সাতক্ষীরায় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যাচ্ছে লোকজন

নিরাপদ জায়গায় সরে যাচ্ছে মানুষ। গোবরা, ঘাটাখালী, কয়রা, খুলনা। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
নিরাপদ জায়গায় সরে যাচ্ছে মানুষ। গোবরা, ঘাটাখালী, কয়রা, খুলনা। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেওয়া শুরু করেছেন লোকজন। ঝুঁকিতে রয়েছে এমন চারটি উপজেলার বাসিন্দারা আজ শুক্রবার সকাল ১০ টা থেকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আসা শুরু করেন। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল নয়টার দিকে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী ভারতের ওডিশায় ১৮০-২০০ কিলোমিটার গতিবেগে আঘাত হেনেছে। বিকেলের দিকে তা বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করবে। সাতক্ষীরায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি রয়েছে।

ফণীর ব্যাপারে প্রস্তুতি জানাতে আজ বেলা ১১ টার দিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলায় ১৩৭টি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে শ্যামনগর, আশাশুনি, কালীগঞ্জ ও দেবহাটা এ চারটি উপজেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। সকাল ১০ টা থেকে কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেওয়া শুরু হয়। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ৩২ হাজার খাবারের প্যাকেট পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ফণী মোকাবিলায় চারটি উপজেলার জন্য সাড়ে সাত লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ১১৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, আশাশুনি ও শ্যামনগরে শিশু, প্রতিবন্ধী, গর্ভবর্তী নারী, বৃদ্ধ নারী-পুরুষদের বাড়িতে অবস্থান না করে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। যাঁরা আসতে চাইবেন না, তাঁদের জোর করে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা-৩ আসনের সাংসদ ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান প্রমুখ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ফণী ওডিশা হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে যাবে। সেখান থেকে আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের দিকে আসবে। আজ বিকেলের পর তা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে থাকবে। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে সন্ধ্যায়। সারা রাত ফণী সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল অঞ্চলের দিক থেকে ফরিদপুর, ঢাকা হয়ে ভারতের মেঘালয়ের দিকে যাবে।
বিকেলের দিকে অর্ধেক গতিবেগ নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। খুলনা, সাতক্ষীরা ও বরিশাল অঞ্চলের ওপর দিয়ে ফরিদপুর, ঢাকা হয়ে মেঘালয়ের দিকে যাবে।

শ্যামনগর এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য করুণা সরদার জানান, সকাল থেকে শ্যামনগরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সকাল ১০ টার দিকে লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেওয়া শুরু করে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিভাগ-২) নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন খোলপটুয়া, কপোতাক্ষ, চুনো, মালঞ্চ নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বাড়া শুরু করে।

এলাকার সব স্কুল-কলেজ ও বেসরকারি উঁচু ভবন, রেস্ট হাউস, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গাবুরা, পদ্মপুকুর এলাকার লোকসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। অন্যদের উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় নিরাপদে সরে আসতে বলা হয়েছে।