বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, ৩ নম্বর সতর্কতা

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

বাতাস নেই, গাছের পাতাও খুব একটা নড়ছে না। আকাশে অল্পস্বল্প মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে, মাঝে মাঝে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হচ্ছে। এর সঙ্গে সূর্যের তেজ। শরীর থেকে গড়িয়ে পড়ছে টপটপ করে ঘাম। জ্যৈষ্ঠ মাসে বিদায়লগ্নে এখন পড়েছে ভ্যাপসা গরম। এরই মাঝে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে লঘুচাপ। এর প্রভাবে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ও কক্সবাজারে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

 আবহাওয়াবিদেরা জানান, সাগর উত্তপ্ত হলে লঘুচাপের সৃষ্টি হয়। যখন লঘুচাপ থাকে তখন উপকূল ও আশপাশের এলাকায় ভ্যাপসা গরম হয়। এই লঘুচাপ যখন উপকূলের দিকে এগিয়ে যায় তখন এর প্রভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনাও দেখা দেয় । মে মাসের শেষ দিকেও এমন একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছিল উত্তর বঙ্গোপসাগরে। সেটা পরে নিম্নচাপে পরিণত হয়। এ কারণে সে সময় ভ্যাপসা গরম ছিল। তবে ওই নিম্নচাপ বাংলাদেশ উপকূলে না এসে মিয়ানমারের ওপর দিয়ে চলে যায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এবারের লঘুচাপ উপকূল পেরিয়ে যাওয়ার সময় এর প্রভাবে বৃষ্টি হতে পারে। তবে আগামী কয়েক দিন চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূল ও এর আশপাশের এলাকায় বেশি বৃষ্টি হবে। এরপর মৌসুমি বায়ুর যখন সারা দেশে বিস্তার ঘটবে, তখন রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলেও বৃষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। এর সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বয়ে যাওয়া মৃদু দাবদাহও কেটে যেতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আজ শনিবার সকালে সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটা আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশ উপকূল এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ জন্য চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রা সমুদ্রবন্দরসহ কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌযানগুলোকে গভীর সাগরে না গিয়ে উপকূলের কাছাকাছি সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

আজ শনিবার সকালে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে। সারা দেশে বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যেতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, গতকাল শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে আজ সকাল ছয়টা পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে পটুয়াখালীর খেপপাড়ায় ৫৬ মিলিমিটার। এ ছাড়া বাগেরহাটের মোংলায় ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সাতক্ষীরায় ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।