাইটার হিসেবেও। একসময় সাংবাদিকতা করেছেন, আপনার কলাম খুব পাঠকপ্রিয়। এত কিছুর মধ্যে আমাদের কাছে আপনার ঔপন্যাসিক পরিচয়টিই মুখ্য। আশি দশকের শেষ ভাগে কোন প্রেক্ষাপটে কথাসাহিত্য রচনার জন্য কলম হাতে তুলে নিয়েছিলেন আপনি?

শোভা দে: উপন্যাস লিখতে শুরু করা ঠিক আমার নিজের কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। সারা জীবনই আমার এ রকম ঘটেছে যে কেউ হয়তো আমার মধ্যে কোনো প্রতিভা দেখতে পেল এবং কোনো একটা কাজে উদ্বুদ্ধ করল, আমিও ‘না’ করতে পারলাম না। উপন্যাস লেখার ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটিই ঘটেছে আমার। তখন ‘পেঙ্গুইন ইন্ডিয়া’ সবে ভারতে এসেছে। প্রকাশনার প্রথম বছর তারা একযোগে নয়টি বই প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়। পেঙ্গুইন ইন্ডিয়ার কর্ণধার ডেভিড দাবিধর আমাকে উপন্যাস লেখার প্রস্তাব দেন। আমার সাংবাদিকতা, লেখালেখি, পত্রিকায় প্রকাশিত কলাম পড়ে তাঁর মনে হয়েছিল, আমার দ্বারা উপন্যাস লেখা সম্ভব। তাঁর প্রস্তাবের পর আমিও ভাবলাম, মন্দ কী—শুরু করেই দেখি না। যদি ভালো লেগে যায় চালিয়ে যাব, ভালো না লাগলে আর লিখব না।
ফয়জুল: আপনার সব উপন্যাসের আখ্যান গড়ে উঠেছে নগর ভারতের প্রেক্ষাপটে, ভারতের শহুরে নাগরিকদের কেন্দ্র করে। নগর ভারতের কোন বৈশিষ্ট্যগুলো আপনাকে আকর্ষণ করে?
শোভা: আমি নগর ভারতের সন্তান, নগরের মধ্যেই আদ্যোপান্ত জারিত। এটা আমার জীবনেরই বাস্তবতা। বেশির ভাগ লেখক তাঁর নিজস্ব গণ্ডিতে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, যা তিনি প্রত্যক্ষভাবে জানেন, সেটি নিয়েই লিখতে ভালোবাসেন। আমিও কখনো অভিজ্ঞতার বাইরে গিয়ে বানিয়ে বানিয়ে লিখতে চাইনি। গ্রামীণ ভারত নিয়ে আমি লিখতে চাই না, কারণ গ্রামীণ ভারত আমার অভিজ্ঞতার অন্তর্ভুক্ত নয়। যদিও সাংবাদিক হিসেবে ভারতের গ্রামগঞ্জকে যতটা সম্ভব আমি ধারণ করার চেষ্টা করি, করেছি; কিন্তু কথাসাহিত্যের ক্ষেত্রে অবশ্যই আমি কেবল নাগরিক ভারতকেই বেছে নিই—বিষয়বস্তু ও ধাঁচ—উভয় দিক থেকেই। কারণ, আমি তো কেবল নগর ভারতকেই প্রত্যক্ষভাবে চিনি এবং জানি।
ফয়জুল: আপনার উপন্যাসগুলোয় পাওয়া যায় উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারতের নাগরিক অভিজাত শ্রেণির স্বেচ্ছাচারী জীবনধারা ও তাদের সামাজিক মূল্যবোধ ধ্বংসের বিবরণ। আপনার উদ্দেশ্য কি তবে অভিজাত নাগরিক মানুষের পঙ্কিলতার চিত্র এঁকে সমাজকে জাগিয়ে তোলা?
শোভা: দেখুন, মুখ্যত আমি একজন গল্পকার, কোনো নীতিবাগীশ নই। আমি সাধুসন্তুও নই। মানুষের জন্য আদর্শ কথা রচনা করা আমার কাজ নয়। যে কাহিনি আমি বলতে চাই, সে কাহিনিই আমি লিখে থাকি। তবে সে কাহিনি আমি এমনভাবে লিখি, যাতে পাঠক তার নিজের মতো করে উপলব্ধি করতে পারে। একজন পাঠক তার অভিরুচি অনুযায়ী আমার কাহিনির মর্মার্থ করবে। এরপর কাহিনিকে সে কীভাবে দেখবে, সেটা তো তারই ওপরই বর্তায়, তাই না?
