খুলনায় ঝড়-বৃষ্টি শুরু

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে কয়রায় প্রচণ্ড ঝড় বইছে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে কয়রায় প্রচণ্ড ঝড় বইছে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে খুলনায় ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে হালকা দমকা বাতাসের সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। কিছুক্ষণ পর তা থেমে যায়। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে খুলনায় পুরো আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে আছে। এর মধ্যে আতঙ্কিত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারে নদীর পানির উচ্চতা কয়েক ফুট বেড়ে যাওয়ায় কয়রার হরিণখোলা, ঘাটাইল, পাইকগাছার দেলোটি ইউনিয়নের কালীনগর, গড়াইখালী ইউনিয়নের কুমখালী এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যানদের নিয়ে ওই বাঁধ সংস্কারের চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া দাকোপ উপজেলার বাণীশান্তা এলাকায় নদীর জোয়ারের পানি বেড়ে বাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করলেও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে তা মেরামত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা-২–এর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেন, কয়রা, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলার অন্তত ১০টি জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। ওই সব জায়গায় ভাঙন প্রতিরোধে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিমেন্টের প্লাস্টিকের বস্তার মধ্যে বালি ভরে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে ফেলা হচ্ছে। মধ্যরাতে ফণী যখন খুলনায় আঘাত হানবে, তখনো নদীতে থাকবে জোয়ার। ওই সময় যদি কোনো অঘটন না ঘটে, তাহলে আর সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।

কয়রার ইউএনও শিমুল কুমার সাহা বলেন, সকাল থেকেই আবহাওয়া ভালো ছিল। এ কারণে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাননি। তবে আবহাওয়া খারাপ হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কিত মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছে। রাতে অবশ্য কিছু বয়স্ক মানুষ ও গর্ভবতী নারীরা আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। সকাল থেকে এলাকায় মাইকিং করে ও মানুষকে জোর করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

দাকোপ উপজেলার নিয়ন্ত্রণকক্ষে দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. আবদুল কাদের বলেন, সকাল পর্যন্ত আবহাওয়া রৌদ্রোজ্জ্বল থাকায় ব্যাপক প্রচারণার পরও মানুষ খুব বেশি গুরুত্ব দেয়নি। তবে বেলা ১১টার দিকে আকাশে মেঘ জমতে শুরু করলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিচ্ছে। নদীর জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় বাণীশান্তা এলাকায় বাঁধ ছাপিয়ে নদীর কিছু পানি লোকালয়ে প্রবেশ করলেও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে তা মেরামত করা হয়েছে।

পাইকগাছার ইউএনও জুলিয়া সুকায়না বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের জন্য আগ থেকেই এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দুটি এলাকায় নদীভাঙনের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় মানুষের সহায়তায় তা সংস্কারের কাজ চলছে। বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর মানুষ কিছুটা ভয় পেয়ে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যাচ্চেন। ঝড়ের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য প্রায় এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।