বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্বের জন্য 'দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মডেল': প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করছেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। ছবি: বাসস
বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করছেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের কৌশলগত বন্ধুত্বকে অপরাপর বিশ্বের জন্য ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মডেল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা দিতে পারি যে উভয় দেশ সহযোগিতার এই মনোভাব ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে।’

পশ্চিমবঙ্গে শুক্রবার বিকেলে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথভাবে নবনির্মিত ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দুই দিনের সরকারি সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শুক্রবার সকালে কলকাতা পৌঁছান।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা পুরোপুরি কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন, উভয় দেশ ভবিষ্যতেও সহযোগিতার এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধন সুদৃঢ় এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনে এটি ছোট এক টুকরো বাংলাদেশ, যেখান থেকে বাংলাদেশের চেতনা প্রতিপালিত হবে। রবীন্দ্রনাথের এই প্রভাব নিজস্বভাবেই অনন্য হয়ে উঠবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আশা প্রকাশ করেন, ‘বাংলাদেশ ভবন’ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের প্রতীক হয়ে উঠবে। তিনি শান্তিনিকেতনে আসার জন্য এবং ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধনের সুযোগ লাভের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শান্তিনিকেতনের ছাত্রছাত্রীরা বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন।
পশ্চিমবঙ্গের গভর্নর কেশরীনাথ ত্রিপাঠি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সবুজ কলি সেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহানা এবং সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, কবি, গায়ক, শিল্পীসহ উভয় দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শান্তিনিকেতনের সমাবর্তনে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার রবীন্দ্র ভবনে রবীন্দ্র চেয়ারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্র ভবনে পৌঁছালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।
প্রকৃতি, আধ্যাত্মিকতা এবং মানবিক মূল্যবোধ সমন্বিত শিক্ষা প্রদানের জন্য একটি অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯২১ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিনিকেতনের সমাবর্তনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগদান করেন, যা প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়। সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও চ্যান্সেলর নরেন্দ্র মোদি।

সমাবর্তনে বক্তৃতা করেন রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্বামী আত্মপরিয়ানানন্দ ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক সবুজ কলি সেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন।
সমাবর্তন মঞ্চ ‘আম্রকুঞ্জ’-এ পৌঁছানোর পর সমবেত অতিথিরা সমাবর্তনের বিশেষ পোশাক পরেন। পরে শিক্ষার্থীরা অতিথিদের স্বাগত জানান।