বিরোধ মেটানোর নাম করে ২১ ঘণ্টা ধরে আটক

বিরোধ মেটানোর নাম করে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে ঢাকার মিরপুর মডেল থানার পুলিশ ৭০ বছরের বৃদ্ধা শাশুড়ি, পাঁচ নারী, এক কিশোরসহ আটজনকে তুলে এনে থানায় আটকে রেখেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সাড়ে ২১ ঘণ্টা পার হলেও এখনো তাঁদের ছাড়া হয়নি।

আটক পাঁচ নারীর মধ্যে একজন প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক (৪৮), একজন গৃহিণী (৪০), একজন মেডিকেলের ছাত্রী (২১), একজন ইডেন কলেজের ছাত্রী (১৯) ও একজন উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী (১৭)। আটক লোকজনের মধ্যে এক কিশোর মাধ্যমিক পাস করেছে। আজ শুক্রবার ঢাকার নটর ডেম কলেজে তাঁর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। আটক থাকায় সে পরীক্ষা দিতে পারেনি।

ঘটনাটির শুরু সম্পত্তি নিয়ে। থানা থেকে ফোন করে আটক করা ব্যক্তিদের এক স্বজন প্রথম আলোকে বলেন, সহায়সম্পত্তি নিয়ে ফিরোজা বেগমের (৭০) সঙ্গে তাঁর জার্মানিপ্রবাসী ছোট ছেলের স্ত্রী রহিমা বেগমের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের জেরে গত বুধবার শাশুড়ি ফিরোজা বেগমকে মারধর করেন রহিমা বেগম। বুধবার রাতেই ফিরোজা বেগমের পক্ষ থেকে মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় ফিরোজা বেগমের ১৫১/৩ দক্ষিণ পীরেরবাগের বাসায় গিয়ে পুলিশ পরিবারের সব সদস্যকে তুলে আনে

পুলিশ বলছে, মিটমাট করার জন্যই তাঁদের থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। যদিও আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত মিটমাটের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

আটক করা ব্যক্তিদের অভিযোগ, রহিমা বেগমের পক্ষে তাঁর ভাই পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার প্রভাব খাটাচ্ছেন।

আজ শুক্রবার সকালে মুঠোফোনে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মাইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কারণে কিছু হয়নি। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। রহিমা বেগম আমার আপন বোন। তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে মারধর করে ফিরোজা বেগম যৌতুক চাইতেন। এমনকি ফিরোজা বেগমের ছেলে মানে আমার ভগ্নিপতিও যৌতুক চাইতেন। তিনিই আসল ব্যক্তি। মারধর যে করা হয়েছে, এর মেডিকেল সার্টিফিকেটও আছে। মারধর করার বিষয়টি ওই এলাকার লোকজন সব জানেন। প্রত্যক্ষদর্শীও আছেন।’