ফয়জুল: সব সময় নারীচরিত্রই আপনার উপন্যাসের ‘প্রটেগনিস্ট’ বা নায়ক। তবে নারী নিয়ে আপনার অনুসন্ধিৎসা প্রচলিত রীতি থেকে ভিন্ন। সিস্টার্স থেকে শেঠজি—সব উপন্যাসেই আছে নায়িকার ক্রমপরিবর্তন বা ‘মেটামোরফসিস’। দুর্বল নারী নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে উঠেপড়ে লাগেন, দুর্বল নারীকে সবল হয়ে উঠতে দেখা যায়। তবু সমালোচকেরা বলেন, নারীকে নিয়ে লেখার পেছনে আপনার কোনো নারীবাদী মহৎ চেতনা নেই, বরং রয়েছে নারীর যৌনজীবনকে খোলাখুলি উপস্থাপন করে রসাল আখ্যান তৈরির ইচ্ছা। কী বলবেন এ বিষয়ে?
শোভা: এই যে শুনুন, আমি কিন্তু কখনোই কোনো অভিযোগের বিরুদ্ধে জবাব নিয়ে রাস্তায় নামি না। আমার মন যেভাবে চায়, আমি লিখি সেভাবেই। নিজের উপন্যাস বিনির্মাণের মাধ্যমে সময় নষ্ট করার পক্ষপাতি আমি নই। আবার কেউ কোনো ‘লেবেল’ সেঁটে দিলে তা নিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলার ধাতও নেই আমার। এমনকি কোনো লেখার গায়ে ‘নারীবাদী’ বা অন্য কোনো ‘লেবেল’ সেঁটে দিতেও আমি নারাজ।
ফয়জুল: আপনি কি তাহলে নিজেকে ‘নারীবাদী’ বলতেও চান না?
শোভা: ‘নারীবাদ’ শব্দটার যে রাজনৈতিক মর্মার্থ, তা আমার মোটেও পছন্দ নয়। আমার কাছে নারীবাদের একটিই অর্থ, তা হলো ‘সমতা’। আর এর উদ্দেশ্যে হলো সমাজে নারীর মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করা। একজন পুরুষও নারীবাদী হতে পারেন, যদি তিনি নারীর সমতার নীতিতে বিশ্বাস করেন এবং নারীর মানবিক সত্তাকে সমান গুরুত্ব দেন।
আমার লেখালেখি নিয়ে অন্যরা, বিশেষত সমালোচকেরা যা ভাবেন বা বলেন, সেসব বিচারের কাজ আমার নয়। কারণ, সমালোচনা করার অধিকার তাঁদের আছে। হ্যাঁ, আমার বইয়ে আমি নারীকে ‘ভিকটিম’, করুণার পাত্র বা শহীদ হিসেবে চিত্রায়িত করতে পছন্দ করি না। বরং কাহিনির শেষে নায়িকা চরিত্রটিকে বিজয়ীর বেশে দেখতে ভালোবাসি। কোনো নারীবাদী অভিলক্ষ্য এর মধ্যে আদৌ নেই। হয়েছে কি, আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে, প্রতিকূলতাকে পরাস্ত করে জীবনকে সামনে ঠেলে এগিয়ে গেছি আমি। আমি চাই ভারতের অন্য মেয়েরাও এ রকমভাবে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে জীবনে এগিয়ে চলুক। আরেকটি কথা, আমার উপন্যাসে যৌনতার বিষয়টি অবারিতভাবেই উপস্থিত। আমার লেখায় যৌন বিষয়গুলো কেন খোলামেলাভাবে উপস্থাপিত হয়, তার ব্যাখ্যা আমি দেব না। কারণ, একজন পুরুষ লেখক যখন কাহিনিতে যৌনতাকে উপস্থাপন করেন, তখন তাঁকে জবাবদিহি করতে হয় না।
ফয়জুল: জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হলেও আপনার বিরুদ্ধে অশ্লীলতার অভিযোগ উত্থাপিত হয়ে আসছে শুরু থেকেই। বলা হয়, আপনার বাণিজ্যিক সাফল্যের মূল কারণ অপরিমেয় যৌনতার যথেচ্ছ ব্যবহার। কাহিনি রচনায় নারী-পুরুষের যৌনতার অত্যধিক ব্যবহার নিয়ে যে পৌনঃপৌনিক অভিযোগ আপনার বিরুদ্ধে, কী বলবেন এ সম্পর্কে?
শোভা: আচ্ছা আপনিই বলুন, গল্প-উপন্যাস লেখার সময় কতটা যৌন বিষয় ব্যবহার করা যাবে বা কতটা যাবে না—এমন কোনো সংবিধি কি আছে? ‘এই পর্যন্ত ঠিক আছে’, ‘এর বেশি হলে বরদাশত করা হবে না’, ‘এটা অশ্লীল’, ‘ওটা কামনা-উদ্দীপক’, ‘এটার প্রয়োজন ছিল না’, ‘ওটা বাণিজ্যিক’—এসব বাজে কথা। পরিষ্কার বলি, যৌনতা নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই। আমার বিশ্বাস, আমার যারা পাঠক, তাদেরও কোনো সমস্যা নেই। আমার যদি মানুষের জীবনের যৌনতা নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হয়, তবে কেন লিখব না! আবার যৌনতা নিয়ে লিখতে মন না চাইলে একে বাদ দিয়েই লিখব। আমার এমন একাধিক বই আছে, যেখানে যৌনতার ব্যবহার নেই। সেগুলোও তো বেস্ট সেলার হয়েছে। এটা লেখকের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়।

আমার উপন্যাসে যৌনতার বিষয়টি অবারিতভাবেই উপস্থিত। আমার লেখায় যৌন বিষয়গুলো কেন খোলামেলাভাবে উপস্থাপিত হয়, তার ব্যাখ্যা আমি দেব না

ফয়জুল: তাহলে কি সাহিত্যে অশ্লীলতা বলে কিছু নেই?
শোভা: না, নেই। অশ্লীলতা সাহিত্যে নয়, থাকে পাঠকের মনস্তত্ত্বে। একজন লেখক যা লিখছেন, তা যদি বাস্তবতারই প্রতিফলন হয়, আর যৌনতা যদি হয় মানুষের বাস্তব জীবনের উপাদান, যদি উপন্যাসের যৌনতা ভায়োলেন্সের জন্ম না দেয়, তবে সাহিত্যে অশ্লীলতার প্রশ্নটি প্রাসঙ্গিকই নয়। যে জিনিসটি প্রকৃতই অশ্লীল, তা হলো ঘৃণা—মানুষের প্রতি মানুষের ঘৃণা।
ফয়জুল: ২০১৩-এ প্রকাশিত শেঠজি আপনার সাড়া জাগানো উপন্যাস। ভারতীয় রাজনীতি ও রাজনীতিকদের পঙ্কিল দিকগুলো এ উপন্যাসে পরিষ্কারভাবে ধরা আছে। উপন্যাসের নায়িকা অমৃতা চরিত্রটি খুবই অন্য রকম। সে প্রভাবশালী রাজনীতিক শেঠজির ছেলের বউ। দেখা যায়, পরিবারে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সে নিয়মিতভাবে শ্বশুরের শয্যাসঙ্গিনী হচ্ছে, এমনকি দেবরেরও। যৌনতার ব্যাপারে অমৃতার এই যে বাছবিচারহীনতা, স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য একজন নারীর যেকোনো কিছু করতে পারার এহেন মানসিকতা—উপন্যাসে এতটা কি দরকার ছিল, যেখানে আপনার লক্ষ্য পুরুষ রাজনীতিকদের পঙ্কিল চরিত্র উদ্ঘটন?
শোভা: ছিল, প্রচণ্ডভাবে ছিল। না হলে সম্ভব হতো না। অমৃতা তো সে রকমই একটা চিজ—তাই না? ওর যে রকম বেলেল্লাপনা—অমৃতা এক জটিল চরিত্র। আমার পক্ষে অন্য কোনোভাবে অমৃতাকে চিত্রায়িত করা সম্ভব ছিল না। এখানে আমারও একটা বড় প্রশ্ন আছে—মেয়েদের যৌনতা সমাজের কাছে এত উদ্বেগের বিষয় কেন? এর জবাব কারও কাছে পাওয়া যায় না।
ফয়জুল: আনসার্টেইন লিয়াজোঁ বাদ দিলে আপনার সব বইয়ের প্রচ্ছদ নাম ইংরেজি ভাষার অক্ষর ‘এস’ দিয়ে শুরু। এ জন্যই হয়তো এ বইয়ের নাম শেঠজি, কিন্তু কাহিনিভাগে নায়িকা অমৃতার আনুপূর্ব আধিপত্য অনস্বীকার্য। আমার তো মনে হয়, এ উপন্যাসের নাম ‘অমৃতা’ হলেই ভালো হতো।
শোভা: হ্যাঁ, বইটার নাম ‘অমৃতা’ হতে পারত। তবে আমি শেঠজিকে কেন্দ্র করেই উপন্যাসটি লিখতে শুরু করেছিলাম। আমি কিন্তু খুব ‘অর্গানিক্যালি’ লিখে থাকি। লেখার শুরুতে মাথার মধ্যে হয়তো একটা কাঠামো থাকে। তবে আমি তাতে আটকে থাকি না; লেখা যত অগ্রসর হয়, কাহিনির নিজস্ব একটা জীবনধারা জন্ম নেয়—কাঠামোটা বদলে যেতে থাকে নিজস্ব গতিতে, চরিত্রগুলো তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যমতো পরিস্ফুট হতে থাকে। মূল পরিকল্পিত কাঠামো থেকে ক্রমে দূরে সরে যেতে থাকে আখ্যানটি। যখন প্রথম শেঠজি লিখতে শুরু করলাম, লিখতে লিখতে কীভাবে যেন অমৃতা চরিত্রটি আমার চিন্তাস্রোতের দখল নিয়ে ফেলল, অমৃতাকে কেন্দ্র করে ফেনিয়ে উঠতে থাকল কাহিনি। আর এটা ঘটল স্বতঃস্ফূর্তভাবেই। অমৃতার জীবনটা এখনো আমাকে ভাবায়।
ফয়জুল: মাত্রই বললেন, লেখার গতির সঙ্গে আপনার পরিকল্পিত মূল আখ্যান এবং চরিত্রগুলো বদলে যেতে থাকে। তাহলে কীভাবে একটি উপন্যাস লেখেন আপনি?
শোভা: উপন্যাসের কাহিনি তো ভেবেচিন্তে গড়ে ওঠে না। এটা হঠাৎ করে মাথার চলে আসে—যেন কালো মেঘের বিদ্যুচ্চমক।
ফয়জুল: শেঠজি উপন্যাসিটি যখন লিখতে আরম্ভ করলেন, সে সময় ভারতীয় কোনো রাজনীতিবিদের কথা কি আপনার মানসপটে ছিল না?
শোভা: সম্ভবত ছিল। হয়তো শেঠজির মতো অনেক ব্যক্তির সঙ্গে জীবনে নানা সময় আমার দেখা হয়েছে। মনে ছাপ রেখে গেছে তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো। সব মিলিয়ে হয়তো-বা একজন রাজনীতিবিদ নায়কের আদল আমার মনের মধ্যে গড়ে উঠেছে ধীরে ধীরে; এবং ভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট ভাবতে গিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ওই আদল। আসলে ঠিক কোনো একজন বিশেষ রাজনীতিক নয়; বরং ঘুণে খাওয়া, পচা-গলা ভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করতেই ‘শেঠজি’ চরিত্রটি মূর্ত হয়ে উঠেছে।
ফয়জুল: সুইট সিক্সটিন বইয়ে সন্ধ্যা নামের এক ভারতীয় তরুণীর গোপন কথাগুলো জানিয়েছেন আপনি। এই বই লেখার পেছনে আপনার উদ্দেশ্য কী ছিল?
শোভা: বইটি মূলত লেখা হয়েছে ভারতের তরুণ-তরুণীদের জন্য। কৈশোর আর যৌবনের মাঝখানের সময়টিতে তরুণ-তরুণীরা খুব ‘ভালনারেবল’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ অবস্থায় থাকে। আমি দেখেছি যে বিশেষ করে তাদের জন্য তেমন কিছু লেখা হচ্ছে না। কারও লেখায় শোনা যায় না তরুদের কণ্ঠস্বর। ফলে পাশ্চাত্যের বইই তাদের একমাত্র পাঠ্য। আমি এই ভারসাম্যহীন অবস্থা দূর করার ছোট একটি প্রয়াস নিয়েছি। সন্ধ্যা এক ভারতীয় তরুণী। সুইট সিক্সটিন তারই আলেখ্য।
ফয়জুল: নতুন কোনো উপন্যাস কি লিখছেন?
শোভা: প্রতিদিনই আমি কিছু না কিছু লিখি। কমপক্ষে এক হাজার শব্দ তো লেখা হয়ই। কিন্তু এ মুহূর্তে কোনো উপন্যাস লিখছি না। মাথায় কয়েকটি কাহিনি ঘুরপাক খাচ্ছে। হয়তো লিখে ফেলব, আবার এমনও হতে পারে শেষ অবধি হয়তো উপন্যাসটি আর লেখাই হবে না। আসলে কাহিনিটি দানা বাঁধেনি এখনো। তাই পরবর্তী উপন্যাস কী নিয়ে লিখব, এখনই সেটি বলা যাচ্ছে না।